প্রাথমিকে পাঠ্যপুস্তক অমিল, বিপাকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা
শিক্ষাবর্ষ শুরুর পর প্রায় তিন সপ্তাহ পার হয়েছে। কিন্তু প্রথম ও তৃতীয় শ্রেণির সব পাঠ্যপুস্তক এখনও না-পৌঁছনোয় বিপাকে পড়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সমস্যার কথা মেনে নিয়ে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক ) সুবোধ কুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, “প্রথম শ্রেণির নতুন পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ কিছুটা কম থাকায় অসুবিধা হচ্ছে। তবে তৃতীয় শ্রেণির বই এসে গিয়েছে। পড়ুয়াদের কাছে দ্রুত বই পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।”
প্রথম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য বাংলা, গণিত, ইংরেজি মিলিয়ে এ বার একটিই নতুন সরকারি পাঠ্যবই চালু করা হয়েছে। প্রায় ৩৫০ পাতার ওই পাঠ্যপুস্তকের নাম ‘আমার বই’। এ ছাড়া তৃতীয় শ্রেণির ইতিহাস, ভূগোল, প্রকৃতি বিজ্ঞান মিলিয়ে একটি পাঠ্যবই হয়েছে ‘আমাদের পরিবেশ’।
নতুন শিক্ষাবর্ষ চালু হয়েছে গত ২ জানুয়ারি। সাধারণ ভাবে শিক্ষাবর্ষ শুরুর দিনেই ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে নতুন পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়া হয়। সেই মোতাবেক গত ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে সমস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠ্যপুস্তক পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশ স্কুলেই পড়ুয়ার সংখ্যার চেয়ে বই কম দেওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে প্রথম শ্রেণির ‘আমার বই’ ও তৃতীয় শ্রেণির ‘আমাদের পরিবেশ’ পাওয়া যাচ্ছে না। নন্দকুমারের কল্যাণচক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তপন মণ্ডল বলেন, ‘‘আমার বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া ভর্তি হয়েছে ২৩ জন। কিন্তু বই পেয়েছি মাত্র একটি। একাধিক বার অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরে গিয়ে বই চেয়ে এসেছি। এখনও পাইনি। তৃতীয় শ্রেণির আমাদের পরিবেশ বইটি একটিও পাইনি। ফলে ওই ক্লাসে পড়াতেও পারছি না।”
কোলাঘাটের ভোগপুর মক্তব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আনন্দ হান্ডা বলেন, “আমাদের বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে ৩০ জন পড়ুয়া ভর্তি হয়েছে। কিন্তু বই পাওয়া গিয়েছে মাত্র ৫টি। ফলে সব পড়ুয়াকে বই দেওয়া যায়নি। একই ভাবে তৃতীয় শ্রেণির নতুন পাঠ্যবই ৬০টি চেয়ে পাওয়া গিয়েছে ৪৫টি। ফলে ওই ক্লাসেও সবাইকে পাঠ্যবই দেওয়া যায়নি।”
জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক সূত্রে জানা গিয়েছে, মেদিনীপুর জেলায় ৩২৫৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এই সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য চলতি শিক্ষাবর্ষে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ৬০ হাজার বই চাওয়া হয়েছিল রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের কাছে। কিন্তু রাজ্য শিক্ষা দফতর জেলার জন্য মাত্র ৪০ হাজার পাঠ্যপুস্তক দিয়েছে। চাহিদার সঙ্গে জোগান না মেলায় সমস্যা হচ্ছে।”
পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক তথা আলাশুলি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অরূপ ভৌমিকের অভিযোগ, “শিক্ষাবর্ষ শুরুর পর প্রায় তিন সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। অথচ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সব পড়ুয়াদের পাঠ্যবই দিতে পারছি না। পড়াতে সমস্যা হচ্ছে। অভিভাবকদেরও ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে। এই সমস্যা কবে মিটবে জানি না।” জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সদস্য তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেন সমস্যার কথা মেনে নিয়ে বলেন, “তমলুক, কাঁথি, হলদিয়ার অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা পাঠ্যপুস্তক পাননি বলে অভিযোগ করেছেন। গত শুক্রবার এই সমস্যার কথা রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের কাছে জানিয়েছি। প্রাথমিক শিক্ষা দফতর চলতি সপ্তাহের মধ্যে বই সরবরাহের আশ্বাস দিয়েছেন।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.