|
|
|
|
কাঠগড়ায় টিএমসিপি |
আইটিআইয়ের বার্ষিক অনুষ্ঠানেও অশ্লীল নাচ |
বরুণ দে • মেদিনীপুর |
ভাঙড়ের পর মেদিনীপুর। তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে জলসার পর কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক অনুষ্ঠান। প্রকাশ্য মঞ্চে স্বল্পবাস তরুণীর উদ্দাম নাচ ঘিরে আবারও বাধল বিতর্ক। মেদিনীপুর আইটিআইয়ের ঘটনাতেও নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের।
মেদিনীপুর আইটিআইয়ের ছাত্র সংসদে ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। তাদেরই উদ্যোগে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শহরের রাঙামাটিতে আইটিআই চত্বরে ম্যারাপ বেঁধে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পোশাকি নাম ছিল ‘নবীনবরণ ও বাৎসরিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’। সন্ধে গড়াতেই সংস্কৃতির আসল চেহারাটা পেরিয়ে পড়ে। স্বল্পবাস তরুণীর অশ্লীল নাচের সঙ্গে পা মেলায় ছাত্রদের একাংশ। নাচের ফাঁকে ওই তরুণীকে বোতল থেকে
নিজের গায়ে জল ঢালতে দেখা যায়। সেই সময় মঞ্চে উঠে তাঁর নাচের সঙ্গী হয় ছাত্রদের কেউ কেউ। মোবাইল ক্যামেরায় তোলা সেই ছবি প্রকাশ্যে চলে আসায় বিড়ম্বনায় পড়েছেন তৃণমূল ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্ব। তড়িঘড়ি ছাত্র সংসদের কাছ থেকে এই নিয়ে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। |
|
সেই নাচ। মেদিনীপুর আইটিআইয়ে। —নিজস্ব চিত্র |
টিএমসিপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি নিজে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তবে এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “আমি অনুষ্ঠানের প্রথম দিকে ছিলাম। পরে চলে আসি। ফলে, ঠিক কী হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখছি। ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক এবং সংগঠনের ইউনিট সভাপতিকে তাঁদের বক্তব্য জানাতে বলেছি।” মেদিনীপুরের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতিরও বক্তব্য, “ঠিক কী হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখছি।” যাঁর কাছে টিএমসিপি নেতৃত্ব রিপোর্ট তলব করেছেন, সংগঠনের সেই ইউনিট সভাপতি সত্য সানি অবশ্য এই নাচকে স্বাভাবিক বলেই মনে করছেন। তাঁর বক্তব্য, “খড়্গপুর থেকে নাচের একটি দল এসেছিল। অনভিপ্রেত কিছু তো ঘটেনি।” অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ প্রশান্ত অধিকারীও। নবীনবরণে কেন এই অপসংস্কৃতি? জবাবে বিষয়টি এড়িয়ে যেতেই চাইলেন প্রশান্তবাবু। তাঁর বক্তব্য, “আমি তো কিছুক্ষণ থেকেই চলে এসেছিলাম। আর এ নিয়ে আমার কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি।”
ক’দিন আগে এমনই উদ্দাম নাচ ঘিরে বিতর্ক বেধেছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে। তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে এক জলসায় স্বল্পবাস তরুণীদের নাচ- গান চলছিল। তাঁদের দিকে টাকাও ছুড়ে দেন দলের কয়েকজন নেতা-কর্মী। সেই ঘটনার জেরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য মীর তাহের আলিকে সাসপেন্ড করেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে তাতেও যে লাগাম টানা যায়নি, মেদিনীপুরের ঘটনাই তার প্রমাণ। ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি মহম্মদ সইফুলের বক্তব্য, “আইটিআইয়ের অনুষ্ঠান শালীনতার সীমা ছাড়িয়েছে।” এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সৌগত পন্ডাও বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন অনুষ্ঠান করে টিএমসিপি তাদের সংস্কৃতি এবং রুচিরই পরিচয় দিয়েছে।” টিএমসিপিরও একাংশ কর্মী-সমর্থক মনে করেন, এর ফলে সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। |
|
|
|
|
|