সাহিত্য উৎসব ঘিরে সরব মৌলবাদীরা
চিন্তন বৈঠকের পরেই গোলাপি শহরে মৌলবাদী হুমকি!
তবে রাজনীতির অঙ্গনে নয়, সাহিত্যদুয়ারের উদ্দেশে। আগামী বৃহস্পতিবার জয়পুরে শুরু হচ্ছে সাহিত্য উৎসব। তার আগে সোমবারেই সেখানকার ‘আজিমুস্সান আজমত-ই-নামুস-ই-রসুল’ সংগঠন জানিয়ে দিল, মুসলিম সম্প্রদায়ের আবেগে যে সব লেখক আঘাত দিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এ বারেও বিক্ষোভ দেখাবেন তাঁরা। শোনা গেল, হিন্দু মৌলবাদী একটি সংগঠনও ছক কষছে, মহম্মদ হানিফ বা জামিল আহমদের মতো পাকিস্তানি লেখকেরা এলেই কালো পতাকা দেখাবে।
‘আজিমুস্সান’-এর তোপের লক্ষ্য চার লেখক। ‘দিজ এররস আর কারেক্ট’ কাব্যগ্রন্থের জন্য অকাদেমি পুরস্কারে সম্মানিত জিৎ থায়িল, রুচির জোশি, হরি কুঞ্জরু এবং অমিতাভ কুমার। “ওঁরা নিষিদ্ধ বই থেকে পাঠ করেছিলেন, ওঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক,” বলছেন দলের নেতা মুজাহিদ নকভি।
নিষিদ্ধ বই মানে, সলমন রুশদির ‘স্যাটানিক ভার্সেস’। গত বার ‘মিডনাইটস চিলড্রেন’ উপন্যাস নিয়ে জয়পুরে সলমন রুশদির বক্তৃতা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মৌলবাদী সংগঠনগুলি প্রথম থেকে খোঁচাতে থাকে, ‘স্যাটানিক ভার্সেস’-এর লেখককে আসতে দেওয়া যাবে না। ঠিক হয়, উৎসবে না এসে শেষ দিন ভিডিও লিঙ্কে কথা বলবেন তিনি। কিন্তু শেষ অবধি মৌলবাদীদের চাপে সেটিও বানচাল হয়ে যায়। সেই মৌলবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে জিৎ, রুচির, হরি-রা ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ উপন্যাসের প্রিন্ট আউট থেকে পাঠ করেন।
ফলে এ বার তাঁরাই মৌলবাদীদের আক্রমণের লক্ষ্য। গত বার ম্যান বুকার পুরস্কারের অন্যতম বাছাই লেখক জিৎ জয়পুর এবং কলকাতা দু’টি সাহিত্য উৎসবেই আমন্ত্রিত। “আমার কিছু বলার নেই। দু’জায়গাতেই যাব,” বলছেন তিনি। রুচির, হরি কুঞ্জরু, অমিতাভ কুমারের নতুন বই এ বার নেই। ফলে জয়পুরে যাচ্ছেন না তাঁরা। “এ বার রুচির শর্মা যাচ্ছে। ওরা বোধ হয় আমার সঙ্গে ওকে গুলিয়ে ফেলেছে,” ফোনে হাসলেন রুচির জোশি।
এ ভাবে বারবার মৌলবাদী হুমকিতে জয়পুর জমজমাট হচ্ছে কেন? রুচির মনে পড়িয়ে দিলেন, জানুয়ারির শুরুতে জয়পুরে ‘ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা’র একটি নাট্য উৎসব ছিল। সেখানে পাকিস্তানের নাট্যদল ‘অজোকা থিয়েটারে’র আসার কথা ছিল। সাদাত হাসান মান্টোর গল্প নিয়ে ওদের নাটক করার কথা। তখন সীমান্ত-সংঘর্ষ, দুই ভারতীয় সেনার শিরচ্ছেদ নিয়ে উত্তাল সারা দেশ। ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা পাক নাট্যদলের প্রতি এমন বিক্ষোভ দেখায় যে, পুলিশ তাঁদের জয়পুর থেকে বার করে নিয়ে আসে। পরে দিল্লির এক মঞ্চে নাটকটি হয়। “এ ভাবেই হিন্দু আর মুসলিম মৌলবাদীরা প্রচারের আলোয় আসার চেষ্টা করছে,” বলছেন রুচির।
কিন্তু এ বার যে বোধনের আগেই বিসর্জনের বাজনা! গত বার রুশদি নিয়ে মুসলিম উগ্রপন্থীরা হুমকি দিয়েছিলেন। এ বার একই সঙ্গে পাক লেখকদের বিরুদ্ধে সরব হিন্দু মৌলবাদও!
উৎসবের প্রযোজক সঞ্জয় রায়েরও বক্তব্য, “হুমকির কাছে মাথা নোয়াতে আসিনি আমরা।” তা হলে সাহিত্য উৎসব হচ্ছেই? “আমন্ত্রিত সব লেখকই আসবেন। জানেন তো, লেখকদের বিরুদ্ধে হুমকি দিলে প্রচার বেশি, ঝুঁকি কম,” হাসলেন সঞ্জয়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.