চাকা নড়ছে না এক চুলও ট্যাক্সির মিটার বাড়ছে চড়চড়িয়ে! উইন্ডস্ক্রিন দিয়ে সামনের বাস-গাড়ির ভিড় জরিপ করে সওয়ারি বললেন, “মিছিল থেকে কয়েক জনকে টেনে এনে ট্যাক্সিতে বসিয়ে রাখতে হয়। দেখুক এই বাজারে এ ভাবে পকেট থেকে টাকা বেরোলে কেমন লাগে!”
সোমবার দুপুরে তখন ধর্মতলা চত্বর কার্যত অচল। পরপর মিছিল ঢুকছে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে। সপ্তাহের প্রথম দিনে সেই মিছিল, সমাবেশের ‘সৌজন্যে’ কলকাতার প্রাণকেন্দ্রে প্রায় সর্বত্র কয়েক ঘণ্টা শম্বুকগতি। জওহরলাল নেহরু রোডে উত্তরমুখী রাস্তায় গ্র্যান্ড হোটেলের সামনে যানজটের মুড়ো, ল্যাজা পৌঁছেছে পার্ক স্ট্রিটের কাছে। উল্টো দিকে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ-লেনিন সরণির মোড়ের গাড়ির সারি ছাড়িয়েছে গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ।
এ শহরের নাম অনেক দিন আগেই হয়েছে ‘মিছিলনগরী’। কাজের দিনে কলকাতার ‘প্রাণকেন্দ্র’ এ ভাবে অচল করা নিয়ে বিভিন্ন মহলে
আগেও বারবার প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু পরিস্থিতি যে সেই তিমিরেই, তার প্রমাণ ফের মিলল।
মধ্য কলকাতায় যান-বিভ্রাট শুরু দুপুর ১২টা নাগাদ। ট্রাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, ওষুধ বিক্রেতাদের এক সংগঠনের সমাবেশে যোগ দিতে বিভিন্ন জেলার লোকেরা হাওড়া, শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছন। দফায়-দফায় মিছিল যায় রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের দিকে। গতি হারায় মধ্য কলকাতামুখী রাস্তা।
পুলিশ জানায়, এস এন ব্যানার্জি রোড, লেনিন সরণি, বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, আমহার্স্ট স্ট্রিট, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে ধর্মতলামুখী লেন ও আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোডের
দু’টি লেনে যানবাহন থমকে যায়। স্ট্র্যান্ড রোড, ব্রেবোর্ন রোডে আটকে থাকেন অফিসযাত্রী থেকে
স্কুলপড়ুয়া সকলেই।
দুপুরে ডোরিনা ক্রসিংয়ে জট ক্রমশ জটিল। এক চেহারা ইডেন, রাজভবনের আশপাশ, বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটেও। সিগন্যালে ক্রমাগত লাল, হলুদ বাতি। আগেকার মতো রাস্তায় নেমে যান নিয়ন্ত্রণ করলেন ট্রাফিককর্তা, কর্মীরা। চেনা গতি হারাল রেড রোডও। এসপ্ল্যানেড ইস্টে ঢোকার মুখে অনেক গাড়ি ঘোরাল পুলিশ। সেখানে তখন মিছিলের ভিড়ে দিশাহারা বাস, গাড়ির চালকেরা। তবে রোগী নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স গেল নির্বিঘ্নেই। ধর্মতলায় ডিপোর নাগালে পৌঁছেও লেনিন সরণি, ওল্ড কোর্ট হাউস স্ট্রিটে হা-পিত্যেশ দাঁড়িয়ে রইল ট্রামের সারি। |