একটি মামলায় জামিন, অন্যটিতে বন্দিই
দরকার নেই, তবু আইসিসিইউয়ে আরাবুল
তাঁর শারীরিক অবস্থা কোনও ভাবেই আইসিসিইউ-এ ভর্তি রাখার মতো গুরুতর নয়। তাই আইসিসিইউ-এর শয্যা আটকে না-রেখে অবিলম্বে তাঁকে সাধারণ শয্যায় সরিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করেছে এসএসকেএম হাসপাতালের মেডিক্যাল বোর্ড। তবু সোমবার পর্যন্ত আরাবুল ইসলাম বহাল তবিয়তে রয়ে গিয়েছেন আইসিসিইউ-এ।
তদন্তের সুবিধার জন্য আরাবুলকে নিজেদের হেফাজতে নিলেও তদন্তকারীরা এখনও তাঁকে জেরা করে উঠতে পারেননি বলে পুলিশি সূত্রের খবর। কবে তাঁকে জেরা করা হবে, সেই ব্যাপারে পুলিশকর্তারা মুখ খুলতে চাননি। অথচ আইসিসিইউ-এ ঢুকে এ দিনও তাঁর সঙ্গে দিব্যি কথা বলেছেন তৃণমূলের নেতারা।
মেডিক্যাল বোর্ড আরাবুলকে আইসিসিইউ থেকে সরাতে বলা সত্ত্বেও ওই তৃণমূল নেতাকে এখনও সাধারণ শয্যায় আনা হল না কেন?
এসএসকেএমের অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র বলেন, “সাধারণ শয্যা এ দিন খালি পাওয়া যায়নি। আশা করা হচ্ছে, মঙ্গলবার সকালের মধ্যেই তাঁকে স্থানান্তরিত করা সম্ভব হবে।” তত ক্ষণ আইসিসিইউ-এর মতো ওয়ার্ডে একটি শয্যা অনর্থক আটকে থাকবে কেন? অধিকর্তার উত্তর, “কী আর করা যাবে! আমরা পুলিশি হেফাজতে থাকা রোগীকে কেবিন দিই না। বাধ্য হয়ে এক দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে।”
আরাবুলকে এ দিন আদালতে হাজির করানোর কথা থাকলেও ‘অসুস্থতা’র কারণে তাঁকে নিয়ে যাওয়া যায়নি। সিপিএম নেতা ও প্রক্তন মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লার উপরে হামলার মামলায় আরাবুলের আইনজীবীর আবেদনের ভিত্তিতে বিচারক হিমিকা দাস বন্দ্যোপাধ্যায় ওই অভিযুক্তকে ২৭ অগস্ট পর্যন্ত অন্তর্বর্তিকালীন জামিন দিয়েছেন। ওই সময়ে সপ্তাহে তিন দিন তাঁকে থানায় হাজিরা দিতে হবে। তবে বামনঘাটায় সিপিএম-কর্মীদের উপরে হামলা এবং গাড়িতে আগুন ধরানোর মামলায় এ দিন কোনও শুনানি হয়নি। বিচারক ওই মামলার শুনানি ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত রেখেছেন। ওই দিন আরাবুলকে আদালতে হাজির করার কথা। তাই একটি মামলায় অন্তর্বর্তিকালীন জামিন পেলেও আপাতত মুক্তি পাচ্ছেন না আরাবুল।
এসএসকেএম সূত্রের খবর, হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে ওয়ার্ডের চিকিৎসক-নার্সদের সঙ্গে চেঁচামেচি করেছেন ওই তৃণমূল নেতা। এ দিনও দলের কয়েক জন নেতা-কর্মী আইসিসিইউ-এ আরাবুলের সঙ্গে দেখা করেন। আরাবুলকে দেখতে তৃণমূল নেতাদের এই চাপে দিশাহারা পুলিশও। এক পুলিশকর্তা জানান, সিআরপিসি ১৬৭ ধারা বলছে, অভিযুক্তের সঙ্গে তাঁর আইনজীবী এবং মা, ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রী ছাড়া আর কেউ দেখা করতে পারবেন না। এঁদেরও দেখা করতে হবে তদন্তকারী অফিসারের উপস্থিতিতে। এবং দেখা করতে হবে নির্দিষ্ট সময়সীমা মেনেই। পুলিশি হেফাজতে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ বলেও আইনে লেখা আছে। কিন্তু আরাবুলের ক্ষেত্রে কোনও নিয়মকানুনের তোয়াক্কাই করা হচ্ছে না। অভিযোগ, সোনারপুর থানার লক-আপ এবং পিজি-র আইসিসিইউ-এ অবাধে ঢুকেছেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। কী ভাবে এটা চলছে? রাজ্য পুলিশের এক কর্তা বলেন, “শাসক দলের চাপে পুলিশ নিরুপায়। এই কারণে আরাবুলকে জেরাই করা যায়নি।” এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড আরাবুলকে পরীক্ষা করে। যে-চিকিৎসকের অধীনে আরাবুল ভর্তি রয়েছেন, সেই সইদুল ইসলাম ছাড়া বোর্ডে ছিলেন কার্ডিওলজি বিভাগের শঙ্কর মণ্ডল, নেফ্রোলজি বিভাগের রাজেন্দ্রনাথ পাণ্ডে, এন্ডোক্রিনোলজি বিভাগের শুভঙ্কর চৌধুরী এবং মেডিসিন বিভাগের অলোকেন্দু ঘোষ। কেমন দেখলেন তাঁরা? বোর্ডের বক্তব্য, ‘আরাবুলের বুকে ব্যথাটা সব সময়ে থাকছে না। মাধেমধ্যে হচ্ছে। অন্য সময়ে তিনি স্বাভাবিকই থাকছেন। তাই ওঁকে আর আইসিসিইউ-এ রাখার দরকার নেই। তবে চিকিৎসার প্রয়োজনে আরও কয়েকটা দিন হাসপাতালে রাখতে হতে পারে।’
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.