ব্লেড দিয়ে লিউকোপ্লাস্ট তুলতে গিয়ে দেড় মাসের শিশুর একটি আঙুল কেটে ফেলার ঘটনায় অভিযুক্ত চতুর্থ শ্রেণির কর্মী দীপেশরঞ্জন দত্ত ‘দোষ’ কবুল করছেন। ওই সময়ে ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নাস কে ছিলেন তাও জানা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। অথচ ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর বিরুদ্ধে ন্যূনতম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন সেই প্রশ্নে ক্ষোভ দানা বাঁধছে আলিপুরদুয়ারে। রবিবার জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন সরকার হাসপাতালে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে অভিযুক্ত চতুর্থ শ্রেণির কর্মীকে সাসপেন্ড করার পক্ষে মত দেন। তিনি বলেন, “আমি চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর নাম ও কর্তব্যরত নার্সদের তালিকা চেয়েছি। তা পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে সাসপেন্ড করা হতে পারে।” শনিবার সকালে মহকুমা হাসপাতালের শিশু বিভাগে দেড় মাসের এক শিশুর ছুটি হওয়ায় হাতের স্যালাইনের ‘চ্যানেল’ খুলতে গিয়ে ব্লেড দিয়ে কড়ে আঙ্গুল কেটে ফেলেন দীপেশরঞ্জন। প্রথমে তা আড়াল করার চেষ্টা করেন। দ্রুত শিশুটিকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নিয়ে গিয়ে শল্য চিকিৎসককে দিয়ে সেলাই করিয়ে নেন। চ্যানেল খোলার কাজ নার্সদের করার কথা। সেখানে চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরা তা করবেন কেন সেই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর হাসপাতাল সুপার সুজয় বিষ্ণু দিতে পারেননি। শুধু তাই নয়, যে ঘটনায় দোষী কর্মী সকলের সামনেই দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন, তাঁর গাফিলতি রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হাসপাতাল সুপার ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গড়ায় বিস্মিত আলিপুরদুয়ার অভিভাবক মঞ্চ। সংগঠনের সভাপতি ল্যারি বসুর বক্তব্য, “ওই কর্মী সকলের সামনেই দুঃখপ্রকাশ করেছেন। তা হলে ওঁকে সাসপেন্ড করে তদন্ত শুরু করতে পারতেন সুপার। এটা দোষীদের আড়ালের চেষ্টা বলে সন্দেহ করছেন অনেকে। দোষীরা দ্রুত শাস্তি না- পেলে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হব।” এ দিন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হাসপাতালে গিয়ে শিশুটির বাবা-মার সঙ্গে কথা বলেন। স্বপনবাবু বলেন, “চরম অব্যবস্থা চলছে। এটা মানা যায় না। হাসপাতালে প্রয়োজনীয় নার্স ও চিকিৎসক রয়েছেন। কেন নার্সদের কাজ চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরা করবেন? নার্সরা কী করছিলেন? এ দিন আমি ওই শিশুটাকে দেখেছি। তাঁর পরিবারের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছি। শিশুটির চিকিৎসা খরচ বহন করা হবে।” ওই হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি চেয়ারম্যান অমলকান্তি রায়বলেন, “কাউকে আড়ালের প্রশ্ন নেই। সুপারকে রিপোর্ট দিতে বলেছি। কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |