বন দফতরের প্রশিক্ষণে পক্ষপাতের অভিযোগ
তৃণমূলের কিছু কর্মীকে বেআইনি ভাবে সরকারি প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বনমন্ত্রী হিতেন বর্মনের বিরুদ্ধে। সেই তালিকায় রয়েছে হিতেনবাবুর ভাগ্নে মাথাভাঙার বাসিন্দা তাপস বর্মনও।
বুনো জন্তু সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ডুয়ার্সের খয়েরবাড়ি ও কুঞ্জনগরে বন সুরক্ষা কমিটির ১২ দিনের ওই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে তাপসবাবু সহ পর্যায়ক্রমে মোট ১৮ জনকে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মাথাভাঙার তৃণমূল বিধায়ক বিনয়কৃষ্ণ বর্মনের এক বন্ধুর ছেলে চন্দন বর্মনও। এই প্রশিক্ষণ দেওয়ার সময় ওই যুবকদের দৈনিক ১৭৩ টাকা করে ভাতা দেবে সরকার। প্রশিক্ষণ শেষে তাঁরা যে শংসাপত্র পাবেন, তাতে ভবিষ্যতে বন দফতরে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদেরই অগ্রাধিকার তৈরি হবে বলে স্বীকার করেছেন খোদ মন্ত্রীই। খয়েরবাড়ি লাগোয়া দেওগাঁ বন সুরক্ষা কমিটির সভাপতি সুকুমার দাসের অভিযোগ, “কারা প্রশিক্ষণ পাবেন, তা নিয়ে পক্ষপাত করা হয়েছে। যে কাজে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, তাতে বনবস্তির ছেলেদের অভিজ্ঞতা বেশি। তা হলে কেন মন্ত্রীর নিজের এলাকার ছেলেরাই শুধু সুযোগ পাবেন?” কুঞ্জনগর ইকো ডেভেলপমেন্ট কমিটির সভাপতি দুলাল ধরের প্রশ্ন, “এই প্রশিক্ষণের ব্যাপারে কোনও বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। তা হলে কারা প্রশিক্ষণ পাবেন, তা কী ভাবে বেছে নেওয়া হল?” প্রাক্তন বনমন্ত্রী যোগেশ বর্মন দাবি করেছেন, “সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে এই প্রশিক্ষণের জন্য যুবকদের বেছে নেওয়া হয়েছে।”
বনমন্ত্রী দায় চাপিয়ে দিয়েছেন দল তৃণমূলের উপরেই। তাঁর কথায়, “বিভিন্ন গ্রামে বুনো জন্তু যে ভাবে হানা দিচ্ছে তা ঠেকাতে বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে কিছু যুবককে ওই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আপাতত বিভিন্ন এলাকা থেকে দলের তরফে পাঠানো তালিকা অনুযায়ী যুবকদের নেওয়া হয়েছে। সেখানে আমার আত্মীয়ও থাকতে পারেন।” তবে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেছেন, “দলের তরফে কোনও তালিকা পাঠাইনি। সরকারি কাজে হস্তক্ষেপ করতে যাব কেন সেটা বুঝতে পারছি না।”
হিতেনবাবুর দাবি, “ওই প্রশিক্ষণ নিয়ে যে সব অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা ঠিক নয়। কারণ, এখন কোনও কর্মী নিয়োগ হচ্ছে না। তবে ভবিষ্যতে নিয়োগ হলে ওই শংসাপত্র থাকলে কিছুটা অগ্রাধিকার পাবেন প্রশিক্ষিতেরা।” তাঁর ভাগ্নে তাপসবাবু বলেন, “বনমন্ত্রী আমার মামা। প্রশিক্ষণ পেলে চাকরি হবে এই আশায় এসেছি।” বিধায়ক বিনয়কৃষ্ণবাবুর বন্ধুর ছেলে চন্দনবাবুও বলেন, “বিনয়কাকু আমার বাবার বন্ধু। প্রশিক্ষণ নিচ্ছি। পরে চাকরি হতে পারে বলে আশা করছি।” বিনয়বাবুর মন্তব্য, “আমার এলাকার এক জন যুবক সেখানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে জানি। চাকরির বিষয়টি আমি জানি না।”
আর এক প্রাক্তন বনমন্ত্রী অনন্ত রায়ের কথায়, “ঘুরপথে নিজেদের লোকজনকে চাকরির ক্ষেত্রে কিছু সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।”
বন দফতর কী বলছে? উত্তরবঙ্গের বন পাল বিপিন সুদ বলেন, “ডিএফও বিষয়টি বলতে পারবেন।” কোচবিহারের ডিএফও রাজেন্দ্র জাখর কিন্তু ফোন তোলেননি। জলদাপাড়ার অ্যাসিস্ট্যান্ট ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন সন্তোষা জিয়ারার শুধু বলেন, “কী ভাবে হাতি তাড়াতে হয় এবং পশুগুলিকে কী ভাবে পালন করা হয় সেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.