দমদমে অসম্পূর্ণ টার্মিনালের উদ্বোধন
লগ্নির আশায় সুন্দরবনেও উড়ানের স্বপ্ন মমতার
‘বেঙ্গল লিডস’-এর ছবিটা যতই করুণ হয় হোক! হলদিয়া থেকে তাবড় শিল্পপতিরা যতই মুখ ফিরিয়ে থাকতে চান থাকুন! মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “পশ্চিমবঙ্গ এখন বিশ্বের গন্তব্য (বেঙ্গল ইজ দ্য ডেস্টিনেশন অফ দ্য ওয়ার্ল্ড)।” রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতা বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনালের উদ্বোধনী মঞ্চ ব্যবহার করে তিনি এই বার্তা দিলেন অতিথি-অভ্যাগতদের।
যদিও ওই টার্মিনালের কাজ এখনও শেষ হয়নি। সেখানে নিয়মিত উড়ান চালু হতে আরও অন্তত দু’মাস লাগবে। স্বপ্ন দেখাতে মমতা অবশ্য সেই অসম্পূর্ণতার তোয়াক্কা করেননি। বরং ঘোষণা করেছেন, “বালুরঘাট, মালদহ, সুন্দরবন, দিঘা এবং শান্তিনিকেতনেও আমরা বিমানবন্দর তৈরি করতে চাই।” মঞ্চে তখন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ও বিমানমন্ত্রী অজিত সিংহ প্রমুখ। তাঁদের উদ্দেশে মমতা বলেন, “আমাদের রাজ্যে নতুন বিমানবন্দর তৈরি করতে আপনারা সাহায্য করুন।”
একই মঞ্চে। রবিবার কলকাতা বিমানবন্দরে।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের প্রতিনিধিরা। তাঁদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান, “পশ্চিমবঙ্গ এখন শিল্প-বাণিজ্য ও লগ্নির পক্ষে আদর্শ জায়গা। ছোট শিল্পের সঙ্গে বড় শিল্পও হচ্ছে। আপনাদের (দূতাবাসের প্রতিনিধিদের) বলছি, আপনাদের দেশ থেকে সরাসরি কলকাতায় উড়ান চালু করুন।”
কাজ শেষ না-হলেও কলকাতার নতুন টার্মিনালের ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রায় সকলেই। প্রণববাবু বলেন, “আধুনিকীকরণ নিয়ে আলোচনার সময় সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সব প্রধান বিমানবন্দরকেই বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হবে। ব্যতিক্রম শুধু চেন্নাই ও কলকাতা। কলকাতার এই টার্মিনাল প্রমাণ করে দিয়েছে, সরকারি সংস্থাও বিশ্ব মানের পরিকাঠামো বানাতে সক্ষম।” দক্ষ হাতে এই টার্মিনাল রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার ব্যাপারে বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষকে সতর্কও করে দেন তিনি। রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের মতে, “প্রমাণিত হয়ে গেল যে, সরকারি সংস্থাও সক্ষম।” এই নতুন টার্মিনাল আরও বেশি বিনিয়োগ টেনে আনবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। নতুন টার্মিনাল তৈরির জন্য কর্মী-অফিসারদের প্রশংসা করেন বিমানমন্ত্রী অজিত সিংহ।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, উদ্বোধন হয়ে গেলেও এখন নিয়মিত কাজ চলবে নতুন টার্মিনালে। বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের দাবি, মাস দুয়েকের মধ্যেই যাত্রীরা এই টার্মিনাল নিয়মিত ব্যবহার করতে পারবেন। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য অনুরোধ জানান, ১৫ দিনের মধ্যে এই টার্মিনাল থেকে অভ্যন্তরীণ উড়ান চালু করা যায় কি না, সেটা দেখা হোক।
বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষ প্রতিটি বিমান সংস্থাকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি তাদের চলে আসতে হবে নতুন টার্মিনালে। যদিও বিভিন্ন বিমান সংস্থার কর্তাদের ধারণা, এই টার্মিনাল চালু হতে এখনও কমপক্ষে তিন-চার মাস লাগবে। এক বিমান সংস্থার কর্তা বলেন, “টার্মিনালের কাজ পুরোপুরি শেষ না-হওয়া পর্যন্ত সেখানে যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম স্থানান্তরিত করা সম্ভব হবে না। কর্তৃপক্ষ চাইছেন, টার্মিনালের চূড়ান্ত পর্বের কাজ চলুক। তারই মধ্যে বিমান সংস্থাগুলিও জিনিসপত্র সরাতে থাকুক। কিন্তু কার্যত সেটা সম্ভব নয়।” পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, নতুন টার্মিনালে বিমান সংস্থার কাউন্টারে যে-লাইন বসেছে, সেখান থেকে বোর্ডিং কার্ড বেরোতে দেরি হচ্ছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
সুভাষচন্দ্র বসুর নামে চিহ্নিত কলকাতা বিমানবন্দরে এ দিন তাঁর একটি মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেন রাষ্ট্রপতি। নেতাজি-তনয়া অনিতা বসু পাফ এবং পরিবারের সদস্য কৃষ্ণা বসু, সুগত বসুও অনুষ্ঠানে ছিলেন। টার্মিনাল চালু না-হলেও বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বেদপ্রকাশ অগ্রবাল জানান, ২৩ জানুয়ারি, সুভাষচন্দ্রের জন্মদিনে নতুন টার্মিনাল থেকে প্রথম উড়ান চালানো হবে। এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিমান সকাল ১০টায় যাত্রী নিয়ে দিল্লি ও লন্ডন যাবে। তার পরে ফের টার্মিনাল বন্ধ রেখে বাকি কাজ শেষ করা হবে। এ দিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন বিমান প্রতিমন্ত্রী কে সি বেণুগোপাল, বিমানবন্দর পরামর্শদাতা কমিটির চেয়ারম্যান ও সাংসদ সৌগত রায়, বিমানসচিব কাশীনাথ শ্রীবাস্তব।

—নিজস্ব চিত্র



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.