সামনেই কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচন। কিন্তু অভিযোগ, মারধর করে এসএফআই সমর্থক ছাত্রদের কাছ থেকে মনোনয়নপত্র কেড়ে নেওয়া হয়েছে। অভিযোগের আঙুল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) দিকে। ঘটনাটি ঘটেছে জয়পুরিয়া কলেজের দিবা বিভাগে। এর প্রতিবাদে শুক্রবার অধ্যক্ষকে চিঠি দিয়ে নির্বাচন কমিটি থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন কলেজের দিবা বিভাগের ২১জন শিক্ষক-শিক্ষিকা।
ওই দিন থেকেই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছে এসএফআই। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি মধুজা সেন রায় শনিবার বলেন, “আমরা এ বার যে সব কলেজে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পেরেছি, তার অধিকাংশেই জিতেছি। তাই টিএমসিপি ভয় পেয়ে জয়পুরিয়াতে আমাদের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র তুলতে বাধা দিয়েছে।”
একের পর এক কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোল চলছেই। কিন্তু নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রতিবাদে নির্বাচন কমিটি থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা এ বার অব্যাহতি চাইলেন। ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার বেশ কিছু ছাত্রছাত্রীকে ভয় দেখিয়ে, মারধর করে তাঁদের ব্যাগ থেকে মনোনয়নপত্র কেড়ে নিয়েছেন একদল পড়ুয়া। পুলিশ এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সামনেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে তাঁদের দাবি। পরে কলেজের উদ্যোগে পুলিশি পাহারায় ‘আক্রান্ত’ ছাত্রীদের বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা হয়। পুলিশও জানিয়েছে, যে পড়ুয়ারা ভয় পেয়ে গিয়েছিল, তাদের বাসে তুলে দেওয়া হয়। তবে কলেজের ভিতরে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে পুলিশের দাবি।
যে শিক্ষক-শিক্ষিকারা অব্যাহতি চেয়েছেন, তাঁদের দাবি, গণতন্ত্র জলাঞ্জলি দিয়ে গায়ের জোরে একদল ছাত্রের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা চলছে বলে তাঁরা অব্যহতি চেয়েছেন। ওই কাজে যুক্ত থাকায় তাঁদের ‘সম্মানহানি’ হচ্ছিল বলেও এঁদের অভিযোগ। চিঠিতে কোনও রাজনৈতিক দলের উল্লেখ না করলেও, বর্তমানে জয়পুরিয়ায় টিএমসিপি-ই শক্তিশালী। ওই দলের সমর্থকেরাই জুলুম চালাচ্ছেন বলে ওই শিক্ষকদের অভিযোগ।
কলেজের অধ্যক্ষ অশোক মুখোপাধ্যায় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কিছু অনিয়মের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে মনোনয়নপত্র তোলাকে কেন্দ্র করে দুই ছাত্র সংগঠনের গোলমাল সম্পর্কে মুখ খুলতে চাননি তিনি।
তৃণমূলের ছাত্র সংসদের রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে গোটা ঘটনায় ঘুরিয়ে দায় চাপাতে চেয়েছেন বামপন্থীদের ঘাড়ে। তাঁর কথায়, “যাঁরা নির্বাচন কমিটি থেকে অব্যহতি চেয়েছেন, তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় খতিয়ে দেখা হোক। তা হলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।” |