চিকিৎসার গাফিলতিতে এক প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ নিয়ে শুক্রবার মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মৃত প্রসূতির পরিবারের লোকজন বিক্ষোভ আন্দোলনে নামলে তড়িঘড়ি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ তদন্তের নির্দেশ দিয়ে পরিস্থিতির সামাল দেন। ঘটনা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট তলব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “প্রসূতির মৃত্যুর পিছনে গাফিলতি আছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হবে।”
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত প্রসূতির নাম জুলি সরকার (১৯)। প্রসূতি মারা গেলেও সদ্যোজাত বেঁচে আছে। গত ১৬ জানুয়ারি বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে রতুয়ার হরিপুর গ্রামের জুলিদেবীকে তাঁর পরিবারের লোকজন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, প্রসব যন্ত্রণা শুরু হলে জুলিদেবীকে প্রথমে রতুয়া ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, দ্রুত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। সিজার করতে হবে। এর পরেই তাঁরা মেয়েকে মালদহে নিয়ে যান। কিন্তু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে চিকিৎসক প্রসূতিকে ২৪ ঘণ্টা ফেলে রাখেন বলে অভিযোগ। মৃত প্রসূতির মা প্রজাপতি মণ্ডল বলেন, “বৃহস্পতিবার বিকেলে মেয়েকে দেখে চিকিৎসক বলেন ভাল আছে। স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা করা হচ্ছে। এর পরে হঠাৎ রাতে চিকিৎসক জানান সিজার করতে হবে। মেয়ের অবস্থা ভাল নয়। মেয়ে অপারেশন টেবিলেই মারা গেল।” প্রসূতির স্বামী বাবলু সরকার বলেন, “চিকিৎসক ও নার্সদের বারবার অনুরোধ করে লাভ হয়নি। সময়ে সিজার করা হলে স্ত্রী বেঁচে যেত। চিকিৎসক-নার্সদের গাফিলতিতে সে মারা গেল।”
মেয়ের মৃত্যুর জন্য শুক্রবার প্রসূতির মা চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষকে লিখিত ভাবে জানান। এর পরেই কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসেন। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ উচ্ছ্বল ভদ্র বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। যদি দেখা যায় সত্যিই গাফিলতিতে প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে তবে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড়া হবে না।” এ দিকে যাঁর বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে সেই স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ তপন মাইতি ওই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। |