|
|
|
|
আদালতের নয়া ভবন তৈরি নিয়ে ‘মতানৈক্য’ প্রকাশ্যে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
আদালতের নতুন ভবন তৈরির আন্দোলন নিয়ে শিলিগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের কংগ্রেস ও তৃণমূল সমর্থক আইনজীবীদের মত পার্থক্য প্রকাশ্যে আসল। শুক্রবার বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে আদালতের নতুন ভবন তৈরি নিয়ে গড়িমসির অভিযোগ তুলে শহরে একটি মিছিল এবং সভা করা হয়। আদালত সূত্রের খবর, এ দিনের কর্মসূচিতে তৃণমূলপন্থী আইনজীবীরা কেউ যোগ দেননি। তাঁরা আন্দোলনে যোগ না দিয়ে সাধারণ সভায় বিষয়টি আলোচনা করা ছাড়াও উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের হস্তক্ষেপের কথাও বলেন। কিন্তু বার অ্যাসোসিয়েশনের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর সদস্যরা বিষয়টি নিয়ে বৈঠক ডাকলেও সেই প্রস্তাব খারিজ করে আন্দোলনে নামেন। হিলকার্ট রোডে মিছিল করে গিয়ে দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস দফতরের নিচে পথসভা করেন বারের সদস্যরা।
ঘটনার খবর পৌঁছেছে বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর কাছেও। তিনি বলেন, “মূল্যবান সময় নষ্ট করে উন্নয়নের জন্য পথে নামায় আমি আন্দোলনকারীদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। তবে নতুন ভবনের কাজের বিষয়টি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যে আইনমন্ত্রী বদল হয়েছে। নতুন মন্ত্রীকে শিলিগুড়ির ভবন, সার্কিট বেঞ্চ এবং আলিপুরদুয়ার জেলা আদালতের কথা বলেছি। সবাইকে একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে।”
আদালত সূত্রের খবর, গত বছর শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট ঘোষণা হওয়ার পরেই সিটি সেশন জজ, সিটি সিভিল জজ-সহ মেট্রোপলিটন আদালত তৈরি করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি, শিলিগুড়ি আদালতের নতুন ভবন তৈরির প্রস্তাব সামনে আসে। প্রথমে ঠিক হয়, মাটিগাড়ার উত্তরায়ণ লাগোয়া এলাকায় নতুন আদালতগুলি তৈরি হবে। কিন্তু হাইকোর্ট তা খারিজ করে দেয়। এর পরে চম্পাসারির হিমুলের কারখানা লাগোয়া আরেকটি জমিও দেওয়া হয়। তৎকালীন আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক দু’দফায় এলাকাগুলি দেখেও যান। এরই মধ্যে আদালত চত্বরের দুটি কোর্ট ভবন ভেঙে দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে নতুন ভবনের জন্য সরকার ৪ কোটি টাকার মত বরাদ্দও করে। কিন্তু কোথায় ভবন হবে তা ঠিক করতে দেরি হওয়ায় কাজ আটকে যায় বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। এই অবস্থায় এ দিন আন্দোলনে নামে বার অ্যাসোসিয়েশন।
বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক উদয়শঙ্কর মালাকার বলেন, “আমরা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কোনও আন্দোলন করছি না। আমরা আদালতের ভবনের জন্য পথে নেমেছি। একটি ভবন ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের বসার জায়গায় আদালত চলছে। কিন্তু নতুন ভবন তৈরি হচ্ছে না। একাংশ আইনজীবী এতে রাজি নন। তাঁরা লিখিতভাবে আন্দোলন এ দিন না করার আবেদনও করেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য তা মানেননি।”
আদালতের আইনজীবীরা জানান, কমিশনারেট হওয়ার পর ভক্তিনগর থানা এলাকার মামলাগুলি এখনও শিলিগুড়ি আদালতে আনা হয়নি। ৫০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে মানুষকে মামলা করতে হচ্ছে। উল্টে ভবন ভেঙে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই বিষয়ে তৃণমূলের আইনজীবী সেলের যুগ্ম সম্পাদক সন্দীপ মণ্ডল বলেন, “এ দিন আমরা বিষয়টি সাধারণ সভায় আলোচনার পক্ষ ছিলাম। এখনই আন্দোলন না করে সরকার-সহ মন্ত্রীর সঙ্গেও আবার কথা বলা যেত। সাধারণভাবে কয়েকজন আইনজীবী বার অ্যাসোসিয়েশন তা লিখিতভাবেও দেন। কিন্তু তা শোনা হল না।’’ উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাসে বার অ্যাসোসিয়েশনের ভোটে কংগ্রেস সমর্থিত আইনজীবীরাই সংখ্যগরিষ্ঠ পদে জিতে ক্ষমতায় আসেন। তৃণমূলের তরফে একজন আইনজীবীই এক্সিকিউটিভ কমিটিতে জিতেছিলেন। |
|
|
|
|
|