কমিশনারকে স্মারকলিপি
শিলিগুড়িতে পুলিশি ‘গড়িমসি’ নিয়ে বাম-ক্ষোভ
হায়দারপাড়ায় একটি জমির গোলমালকে কেন্দ্র করে এক মহিলাকে মারধর, ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে অরূপ মজুমদার নামে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন মহিলাকে দেখতে যান খোদ উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবও। কিন্তু ঘটনার পর নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করা হলেও দু’সপ্তাহ কেটে গেলেও গ্রেফতার করা হয়নি অভিযুক্তকে। তাঁকে প্রকাশ্যে বিভিন্ন এলাকায় দেখাও যাচ্ছে বলেও অভিযোগ। একাংশ পুলিশ অফিসার এবং রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে যোগাযোগের জন্যই অরূপবাবুকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার শহরের নানা ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারে গড়িমসির প্রতিবাদে দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টের তরফে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমারকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
স্মারকলিপি দেওয়ার পরে কমিশনারের অফিসার বাইরে দাঁড়িয়ে বাম নেতাদের অনেকেরই টিপ্পনী, “মনে হয়, ভাঙড়ের আরাবুল ইসলামের থেকেও অরূপবাবু বেশি ‘প্রভাবশালী’। হয়তো পুলিশের উঁচু মহলে যোগাযোগও রয়েছে। তাই ওঁকে ধরা যাচ্ছে না।” প্রসঙ্গত, বাম আমলে একজন প্রভাবশালী সিপিএম নেতার ঘনিষ্ঠ হলেও তোলাবাজির অভিযোগে অরূপবাবু গ্রেফতার হন। ওই নেতাকেও পুলিশ গ্রেফতার করে। ইদানীং কয়েকজন তৃণমূল নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে অরূপবাবুকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে কি না সেই প্রশ্ন উঠেছে। যদিও অরূপবাবু আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ কমিশনার বলেছেন, “অভিযোগ পাওয়া মাত্রই আইন মেনেই মামলা করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। যথাসময়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পাশাপাশি, সম্প্রতি মাটিগাড়ার এক ছাত্রকে অপরহণের পর মুক্তিপণ চাওয়া হলেও পুলিশ প্রথম থেকে ঢিলেঢালা মনোভাব দেখায় বলে অভিযোগ। শেষে তিনধারিয়ার পাহাড়ি এলাকা থেকে কিশোরের দেহ উদ্ধার হয়। এর পরে পুলিশের উদাসীনতার বিরুদ্ধে জাতীয় সড়ক অবরোধ, এমনকী অভিযুক্তদের বাড়িও পোড়ানোর চেষ্টা হয়। শুধু তাই নয়, চাকুলিয়া গণধর্ষণের শিকার এক তরুণীকে ফরেন্সিক পরীক্ষা না হতেই পুলিশের তরফে তা হয়েছে বলে ঘোষণা করা হয় বলে অভিযোগ। একইভাবে প্রধাননগরের মিলনমোড়ে এক প্রতিবদ্ধী তরুণীকে ধষর্ণের অভিযোগ ওঠে। পুলিশ বিষয়টি আড়াল করতে চেয়েছিল বলে অভিযোগ। পাশাপাশি, বাড়ি ফেরার পথে এক দুষ্কৃতীর হাতে নিগৃহীতা হন এক সরকারি মহিলা অফিসারও।
এ বার শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারেটের সামগ্রিক আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতি ভেঙে পড়ার অভিযোগগুলি তুলে এবার সরব হলেন দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্ট। শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার স্মারকলিপি দিয়ে দ্রুত শহরের আইনশৃঙ্খলা কড়া হাতে মোকাবিলা করার দাবি জানানো হয়েছে। সিপিএমের ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার বলেন, “একাংশ পুলিশ অফিসার ঘটনা ঘটলেও পরীক্ষা, তদন্ত, রিপোর্ট পাওয়ার আগেও নিজেদের মত করে নানা কথা বলে দিচ্ছেন। ঢিলেঢালা মনোভাব তো রয়েছেই। প্রভাব খাটানোর ঘটনাও ঘটছে। কমিশনারকে বলেছি দ্রুত ব্যবস্থা নিতে।” অবস্থার পরিবর্তন না হলে শহর জুড়ে আন্দোলনে নামার কথাও জীবেশবাবু জানিয়েছেন। একই ভাবে সিপিআই-এর জেলা সম্পাদক উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, “শহরে মহিলা তো বটেই সাধারণ মানুষ নিরাপদ নয়। ঘটনা ঘটলেও পুলিশ সঠিক ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বহু ক্ষেত্রে আমরা তাই দেখতে পাচ্ছি। গণতন্ত্রের কথা বলে দলতন্ত্রই সামনে উঠে আসছে। পুলিশের উপরে প্রভাব খাটানো হচ্ছে। বামপন্থীদের মিটিং, মিছিলের অনুমতির ক্ষেত্রে পুলিশের সক্রিয় ভূমিকা কেবল দেখার মত। ” কার্যত একই বক্তব্য আরএসপি ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক তাপস গোস্বামীর। তিনি বলেন, “কমিশনারেট হওয়ার পর পুলিশ ভূমিকা আরও কড়া বা নজরদারি আরও বাড়বে বলে আমরা আশা করেছিলাম। এখন অবধি তা কিছুই দেখা যাচ্ছে না।” তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করা, অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে তদন্ত করা হচ্ছে বলে পুলিশ কমিশনারের দাবি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.