|
|
|
|
পুরসভা হবে কর্পোরেশন, প্রক্রিয়া শুরু |
অনির্বাণ রায় • জলপাইগুড়ি |
জলপাইগুড়ি পুরসভাকে কর্পোরেশনে উন্নীত করার সরকারি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বর্তমানে জলপাইগুড়ি পুরসভা ‘গ’ শ্রেণিভুক্ত। প্রথা অনুসারে, কর্পোরেশন ঘোষণা করার আগে পুরসভাকে ‘গ’ থেকে ‘খ’ শ্রেণিতে উন্নীত হতে হয়। ‘খ’ শ্রেণিতে উন্নত হওয়ার জন্য প্রয়োজন নুন্যতম জনসংখ্যা দেড় লক্ষ। সে কারণে জলপাইগুড়ি পুরসভায় নতুন এলাকা সংযোজনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শুক্রবার সদর মকুমাশাসকের দফতরে পুরসভার চেয়ারম্যান-সহ লাগোয়া তিনটি এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান ও কর্তাদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে।
সদর ব্লকের বিডিও, জেলার পুরসভা বিষয় আধিকারিকও বৈঠকে ছিলেন। শহর লাগোয়া পাহাড়পুর, অরবিন্দ এবং খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকাকে পুরসভার অর্ন্তভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোন কোন এলাকা অর্ন্তভুক্ত করা হবে সে বিষয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়ে জেলা প্রশাসনকে লিখিত ভাবে জানাতে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রধানদের. চলতি মাসের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া সেরে ফেলার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রধানদের অনুরোধও করা হয়েছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরেই জলপাইগুড়ি পুরসভায় নতুন এলাকা সংযোজিত হয়ে ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। |
|
মহকুমাশাসকের দফতরে বৈঠক। ছবি: সন্দীপ পাল। |
সংযোজনের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি না হলেও প্রশাসনের তরফে যে খসড়া তৈরি করা হয়েছে, তাতে জলপাইগুড়িতে ওয়ার্ড সংখ্যা বেড়ে ৪৫ হতে পারে। জনসংখ্যা পৌঁছতে পারে দু’লক্ষের কাছাকাছি। সদর মহকুমাশাসক সাগর চক্রবর্তী বলেন, “বৈঠকে এলাকা সংযোজনের বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি তাদের সিদ্ধান্তের প্রতিলিপি পাঠিয়ে দিলে, প্রস্তাব তৈরি করে জেলা শাসকের দফতরে পাঠানো হবে। জেলাশাসকের সম্মতি পাওয়ার পরে সেই প্রস্তাব পাঠানো হবে রাজ্যের পুরসভা বিষয়ক দফতরে। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের পরেই নতুন এলাকাভুক্তির ঘোষণা করা হবে।”
প্রস্তাব অনুযায়ী, শহর লাগোয়া জলপাইগুড়ি রোড স্টেশন, সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, পলিটেকনিক কলেজ পুর এলাকায় সংযোজিত হবে। সেই সঙ্গে শিরিষতলা, পুরাতন পান্ডাপাড়া, ডাঙাপাড়া, মোহিতনগর, কেরানিপাড়া এলাকাকেও পুরসভার অর্ন্তভুক্ত করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই জলপাইগুড়ি পুরসভাকে কর্পোরেশন ঘোষণা করার দাবি জানানো হয়েছিল। বিস্তারিত প্রস্তাব তৈরি করে জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানোও হয়েছিল। এ বার সরকার উদ্যোগী হয়েছে। প্রথমে পুর এলাকাকে সম্প্রসারণ করতে হবে। তার জন্য নতুন এলাকা সংযোজন জরুরি। প্রশাসনিক স্তরে বৈঠকে এবিষয়ে সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। চলতি বছরেই প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে বলে জানানো হয়েছে।” |
|
• জলপাইগুড়ি পুর এলাকার জনসংখ্যা ১ লক্ষ ০৭ হাজার।
• এলাকা সংযোজনের পরে জনসংখ্যা হবে প্রায় ২ লক্ষ।
• পুর এলাকার বর্তমান আয়তন ১৩ বর্গ কিলোমিটার।
• এলাকা সংযোজনের পরে আয়তন হবে ন্যূনতম ৩০ বর্গকিলোমিটার। |
সংযোজনের তালিকায় গুরুত্বপূর্ণ
জলপাইগুড়ি রোড স্টেশন এবং মোহিতনগর স্টেশন ঢুকবে পুর এলাকায়। স্টেশন এক থেকে বেড়ে হবে তিনটি। সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ. সরকারি পলিটেকনিক কলেজ, টিবি হাসপাতাল। |
সংযোজিত হতে পারে
শিরিষতলা, অসম মোড়, মোহিতনগর. ইন্দিরা কলোনি, জমিদারপাড়া, পাহাড়পুর,ভগত সিংহ কলোনি, সঞ্জয়নগর, কেরানিপাড়া, পুরাতন পান্ডাপাড়া, পান্ডাপাড়া কালিবাড়ি, সানুপাড়া, সারদাপল্লী, সুকান্তনগর-সহ আরো ১৪টি এলাকা। |
|
গ্রাম পঞ্চায়েতের এলাকা পুরসভার অর্ন্তভুক্ত হলে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির ওপর থেকে চাপ লাঘব হবে বলেও মনে করা হচ্ছে। বৈঠকে উপস্থিত অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান তাপস বিশ্বাস বলেন, “শহর লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের পরিষেবা সংক্রান্ত চাহিদা অন্য এলাকার থেকে অনেকটাই বেশি। গ্রাম পঞ্চায়েতের সীমিত ক্ষমতার মধ্যে তা পূরণ করা সম্ভব নয়। সে কারণে এলাকাগুলি পুরসভার সঙ্গে যুক্ত করতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই।” পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিশ্বজিত সরকার বলেন, “এমনিতেই পাহাড়পুর অনেক বড় গ্রাম পঞ্চায়েত। কিছু এলাকা পুরসভার সঙ্গে যুক্ত। বাকি এলাকাগুলিতে পরিষেবা দিতে সুবিধেই হবে।” তবে পুরসভায় এলাকাভুক্তি নিয়ে খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে আপত্তি তোলা হয়েছিল। বৈঠকের পরে খড়িয়ার প্রধান স্বপন রায় বলেন, “কিছু পঞ্চায়েত সদস্য প্রথমে আপত্তি তুলেছিলেন। তবে সময়ের সঙ্গে নগরায়ণ স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। আবার বোর্ডের বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে জেলা প্রশাসনকে জানাব।” পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, এলাকাভুক্তির ফলে পুরসভার আয় বাড়বে। পরিষেবা বাড়ান যাবে. এলাকাভুত্তি হয়ে গেলে কর্পোরেশন ঘোষণা করা শুধু সময়ের অপেক্ষা। |
|
|
|
|
|