|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
স্বর্গ যদি
থাকে, তা এখানেই |
মসজিদের প্রতিষ্ঠালিপিতে বহু ক্ষেত্রেই একটি পংক্তি দেখা যায়, ‘পৃথিবীতে যিনি মসজিদ নির্মাণ করেন, আল্লা তার জন্য স্বর্গে প্রাসাদ তৈরি করে দেন।’ ইসলাম ধর্মে ‘জন্নত’ বা স্বর্গের গুরুত্ব অপরিসীম। ‘জন্নত’ বলতে উদ্যানও বোঝায়, স্বর্গ সেই চিরসুখের উদ্যান। তাই ইসলামের শিল্প-স্থাপত্য-সাহিত্যে ‘জন্নত’ নানা রূপে ঘুরেফিরে এসেছে। কুশলী লিপিশিল্পে, বিশাল স্থাপত্যের খোদিতলিপিতে, সুসজ্জিত উদ্যানে, চহর-বাগ সমাধিসৌধে, দক্ষিণ ভারতীয় প্রেমকথায়, ফার্সি কাব্যে, জনসংস্কৃতিতে কী ভাবে এই ধারণার প্রকাশ, তা খুঁটিয়ে দেখা হল মমতাজ করিম সম্পাদিত জন্নত/ প্যারাডাইস ইন ইসলামিক আর্ট(মার্গ, মুম্বই, ২৮০০.০০) সংকলনে। সালার জং সংগ্রহের হাতে লেখা কোরানের লিপিশিল্প, মমতাজ করিমের আলোচনায় সমাধিসৌধের লিপি, মুঘল উদ্যানের পরিকল্পনা (আজিম নানজি), মুঘল সংস্কৃতিতে স্বর্গ-ভাবনা (ফিলিপা ভন), জয়পুরের বিখ্যাত পারসিক কার্পেটে উদ্যান-দৃশ্য (শ্যামলী দাস), জন্নতপুরী গ্রন্থপ্রসঙ্গ (হুসেন জসানি), দক্ষিণী কবি নুসরতি-র গুলশন-ই-ইশ্ক বা ইকবাল-এর জাভিদ নামা, আর সব শেষে জনসংস্কৃতির বহুমুখী আখ্যানে ধরা রইল এক বিচিত্র ইতিহাস।
সংস্কৃতে ‘হিন্দু’ বলে কোনও শব্দ নেই! বেদ, উপনিষদ, গীতা ‘হিন্দু’-র উল্লেখ করেনি। কোনও স্মৃতি বা পুরাণ হিন্দুধর্ম বা হিন্দুদের কথা বলেনি। সংস্কৃত সাহিত্যে (নিতান্ত অর্বাচীন ‘মেরুতন্ত্র’ বাদে) ‘হিন্দু’ অস্তিত্বহীন। ‘হিন্দুত্ব’ কি তা হলে ঔপনিবেশিক নির্মাণ? আবার সংস্কৃত, পালি, ও অর্ধমাগধীতে ‘ধর্ম’ আদৌ ‘রিলিজিয়ন’ নয়, বরং ‘সোশাল অর্ডার’। হিন্দুধর্মের বিস্ময়কর বৈচিত্র্য এবং ব্যাপ্তি নিয়ে বহু আলোচনা হয়েছে। সদ্য প্রকাশিত হিন্দুইজম/আ ওয়ে অব লাইফ অ্যান্ড আ মোড অব থট (ঊষা চৌধুরী ও ইন্দ্রনাথ চৌধুরী, নিয়োগী বুকস, ১৪৯৫.০০) নানা দিক থেকে বিষয়টির উপর আলো ফেলেছে। আকর সূত্রের ভিত্তিতে আলোচিত হয়েছে হিন্দু, হিন্দুত্ব, হিন্দুধর্মের খুঁটিনাটি। ধর্মের সংকীর্ণ গণ্ডীর বাইরে গিয়ে গভীরতর সত্যের এই অনুসন্ধানে বাদ যায়নি লোকায়ত চেতনা— মহারাষ্ট্রের খাণ্ডোবা, অন্ধ্রের নরসিংহ, কুমায়ুনের গোলু দেবতা, কেরলের তেইয়ম, শীতলা, মনসা, এমনকী বৃক্ষপূজাও। হিন্দুধর্মের সূচনা, ক্রমবিকাশ, আধুনিক সংস্কার আন্দোলন ব্যাখ্যায় সচিত্র বইটি হয়ে উঠেছে সংক্ষিপ্ত কোষগ্রন্থ। |
|
|
|
|
|