|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৪... |
|
শহর থেকে দূরে |
বইপোকা |
‘লালচে রং-এর প্যাকিং কাগজের মতো কাগজে ছাপা।... খেলো পিস্-বোর্ডের মলাট দাগশূন্য। বইয়ের নামটিও তার উপর ছাপা প্রকাশক ব্যয়বাহুল্য মনে করেছেন। এই হলো বহিরঙ্গের পরিচয়।’ বইটির নাম জাগরী। বাংলা সাহিত্যে সতীনাথ ভাদুড়ীর আবির্ভাব-গ্রন্থ। যে বই এমন দর্শনধারী তাহার গুণবিচারে এই অফসেটের যুগে কেহ হয়ত বিশেষ প্রবৃত্ত হইতেন না। সতীনাথের ক্ষেত্রে তেমন দুর্ভাগ্য ঘটে নাই। তবু সেই স্বীকৃতি যেন কেবল রসিক মহলেই রহিয়া গেল। মৃত্যুর প্রায় অর্ধশতক পরেও ‘লেখকদের লেখক’ জাতীয় তকমা আঁটিয়া তাঁহাকে খানিকটা দূরেই যেন রাখিয়া দেওয়া হয়। এমতাবস্থায় সতীনাথ-চর্চার প্রথম বড় কাজ সুবল গঙ্গোপাধ্যায় সম্পাদিত সতীনাথ স্মরণে নূতন সংস্করণে প্রকাশ করিল প্রকাশ ভবন। সুবলবাবু কলিকাতার আলোকিত সাহিত্যমহল হইতে দূরেই ছিলেন, বিহারে ব্যাঙ্কে কাজ করিতেন আর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন তাঁহার ‘সতুদা’র। সতীনাথের মৃত্যুর পরেই তিনি তাঁহাকে লইয়া একটি স্মরণ গ্রন্থের পরিকল্পনা করেন। কয়েক বছরের চেষ্টায় জয়প্রকাশ নারায়ণ, ফণীশ্বরনাথ রেণু, কৈলাসবিহারী সহায়, নারায়ণপ্রসাদ বর্মা, বনফুল, অন্নদাশঙ্কর রায় প্রমুখের রচনা সংগ্রহ করিয়া স্মরণ-গ্রন্থটি প্রকাশ করেন ১৯৭২-এ। তাহার বহু রচনা নিয়মিত উদ্ধৃত হইয়া থাকে যৎকিঞ্চিৎ সতীনাথ-চর্চায়। দীর্ঘকাল দুষ্প্রাপ্য সেই গ্রন্থটি কয়েকটি নূতন রচনা লইয়া সুলভ হইল। গ্রন্থনা করিয়াছেন মধুময় পাল। বইপাড়ার চলতি প্রথা অনুযায়ী সুবলবাবুর কর্ম আত্মসাৎ করেন নাই তিনি, সযত্নে তাঁহার সন্ধান করিয়াছেন, করিয়া জানিয়াছেন, তিনি, তাঁর স্ত্রী এবং দুই পুত্রও প্রয়াত। আলোর আড়ালে থাকিয়া যাঁহারা পরবর্তী শত শত থিসিসের ব্যবস্থা করিয়া যান তাঁহাদের এক জনের প্রতি এমন সম্মান প্রদর্শন সত্যই বিরল। |
|
|
|
|
|