“দেখলে বড় মায়া হয়, তাই এসেছি”
ভাস্থল মানুষের ভিড়ে উপচে পড়ছে। ভিড়ের মধ্যে ঢুকতে পারেননি আশি ছুঁইছুঁই জুব্বার গোলদার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এদিনের সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙায়। স্থানীয় সাধনপুর উলুডাঙা তুলসীরাম হাইস্কুলে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠান কার্যত জনসভায় পরিণত হয়।
সভাস্থলের পাশ দিয়ে চলে গিয়েছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। দুপুর তিনটে তখনও সভা শুরু হয়নি। সমকের ধারে ঘাসের উপর চাদর ছড়িয়ে বসেছিলেন জুব্বার। তাঁর বাড়ি ২ কিলোমিটার দূরে দ্বারিয়াপুর গ্রামে। অতীতে চাষবাস করতেন। এখন আর তা করতে পারেন না।
কেন এসেছেন?
মাথা তুলে বৃদ্ধ বললেন, “মেয়েটাকে দেখলে বড় মায়া হয়। জীবনে কত মার খেয়েছে। বাড়ির পাশে এসেছে তাই এলাম। এতদিন টিভিতে দেখেছি। এখন সামনে থেকে দেখব। হয়তো এটাই জীবনে শেষবারের মতো দেখা।” স্বপ্ন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একবার দেখা করে কথা বলার। দেখা হলে কি করবেন? বৃদ্ধের জবাব, “সিঙ্গুরের জমি দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করুক। তা না হলে চাষিদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। কথা যখন দিয়েছেন সেই মতো কাজ করুন।”
শুধু ওই বৃদ্ধ নয়, দূর-দূরান্ত থেকে কেউ এসেছিলেন পার্টির টানে, কেউ বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি ভালবাসায়। কেউ চাকরির কথা বলতে, কেউ বা ছেলের স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা পাকা করতে। ৬৫ বছরের বৃদ্ধ জিন্না আলি তরফদার এসেছিলেন বোদাই পঞ্চায়েতের ডাঙা গ্রাম থেকে। বললেন, “ছেলেরা ধরল দাদু যেতে হবে। গাড়ি আসবে। গাড়িতে অবশ্য আসা হয়নি ভিড় হয়ে যাওয়ায়। দলের ছেলেরাই অবশ্য বাসে করে যাওয়ার জন্য ১০ টাকা করে হাতে দিয়ে দিয়েছেন। এই দল (তৃণমূল) ভাল লাগে তাই চলে এলাম।”
সিপিএমের হাতে জিন্নার বাবা অত্যাচারিত হয়েছিলেন বলে সিপিএমের ওপর তীব্র ক্ষোভ তাঁর। ট্রেকার বাস, অটো, ইঞ্জিন ভ্যান এমনকি পায়ে হেঁটেও বহু মানুষ এসেছেন। রাস্তার ধারে রীতিমত মেলা বসে গিয়েছিল। কি ছিল না সেখানে! ফুচকা, ঘুগনি, আইসক্রিম কত কি! ইঞ্জিন ভ্যান চালান খালি গ্রামের সোবারেক আলি মণ্ডল। দিদি আসবেন বলে তিনি ভ্যানে করে বিনা পয়সায় ১০-১৫ জনকে সভায় নিয়ে এসেছেন। নাসিমা বিবির স্বামী অন্যের জমিতে চাষ করেন। আর্থিক অবস্থাও খুবই খারাপ। তবু স্বপ্ন দেখেন, একমাত্র ছেলেকে ইংরাজি মাধ্যম স্কুলে পড়াবেন। তাই সভায় এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে বলে যদি কিছু ব্যবস্থা হয়। প্রতিবন্ধী যুবক সরিফুল মল্লিক এসেছিলেন চাকরির প্রত্যাশায়।
এদিন সভায় এসেছিলেন প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী হাততালিও পেলেন প্রচুর। সব মিলিয়ে আশা-আকাঙ্খা, ভালবাসা, দলের প্রতি আনুগত্য এবং সর্বোপরি দিদিকে দেখার তীব্র ইচ্ছা থেকেই এসেছিলেন অনেকে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.