আরাবুল পুলিশ হাজতে, প্রতিবাদে উদ্যমী নয় দল
শাসক দলের ‘তাজা নেতা’ আরাবুল ইসলাম পুলিশের হেফাজতে। কিন্তু শুক্রবারের ভাঙড় যেন কিছুটা নির্লিপ্ত। স্থানীয় বাসিন্দারা তো বটেই, তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের একাংশকেও বিশেষ ‘উদ্যমী’ দেখায়নি প্রতিবাদ-বিক্ষোভে সরব হতে।
আরাবুলের মুক্তির দাবিতে তাঁর ছায়াসঙ্গী, ভোগালি-২ পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূল নেতা মুদাস্সর হোসেনের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় বিজয়গঞ্জ বাজার ও কাঁঠালিয়া বাজার এলাকায় বোমাবাজি হয়েছিল বলে অভিযোগ। সেই উত্তাপের রেশ কিন্তু এ দিন ছিল না এলাকায়। কারণ, মুদাস্সর হোসেন সকাল থেকেই এলাকাছাড়া। তাঁর মোবাইলও বন্ধ।
সকালে কাশীপুর থানার কাছে স্থানীয় কিছু তৃণমূল সমর্থক আরাবুলের মুক্তির দাবিতে মিছিল করেন। থানাও ঘেরাও করেন। কিন্তু পুলিশ নির্বিকার থাকায় মিনিট কুড়ি স্লোগান দিয়ে তাঁরা ফিরে যান। কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার কাঁটাতলা এলাকায় বিকেলে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে একটা ছোট মিছিল হয়, ঠিক যেখানে আরাবুলের হাতে বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা রেজ্জাক মোল্লা আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ। রাস্তার এক ধার দিয়ে তৃণমূলের মিছিল গেলেও পথচলতি জনতা ঘুরে দেখেনি। আশপাশের ব্যবসায়ীরা যে, যাঁর কাজে ব্যস্ত ছিলেন।
চলছে পুলিশের টহল। শুক্রবার ভাঙড়ে। —নিজস্ব চিত্র
আরাবুল গ্রেফতার হওয়ার প্রতিবাদে কাশীপুর ও বিজয়গঞ্জ এলাকায় দোকানদারদের ফোনে হুমকি দিয়েছিল কে বা কারা। কেউ পাত্তা দেননি। সব দোকান খোলা ছিল। ভাঙড় ১ ও ২ নম্বর ব্লকের ব্যবসার প্রাণকেন্দ্রভোজেরহাট, পাকাপোল, শোনপুর, কাশীপুর, চন্দনেশ্বর, পোদরা, পাগলাহাট, বামুনহাটায় ব্যবসা হয়েছে রমরমিয়ে। স্কুল-কলেজ, বাজারও চলেছে নির্বিঘ্নে।
বৃহস্পতিবার আরাবুল যখন গ্রেফতার হন, তখন তিনি ফোনে ভাঙড়ের দলীয় নেতৃত্বকে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পরে পুলিশ তাঁর ফোন কেড়ে নেয়। প্রতিবাদের কী হল? তৃণমূলের ভাঙড়-২ ব্লক সভাপতি ওইদুল ইসলাম বললেন, “এলাকায় শান্তি বজায় রয়েছে। তাই একটা বিশেষ কাজে কলকাতায় চলে এসেছি।” এলাকার আর এক নেতা, জেলা যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি কাইজার আহমেদ (বস্তুত, যাঁর সাম্প্রতিক রাজনৈতিক উত্থানেই আরাবুলের অস্বস্তি বেড়েছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর) সারাদিন বাড়িতেই কাটিয়েছেন। তিনি বলেন, “দলের নির্দেশ, এখানে কোনও বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না। দলীয় কর্মীদের সেটা বৃহস্পতিবার বিকেলেই জানিয়ে দিয়েছি। এর পরেও কিছু ঘটলে আমরা রাজ্য নেতৃত্বকে জানাব।” কাঁটাতলা এলাকায় এ দিন তৃণমূলের পূর্ব নির্ধারিত প্রতিবাদ-সভাও (সরকারের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমের একাংশের ‘অপপ্রচারের’ বিরুদ্ধে) বাতিল করা হয়। এক নেতা বলেন, “ওই সভা থেকে যদি উত্তেজনা ছড়ায়, তা হলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে যাবে। তাই সভা বাতিল হয়েছে।”
ভাঙড়ের বাজার এলাকার ব্যবসায়ী থেকে মোটর ভ্যানচালক কেউই এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুলের গ্রেফতার হওয়া নিয়ে তেমন কোনও মন্তব্য করেননি। এলাকার এক তৃণমূল নেতা বলেন, “রেজ্জাক সাহেবের মতো প্রবীণ নেতাকে মারধর করাটা শুধু এলাকাবাসী নন, দলের অনেকেও মানতে পারেননি। তাই প্রাক্তন বিধায়কের কী হল, তা নিয়ে মানুষ তেমন ভাবিত নন।”
তবে এ দিন ভাঙড়ের রাস্তায়-রাস্তায় ব্যারিকেড করেছে পুলিশ। গাড়ি থামিয়ে চলেছে তল্লাশি। জেলা পুলিশের একটি সূত্রের খবর, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের সূত্রে এ বার দুই সিপিএম নেতাসাত্তার মোল্লা ও তুষার ঘোষকে খোঁজা হচ্ছে। ওই দু’জনের বিরুদ্ধে গত ৮ জানুয়ারি তৃণমূলের মিছিলে বোমা ছোড়া, গুলি চালানোর অভিযোগ রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ওই দু’জনের মোবাইল বন্ধ। কোথায় তাঁরা, সে প্রশ্নের জবাবে মুখে কুলুপ জেলার সিপিএম নেতাদের।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.