ঢোল বাজিয়ে নাচছে কে?
এমএস ধোনি, আবার কে!
‘চক দে’-র সুরে গাইছে কে?
টিম ধোনি, আবার কে!
এক মিনিটের ‘শো’, কিন্তু তাতেই তিনি ‘শো-স্টপার।’ ঝাড়খণ্ডের নতুন স্টেডিয়ামের উদ্বোধনী মঞ্চে যিনি ঢোল বাজিয়ে লোকগীতি গাইছিলেন, সেই নন্দলাল নায়েক বোধহয় ভাবতেও পারেননি এমন মুহূর্তও সৃষ্টি হতে পারে! মাত্র একবারের ডাক, আর তাতেই সিরিজে এগিয়ে-পিছিয়ে পড়ার মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের মাত্র চব্বিশ ঘণ্টা আগে মঞ্চে উঠে পড়লেন ভারত অধিনায়ক। হাতে উঠে এল ঢোল, তালে তালে নাচ! ফোটোগ্রাফারদের পোয়াবারো। কোটি টাকার ছবি। ক্রিকেটযুদ্ধের আগে নাচছেন ভারত অধিনায়ক, এমন স্বপ্নের ছবি কবে দেখেছে ক্রিকেটবিশ্ব?
যুবরাজ-কোহলিরাও বোধহয় ভাবতে পারেননি। ‘ক্যাপ্টেন কুল’ নাচতে শুরু করলেন কি করলেন না, গোটা টিমের ‘কোরাস’ চালু হয়ে গেল! মুখে-মুখে ফিরছে ‘চক দে ইন্ডিয়া’-র গান, সঙ্গে কোমর দুলিয়ে কয়েক পাক। শুনে দর্শকদের ভিড় থেকেই উড়ে এল, “পিকচার আভি বাকি হ্যায়।” অর্থাৎ, উৎসবের প্রথম দিনটা সবে হল, শনিবারটা এখনও পড়ে। |
স্টেডিয়াম উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে ‘অচেনা’ এমএসডি। তৃতীয় ওয়ান ডে-র আগের দিন। |
মানে, আরও একটা ‘ধোনি-শো’।
সময়-সময় দেখে মনে হবে, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচটা বুঝি নামেই হচ্ছে। আসলে ইংরেজদের বিপক্ষ এগারো জনের কোনও টিম নয়, একজন। ঘরের ছেলে ‘মাহি’। এ দিন সকাল থেকেই যাঁকে ঘিরে আবেগের ঘোর লেগে গিয়েছে। ক্রিকেটার থেকে আম-আদমিকেউ তো বাদ নেই। স্টেডিয়ামের উদ্বোধন হল বিকেলে, কিন্তু দুপুর থেকেই ভিড়ে ভিড়াক্কার। রাঁচির বিরসা মুন্ডা এয়ারপোর্টে জনসমুদ্র। কী ব্যাপার? না, কমেন্টেটররা আসছেন। মানে, অতীতের ক্রিকেট-নক্ষত্ররা।
নক্ষত্র-উবাচ চাই?
নভজ্যোত সিংহ সিধু: চন্দনের মিষ্টি গন্ধ যেমন বাতাসে তার রেশ রেখে যায়, ধোনি নামও তেমনই ক্রিকেট ইতিহাসে থেকে যাবে।
রামিজ রাজা: শনিবার ধোনি ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ হচ্ছেই। কেউ আটকাতে পারবে না!
রবি শাস্ত্রী: আমরা শনিবার ধোনি-বিস্ফোরণ দেখতে চলেছি!
দেখতে পাওয়াটা অস্বাভাবিকও নয়। |
রঙের মেলায় রাঁচিতে যুবরাজ-কোহলিরা। শুক্রবার। |
আঙুলে চোট। চলছে শুশ্রূষা। |
|
মাঝে এক বার জল্পনা উড়তে শুরু করেছিল যে এত করেও বোধহয় ধোনি নামতে পারবেন না। নেটে ব্যাট করার সময় একটা বল ধোনির বুড়ো আঙুলে আছড়ে পড়ে। পরে আর ব্যাটও করেননি। আইসপ্যাকের ব্যবস্থাও করতে হয়। যদিও ভারতীয় দলের ম্যানেজার সতীশ বলে যান, “ধোনিকে নিয়ে টেনশনের কিছু নেই। এক্স রে-ও করতে হয়নি। একদম ঠিক আছে।” মানে, ভূমিপুত্রের খেলা নিয়ে কোনও অসুবিধা নেই। রবীন্দ্র জাডেজাও ( যিনি প্র্যাক্টিস পিচ নিয়ে খুঁতখুঁতানি দেখিয়ে গেলেন) পরে বলছিলেন, “রাঁচিতে খেলা নিয়ে ধোনি কিন্তু প্রচণ্ড উত্তেজিত।” আর পিচের খবরে তাঁর মুখের হাসি আরও চওড়া হবে, কোনও সন্দেহ নেই। কিউরেটরের কথা ধরলে, বাইশ গজে রান আছে, পৌনে তিনশো-তিনশোর উইকেট। শুধু হাওয়া অফিসের খবর-ই যা সামান্য ভাঁজ ফেলতে পারে ক্রিকেটপ্রেমীদের কপালে। শনিবার দুপুরের পর থেকে আকাশ নাকি মেঘলা থাকবে। বৃষ্টি হবে? ঠিক নেই।
শুধু একটাই যা দুঃখ। ম্যাচের টিকিট নিঃশেষিত আগেই। আর ধোনির নাচটাও সবাই দেখতে পেলেন কোথায়? এ দিনের অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিতদের সংখ্যা ছিল সীমিত। রাঁচির আমজনতারও তাই ‘মাহি’-র ‘মজলিস’ দেখা হল না।
|
ছবি: মুন্না কামডা ও পিটিআই |