নতুন প্রকল্প শিকেয়
টানাপোড়েনে বন্ধ জীর্ণ জলাধার ভাঙার কাজ
ংস্কারের অভাবে বেহাল জলাধার ভাঙার কাজ শুরু হয়েছিল। কাজ করছিল জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। কিন্তু, কাজ শুরুর পরই অভিযোগ ওঠে, জলাধারের পুরনো পাইপ, লোহার রড চুরি যাচ্ছে। পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, জলাধারের সব পাইপ, রড পুরসভার কাছে জমা দিতে হবে। পুরনো মালপত্ত পৌঁছে দিতে হবে পুরসভার গুদামে। সেই নির্দেশ মানতে নারাজ জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। তাদের বক্তব্য, জলাধার ভাঙার কাজ তারা করবে। তবে মালপত্র নিয়ে যেতে হবে পুর-কর্মীদেরই। এই নিয়ে টানাপোড়েনে থমকে গিয়েছে জলাধার ভাঙার কাজ। নতুন জলাধার তৈরির কাজও শুরু হচ্ছে না।
কেন কাজ বন্ধ? জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মেদিনীপুর ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার মহসিন আলি খান বলেন, “পুরসভার কর্মীরা না থাকলে আমরা জলাধার ভাঙার কাজ করব না। পুরনো মালপত্র চুরি হয়ে গেলে তার দায়িত্ব কে নেবে? এ নিয়ে পুরসভায় একটি চিঠিও পাঠিয়েছি।” মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসুর অবশ্য বক্তব্য, “ওরাই (জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর) জলাধার ভাঙার কাজ শুরু করেছিল। পরে বন্ধ করে দেয়। কেন কাজ বন্ধ রয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখছি।” মেদিনীপুর শহরের কুইকোটা এলাকায় এই জলাধার প্রায় ত্রিশ বছর আগে তৈরি। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর তৈরি করলেও পরে পুরসভাকে হস্তান্তর করে। সেই মতো জলাধারের দেখভাল করত পুরসভাই। কয়েক বছর হল জলাধারটি সংস্কারের অভাবে ধুঁকছিল। চারপাশে ফাটল, দেওয়ালে আগাছা। যে কোনও সময় তা ভেঙে পড়তে। জনবহুল এলাকায় উঁচু ওই জলাধার হঠাৎ ভেঙে পড়লে বড়সড় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। পরিস্থিতি দেখেই এটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়।
থমকে কাজ। —নিজস্ব চিত্র।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকেই এ কাজ করার অনুরোধ জানান পুর-কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়, পুরনো জলাধারটি ভেঙে আশপাশের কোথাও নতুন জলাধার তৈরি হবে। কিন্তু, কাজের শুরুতেই বিপত্তি। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে পুরনো কিছু পাইপ, লোহার রড চুরি গিয়েছে। এই সব মালপত্র ফেরত চেয়ে ওই দফতরের কাছে আবেদন করা হয়েছে। পুর-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সমস্ত মালপত্রই পুরসভাকে দিতে হবে। চুরি যাওয়া মালপত্র যে পুরসভা ফেরত চেয়েছে, তা মেনেই জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “যে সব মালপত্র চুরি হয়েছে, তা ফেরৎ দেবো কী করে? আমরা তো তাই বলেছিলাম, যখন ভাঙার কাজ হবে, তখন যেন পুরসভার কর্মীরা হাজির থাকেন।” ওই আধিকারিকের বক্তব্য, “নজর এড়িয়ে কেউ যদি কিছু মালপত্র অন্যত্র নিয়ে চলে যায়, আমরা কী করব? পুরসভার কর্মীরা হাজির থাকলে এ ঘটনা ঘটত না।” কুইকোটার এই জলাধার থেকে শহরের ১,২,৪,৫ নম্বর ওয়ার্ডের একাংশে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানীয় জল সরবরাহ হত। এই পরিস্থিতিতে ওই সব এলাকায় পাইপ লাইনের মাধ্যমে পর্যাপ্ত জল সরবরাহ হচ্ছে না বলেই অভিযোগ। পুরসভার জল দফতরের পুরপ্রধান-পারিষদ বিশ্বনাথ পাণ্ডব অবশ্য বলেন, “এখন গভীর নলকূপের জল সরাসরি পাইপ লাইনের মাধ্যমে ছাড়া হচ্ছে। ফলে, জলের সমস্যা সে ভাবে নেই। সমস্যা হলে পুরসভা থেকে পানীয় জলের ট্যাঙ্ক পৌঁছনো হয়।”
পুরসভা সূত্রে খবর, কুইকোটার ওই জলাধারে প্রায় দশ হাজার গ্যালন জল ধরত। নতুন করে ওই জলাধার তৈরি করতে হলে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা খরচ হবে। নতুন জলাধার কে করবে, তাও ঠিক হয়নি। পুরসভার বক্তব্য, জায়গা দেখা হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরই জলাধার তৈরি করবে। আবার ওই দফতরের বক্তব্য, পুরসভাই নতুন জলাধার তৈরি করবে। দফতরের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, “পুরসভা যদি প্রয়োজনীয় অর্থ দেয়, তাহলে আমরা নতুন জলাধার তৈরি করে দেবো। অসুবিধে কিছু নেই।” তবে নতুন জলাধার তৈরি দূরের কথা, আপাতত পুরনো জলাধারটি ভাঙার কাজ কবে শেষ হবে, সেই প্রশ্নের সদুত্তর নেই কারও কাছে। এই টানাপোড়েনে প্রকট হচ্ছে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবও।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.