|
|
|
|
মোদীর ব্যাপারে খোলসা করুন, দাবি নীতীশদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
আগামী লোকসভা ভোটে বিজেপি-তে নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকা কী হতে চলেছে, তা স্পষ্ট করে জানানোর দাবি তুলল নীতীশ কুমারের দল।
মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে দেখতে চায় বিজেপি-র একটা বড় অংশ। কিন্তু দল তা ঘোষণা করলে নীতীশ কুমারের জেডিইউ, নবীন পট্টনায়কের বিজেডি-র মতো ধর্মনিরপেক্ষ দলকে পাশে পাওয়ার পথ এখনই বন্ধ হয়ে যাবে। আপাতত তাই মোদীকে লোকসভা নির্বাচনের জাতীয় প্রচার কমিটির প্রধান হিসাবে ব্যবহার করতে চাইছে দল। এতে এক দিকে মোদীকে জাতীয় মঞ্চে তুলে ধরা যাবে, অন্য দিকে ভোটের পর সরকার গড়ার প্রশ্ন এলে মোদীকে সামনে রেখে এগোবে দল।
কিন্তু বিজেপি-র এই রণকৌশল নিয়ে আজ প্রশ্ন তুলল এনডিএ-র বৃহত্তম শরিক জেডিইউ। দলের নেতা তথা বিহার বিধান পরিষদের সদস্য দেবেশ ঠাকুর আজ পটনায় বলেন, “নীতীশ কুমার স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এনডিএ-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর ঘোষণা সব শরিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে করা হোক। সেই ব্যক্তির ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তির প্রশ্নে কোনও আপস করা হবে না। বিজেপি ওই পদে কাকে চাইছে, তা প্রকাশ্যে আনুক।’’ দেবেশের এই বক্তব্যের মাধ্যমে নীতীশ কার্যত ফের স্পষ্ট করে দিলেন যে, মোদীর প্রশ্নে আপস করে তাঁরা বিজেপি-র সঙ্গে একজোট হয়ে ভোটে লড়তে রাজি নন। নীতীশের এই চাপেও অবশ্য বিজেপি এখনই এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। দলের মুখপাত্র নির্মলা সীতারামন বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী কে হবেন তা যথাসময়ে ঘোষণা করা হবে।”
নিজের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তি তথা মুসলিম ভোট ধরে রাখতে মরিয়া নীতীশ গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর ছায়া পর্যন্ত এড়িয়ে চলেন। মূলত তাঁর আপত্তিতেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচনে মোদীকে দিয়ে প্রচার করার পরিকল্পনা থেকে পিছিয়ে আসতে হয়েছিল বিজেপি-কে। মোদীর হাতে দলের প্রচার কমিটির দায়িত্ব দেওয়াটাও ভাল ভাবে নিচ্ছে না জেডিইউ। তাদের বক্তব্য, মোদীর ভূমিকা প্রচার কমিটির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে এক কথা। কিন্তু রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন, সরকার গড়ার মতো সংখ্যা পেলে মোদীকেই সামনে আনবে বিজেপি। এই আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না জেডিইউ শিবিরও। দলের এক নেতার কথায়, “এই অনিশ্চয়তার মধ্যে জোট গড়ে ভোটে লড়া যায় না। ভোটের পর যদি মোদী প্রধানমন্ত্রী হন, সংখ্যালঘু ভোটাররা মনে করবেন জেডিইউ তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করল। দল তাই চায়, বিজেপি অবিলম্বে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করুক।”
মোদী প্রশ্নে বিজেপি অনড় হলে আগামী লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গেও হাত মেলানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না জেডিইউ। এই জোট-সম্ভাবনাকে কটাক্ষ করে বিজেপি মুখপাত্র বলেছেন, “কংগ্রেস তাদের বর্তমান শরিকদেরই রাখতে পারছে না। একের পর এক শরিক সরকার থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। তা-ও যদি তারা নতুন শরিক খুঁজতে শুরু করে, তবে কংগ্রেসের জন্য শুভকামনা রইল।”
কংগ্রেসের একাংশও বিহারে লালুপ্রসাদ বা রামবিলাস পাসোয়ানের চেয়ে জেডিইউয়ের সঙ্গেই জোট করার পক্ষে। এর প্রথম কারণ, বিহারে নীতীশের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তি। দ্বিতীয় কারণ লোকসভায় নীতীশদের সাংসদ ২০ জন। আগামী লোকসভায় তা আরও বাড়ার আশা। এবং সে ক্ষেত্রে সরকার গড়ার দৌড়ে তা কংগ্রেসকে খানিকটা এগিয়ে দেবে। এই সব কারণেই এনডিএ-শরিক নীতীশের সঙ্গে বরাবরই সুসম্পর্ক রেখে এসেছে কংগ্রেস। কিন্তু নীতীশের সমস্যা হল এনডিএ ছাড়লে রাজ্যে সরকার টেকানো অসম্ভব। বিজেপি-কে চাপ দিয়েও তাই ভারসাম্যের রাজনীতিই করে যেতে হচ্ছে তাঁকে। |
|
|
|
|
|