|
|
|
|
পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি, বিজেপিকেও বার্তা দিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
নিয়ন্ত্রণ রেখায় যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তা প্রভাব ফেলল কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরেও। খোদ সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী আজ কঠোর বার্তা দিলেন ইসলামাবাদের প্রতি। বোঝালেন, যত ক্ষণ দু’দেশ সভ্য আচরণ করছে, তত ক্ষণই আলোচনা সম্ভব। জানালেন, “সভ্য আচরণের নীতিতে দাঁড়িয়ে নয়াদিল্লি পারস্পরিক আলোচনা চায় ঠিকই। কিন্তু সন্ত্রাসবাদ দমন ও সীমান্তে নিরাপত্তা অটুট রাখতে সামরিক প্রস্তুতির সঙ্গে কোনও সমঝোতা করা হবে না।”
লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ রণকৌশল নির্ধারণের জন্যই জয়পুরে দলের চিন্তন বৈঠক ডেকেছেন সনিয়া। কূটনৈতিক আলোচনার ক্ষেত্র যে এই শিবির নয়, সে ব্যাপারেও সন্দেহ নেই। তা হলে সেই মঞ্চে দাঁড়িয়েই সনিয়া কেন পাক প্রসঙ্গ তুললেন?
কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, দলের সভানেত্রীর এই মন্তব্যের যত না কূটনৈতিক গুরুত্ব, তার চেয়ে রাজনৈতিক তাৎপর্য অনেক বেশি। নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পাক সেনা যুদ্ধবিরতির শর্ত ভেঙে ভারতীয় জওয়ানের মুণ্ডচ্ছেদ করার পর থেকে সেই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুঠতে নেমে পড়েছে বিজেপি। মৃত জওয়ানের বাড়ি চলে গিয়ে দেশ জুড়ে জাতীয়তাবাদের হাওয়া তুলে বিজেপি নেতারা কংগ্রেস তথা সরকারকে বেকায়দায় ফেলে দিতে চাইছেন। এমনকী, সুষমা স্বরাজের মতো নেতারা ভারতীয় সেনার মুণ্ডের পরিবর্তে পাক সেনার মুণ্ড পর্যন্ত দাবি করছেন। এই অবস্থায় কংগ্রেসের তরফে জাতীয়তাবাদের বার্তা দেওয়া জরুরি। সনিয়া আজ সেটাই করেছেন।
শুধু তাই নয়, কংগ্রেস নেতৃত্বের মতে, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গেও সনিয়ার মতের কৌশলগত ফারাকটা এখানে স্পষ্ট। মনমোহন বরাবর পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপরেই জোর দিতে চান। কিন্তু সনিয়ার মতে, আলোচনা ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক রক্ষা করা জরুরি ঠিকই, কিন্তু রাজনৈতিক কারণে কিছু কঠোর বার্তা দেওয়াও এখন দরকার। প্রধানমন্ত্রী তথা সরকারের অবস্থানের প্রতিফলন ঘটেছে আজ বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদের বক্তব্যেও। কংগ্রেসের চিন্তন বৈঠক উপলক্ষে জয়পুরে এসে সলমন আজ বলেন, “পাকিস্তান যদি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়ে আলোচনায় বসতে চায়, তা হলে নয়াদিল্লি তা বিবেচনা করে দেখবে। নয়াদিল্লিও আলোচনার পক্ষে।” কিন্তু সকালে সলমনের ওই বক্তব্যের পরেই চিন্তন বৈঠকের মঞ্চ থেকে কড়া বার্তা দেন কংগ্রেস সভানেত্রী।
পরে দলের এক বর্ষীয়ান নেতা পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বলেন, গত লোকসভা ভোটের আগে মুম্বই সন্ত্রাসের ঘটনায় এমনই বিপাকে পড়েছিল কংগ্রেস। কারণ, জাতীয়তাবাদের হাওয়া পালে কাড়তে তখন হই হই করে নেমে পড়ে বিজেপি। তা বলে মোকাবিলায় নেমে কংগ্রেস বাজপেয়ী সরকারের মতো ‘অপারেশন পরাক্রম’ করেনি। বরং, যুদ্ধবাজ রাষ্ট্রের মতো আচরণ না করে কেবল ধারাবাহিক কঠোর বার্তা দিয়ে গিয়েছে ইসলামাবাদকে। এ বারও সেই একই পথে হাঁটছে দল। |
|
|
|
|
|