|
|
|
|
|
শিয়ালদহ দক্ষিণ |
সময়ে ট্রেন চেয়ে ট্রেন রুখেই আন্দোলন
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
|
ট্রেন চলাচল নিয়মিত করার দাবিতে আন্দোলন। কিন্তু সেই আন্দোলন হচ্ছে ট্রেন আটকে দিয়েই! এ-হেন আজব ঘটনার সাক্ষী থাকল শিয়ালদহ শাখা।
ভোর থেকে কুয়াশা। তাই বৃহস্পতিবারেও শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় লোকাল ট্রেন দেরি করে চলছিল। এর জেরে বিক্ষুব্ধ জনতা ওভারহেড তারে কলাপাতা ফেলে দেয়। ফলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বিদ্যুৎ-সংযোগ। কুয়াশা তো ছিলই। তার উপরে কিছু মানুষের ডেকে আনা এই বাড়তি বিপত্তিতে ট্রেন বন্ধ হয়ে যায় বারুইপুর-লক্ষ্মীকান্তপুর এবং বারুইপুর-ডায়মন্ড হারবার শাখায়।
রেল সূত্রের খবর, ভোর থেকেই কলাপাতা ফেলা হয় বারুইপুর শাখার গোচরণ, ধপধপি, দক্ষিণ বারাসত স্টেশনে। বিপত্তি ডেকে আনার হাতিয়ার শুধু কলপাতা নয়। কয়েকটি জায়গায় রেললাইনের পয়েন্টে লোহার রড ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। কোথাও কোথাও লাইনের উপরে রেখে দেওয়া হয় কাঠের স্লিপার। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়ে। সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই শাখায় ট্রেন বন্ধই ছিল।
একই ঘটনা ঘটে ডায়মন্ড হারবার শাখাতেও। ওভারহেডে কলাপাতা ফেলা হয় মগরাহাট, দেউলা স্টেশন এলাকায়। রেলের টাওয়ার ভ্যান কলাপাতা সরাতে গেলে ক্ষিপ্ত জনতা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। আরপিএফ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। কলাপাতা সরিয়ে বেলা ১০টা নাগাদ ফের ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
কেন এই বিক্ষোভ?
যাত্রীদের অভিযোগ, শিয়ালদহ ডিভিশনে লোকাল ট্রেন চলাচলে অনিয়মটাই এখন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে কুয়াশা বা অন্য কোনও ঘটনা ঘটলে সারা দিনই অনিয়মিত থাকে ট্রেন চলাচল। এই দফায় টানা ১০ দিন গোলমাল চলছে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায়। আকবর আলি নামে ডায়মন্ড হারবারের এক বাসিন্দা বলেন, “এমনিতেই কুয়াশা। তার উপরে আজ তার ছিঁড়ে যায় তো কাল প্যান্টোগ্রাফ ভেঙে পড়ে! কোনও দিনই সময়মতো কাজে পৌঁছতে পারছি না। প্রচুর লোকসান হচ্ছে। এ ভাবে চলতে পারে না।”
দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থা চলতে থাকায় তিতিবিরক্ত যাত্রীরা এই অনিয়মের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-আন্দোলন শুরু করেছেন। তাঁদের দাবি, সময়মতো ট্রেন চালাতে হবে। একই অবস্থা শিয়ালদহ মেন শাখাতেও। সকালে কিছুটা সময় ঠিকঠাক ট্রেন চললেও দুপুর গড়িয়ে গেলেই ট্রেনগুলি অনিয়মিত হয়ে পড়ছে।
এই দুরবস্থা কেন?
রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী বলেন, “শিয়ালদহ ডিভিশনে এমনিতেই অতিরিক্ত ভিড় হয়। তার সামাল দেওয়ার জন্য আমরা কিছু কিছু পরিকল্পনা নিতে শুরু করেছি। ১২ কামরার ট্রেন চালানোর সঙ্গে সঙ্গে অন্য বেশ কিছু ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। তবে আরও ট্রেন দরকার। চেষ্টা হচ্ছে আনার।” কিন্তু সময়মতো ট্রেন চালানো হচ্ছে না কেন? মন্ত্রী বলেন, “খোঁজ নিয়ে দেখছি। রেলের যদি কোনও গাফিলতি থেকে থাকে, তা হলে এই মুহূর্ত থেকেই ওই অবস্থা পাল্টানোর চেষ্টা করা হবে।” শিয়ালদহ ডিভিশনের কর্তাদের অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা কোনও কারণ না-দেখিয়ে অহেতুক ট্রেন বন্ধ করে দিচ্ছেন। কিন্তু কেন লোকাল ট্রেনগুলি সময়মতো চলছে না, সেই ব্যাপারে তাঁরা মুখ খোলেননি। |
|
|
|
|
|