হাতি আসতে পারে— এই আতঙ্কে পণ্ড হল শতাধিক বছরের পুরনো পৌষ সংক্রান্তির মেলা।
চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের ভগবন্তপুর ২ পঞ্চায়েতের হুড়হুড়িয়া গ্রামের শতাধিক বছরের পুরানো এই মেলা শুরু হয় মকর সংক্রান্তির দিনে। চার দিনের হলেও ভাল বিক্রিবাটা ও জনপ্রিয়তার জন্য মেলা চলে প্রায় সাত দিন। স্থানীয় মহেশপুর, খানডাঙা, গড়গড়ি, মুড়াকাটা, কামারখালি-সহ প্রায় কুড়ি পঁচিশটি গ্রামের মানুষ মেলা দেখতে আসেন। কিন্তু এ বার হাতির ভয়ে বেশির ভাগ দোকান গিয়েছে উঠে। আতঙ্কিত এলাকার মানুষের অভিযোগ, প্রায় চার দিন ধরে হুড়হুড়িয়া ও সংলগ্ন গড়বেতার রসকুণ্ডুর জঙ্গলে ৬০-৭০টি হাতির একটি দল রয়েছে। বন দফতর হাতির পালটিকে গভীর জঙ্গলে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে প্রতি দিন সন্ধ্যা হলেই হাতির পালটি জঙ্গল থেকে বেরিয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। ফসলের ক্ষতি করছে। বুধবার মেলার কাছাকাছি হাতির পালটি চলে আসায় বন্ধ হয়ে যায় মেলা। |
মেলা কমিটি সূত্রের খবর, সোমবার থেকে শুরু হয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মেলা চলার কথা। কিন্তু হাতির আতঙ্কে বুধবার রাত থেকেই অর্ধেকের বেশি দোকানের মালিক মালপত্র গুছিয়ে নিয়ে মেলা ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। মেলা কমিটির সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত পুজারি বলেন, “হাতির আতঙ্কে এলাকার মানুষজন বাড়ি থেকে বেরোতেই ভয় পাচ্ছেন। অর্ধেক দোকানের মালিক চলে গিয়েছেন। বুধবার মেলার কাছে হাতির পালটি চলে আসায় আরও সবাই ভয় পেয়ে গিয়েছেন।” চন্দ্রকোনা থানার ওসি আশিস জৈন বলেন, “হাতির আতঙ্কে মেলা ভাঙা মেলায় পরিণত হয়েছে। আমরা বন দফতরে বিষয়টি জানিয়েছি।” বন দফতরের ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি যাতে তাড়াতাড়ি হাতির পালটিকে গড়বেতার কোনও গভীর জঙ্গলে ঢুকিয়ে দিতে।” মেলা ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে বলে হতাশ মিষ্টি ব্যবসায়ী ইসমাইল খান, চা-ঘুগনির স্টল দেওয়া বিশ্বনাথ দাসেরা। তাঁরা জানান, গত কয়েক বছরে বিক্রিবাটা ভালই হয়েছে। কিন্তু এ বছর হাতির আতঙ্কে লোকজন কম ছিল। তেমন বিক্রিই হয়নি। |