উপ নির্বাচনের জন্য পুলিশ নিয়ে মিছিল ভেস্তে দিয়ে প্রশাসনের তরফে নোটিস ঝুলিয়ে বইমেলা বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হলেও মানলেন না মালদহের বইপ্রেমীরা। জেলা প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে শহরের প্রায় পাঁচ হাজার ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক এবং বিদ্বজ্জনদের নিয়ে বুধবার দুপুরে কলেজ মাঠে শুরু হল ২৪ তম মালদহ জেলা সরকারি বইমেলা। মেলার উদ্বোধক ছিলেন সাহিত্যিক রবিশংকর বল। উদ্বোধনের পরে প্রশাসনের ভূমিকার সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে বইমেলা প্রাঙ্গন। রবিশংকরবাবু বলেন, “বইমেলা বন্ধ করার অধিকার নেই প্রশাসনের।” এ দিন বইমেলা বন্ধের নির্দেশ জারির ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। মেলা কমিটির যুগ্মসম্পাদক জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি অম্লান ভাদুড়ি বলেন, “বইমেলা বন্ধ করার নির্দেশ মানতে পারব না।” সেই সঙ্গে তিনি পাল্টা প্রশ্ন তুলে বলেন, ১৫-১৬ জানুয়ারি জেলায় কৃষিমেলা হচ্ছে। জেলাপ্রশাসন সেটা কেন বন্ধ করলেন না? শুধু বইমেলার উপরে অত্যাচার চলবে! এটা মেনে নেওয়া হবে না।” অতিরিক্ত জেলাশাসক তথা বইমেলা কমিটির সভাপতি সঞ্জীব চাকী বলেন, “মেলা করা যাবে কিনা সেটা নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। উত্তর আসেনি। তাই মেলা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়।” প্রশাসনের কর্তারা জানান, ইংরেজ বাজার বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পরে নতুন সরকারি প্রকল্প বন্ধ রাখা হয়েছে। বইমেলা সরকারি। তাই সেটা করলে নির্বাচন বিধি লঙ্ঘন হয় কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। তাই নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চাওয়া হয়। যদিও মেলা কমিটির সদস্যদের অভিযোগ, গত ১১ জানুয়ারি উপনিবার্চন ঘোষণার পরে বইমেলা করা যাবে কি না তা জানতে চেয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে কয়েক বার দেখা করার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি। তিনি দেখা করার সময় করতে পারেননি। উদ্বোধনের ২৪ ঘণ্টা আগে জানানো হচ্ছে বইমেলা করা যাবে না। তাঁদের প্রশ্ন কলকাতা থেকে সমস্ত প্রকাশক সংস্থা বই নিয়ে আসার পরে কেন ওই নির্দেশ জারি করা হল। এ দিন বইমেলায় মালদহ শহরের প্রায় ৫ হাজার ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক শিক্ষিকা পদযাত্রা সামিল হন। ইংরেজাবাজার থানার সামনে পদযাত্রা পৌঁছতে সদর মহকুমাশাসকের নেতৃত্বে পুলিশ পথ আটকায়। পুলিশ পদযাত্রা ভাঙতে গেলে তাঁরা খেপে যান। মহকুমাশাসক হাতজোড় করে বলতে থাকেন, ডিএম নির্দেশ দিয়েছেন পদযাত্রা করা যাবে না। বইমেলা বন্ধ করতে হবে। পদযাত্রা ভেঙে দেওয়া হলে ছাত্রছাত্রীরা ছুটে বইমেলা প্রাঙ্গনে হাজির হয়। সেখানে মানষের ঢল দেখে পিছু হটতে বাধ্য হন পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা। |