বিনা চিকিৎসায় ভুগে মৃত্যু বাগান শ্রমিকের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বীরপাড়া |
বিনা চিকিৎসায় এক শ্রমিকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠল ডুয়ার্সের বীরপাড়া থানার রামঝোরা চা বাগানে। চালু থাকা ওই বাগানের মুন্ডা লাইনের বাসিন্দা মৃত শ্রমিকের নাম রাম মুন্ডা (৩৫)। তিনি এক মাস ধরে নানা অসুখে ভুগছিলেন। ৪ দিন আগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। অভিযোগ, বাগান কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও তাঁকে বীরপাড়া হাসপাতালে নিয়ে যেতে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করা হয়নি। বুধবার সকালে শ্রমিক বস্তির বাড়িতেই বিনা চিকিৎসায় তিনি মারা যান। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী এবং ৪ সন্তান রয়েছে। অন্য সব বাগানের তুলনায় এখানে শ্রমিকদের কম মজুরি দেওয়ায় অভাবঅনটনে রয়েছেন শ্রমিক পরিবারগুলি। পরিবরের কেউ অসুস্থ হলে অনেক ক্ষেত্রেই নিজেরা টাকা খরচ করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারেন না বলে জানিয়েছেন। বাগানের মালিক নরেন্দ্র বারেলিয়া বলেন, “প্রশাসন অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা এবং চিকিৎসা শিবির করবে বলে জানিয়েছিল।” কেন অন্য বাগানের মতো সমহারে মজুরি দেওয়া হচ্ছে না? সে বিষয়ে নরেন্দ্র বাবু বলেন, “বিষয়টি আলোচনাধীন। এ নিয়ে মন্তব্য করব না।” জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন সরকার বলেন, “দ্রুত ওই বাগানে মেডিক্যাল ক্যাম্প ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি।” গত ২০০২ সালে রামঝোড়া চা বাগানটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। টানা আট বছর বন্ধ থাকার সময় অনেক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। ২০০৮ সাল থেকে ফের আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতীয় চায়ের চাহিদা বাড়ার চায়ের মন্দা দশা দূর হয়। এর পর ২০১০ সালের ৯ অক্টোবর বাগানটি চালু করে নতুন মালিকপক্ষ। বাগানটি চাঙ্গা করতে যে সময় প্রয়োজন ততদিন জেলা প্রশাসন মালিকপক্ষকে নানা বিষয়ে সাহায্য করবে বলে জানিয়ে দেয়। এর মধ্যে অন্ত্যর্দয় যোজনার চাল সরবরাহ এবং একশো দিনের কাজের সুযোগ রয়েছে। শ্রমিকরা বাগান চালাতে মালিকপক্ষের পাশে দাঁড়ায়। দু’ বছর আগে ত্রিপাক্ষিক চুক্তির পর শ্রমিক মজুরি বাড়ে। তবে গত দুই বছরে বাগান কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের নানা ভাবে বঞ্চিত করছেন বলে অভিযোগ। বর্তমানে অন্যান্য বাগানগুলিতে শ্রমিকরা ৯০ টাকা দৈনিক মজুরি পেলেও রামঝোরার ১১০২ জন শ্রমিক আগের মতোই দৈনিক ৬৭ টাকা করে পারিশ্রমিক পাচ্ছেন বলে অভিযোগ। বাগানের বাসিন্দা তথা বাগান বাঁচাও কমিটির নেতা রমেশ শর্মার অভিযোগ, “বাগানে তেমন কোন চিকিৎসা পরিষেবার ব্যবস্থা নেই। চিকিসার অভাবে যুবকটি মারা গেল। যে মজুরি দেওয়া হয় তা দিয়ে ভরপেট খাবার জোটে না। চিকিৎসা করানো তো দূরঅস্ত। সে কারণে মজুরি বাড়াতে বলা হচ্ছে। |