কখনও মধু বিক্রির উদ্দেশ্যে, কখনও জরিবুটি নিয়ে গেরস্থের বাড়িতে হাজির হত তারা। সেখানে আলাপ জমিয়ে নিয়ে জল, চা খাওয়ার নামে বাড়ির ননা খবরাখবর নেওয়া। পরে সুযোগ বুঝে চুরি। এ ভাবেই বেশ চলছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। সম্প্রতি হাবরার বাণীপুর ও মছলন্দপুরে দু’টি মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটে। মন্দিরের তালা ভেঙে বিগ্রহের সোনা-রুপোর অলঙ্কার চুরি যায়। ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। স্বাভাবিকভাবেই তাদের সন্দেহ গিয়ে পড়ে স্থানীয় দুষ্কৃতীদলগুলির উপর। কারণ, ওই একই সময়ে কামারথুবা ও হাটথুবা এলাকায় দু’টি বাড়িতেও চুরি হয়। কামারথুবায় চুরি হয় দুপুরে। বাড়ির লোকেরা তখন মন্দিরে গিয়েছিলেন। হাটথুবায় রাতে চুরির সময় বাড়িতে সকলেই ঘুমিয়েছিলেন। কিন্তু কেউই টের পাননি।
পর পর চুরি হতে থাকায় পুলিশ তার নিজস্ব ‘সোর্স’ মারফৎ খোঁজখবর করে জানতে পারে স্থানীয় দুষ্কৃতীরা এই সব চুরির ঘটনায় জনিত নয়। বাণীপুরে চুরির তদন্তে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, যে দিন চুরি হয়, সে দিন সকালে এক মহিলা এসেছিল ওই বাড়িতে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় ওই মহিলা বানজারা। এর পরেই পুলিশ নজর রাখতে শুরু করে। মঙ্গলবার রাতে বাণীপুর এলাকা থেকে এক বানজারা দম্পতিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের নাম বুলবুল চৌধুরী ও কাঠমণি চৌধুরী। তারা ঝাড়খণ্ডের কোটালপুকুর থানা এলাকার বাসিন্দা। ধৃতদের কাছ থেকে সাড়ে চার কিলোগ্রাম গাঁজাও উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত ওই দম্পতি বাণীপুর ও মছলন্দপুরে চুরির কথা স্বীকার করেছে। কী বাবে খোঁঝখবর নিয়ে তারা চুরির পরিকল্পনা করত তাও জানিয়েছে। হাবরা থানার এক পুলিশ অফিসার জানান, শুধু হাবরাতেই নয়, উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন মন্দিরে চুরির ঘটনায় বানজারা সম্প্রদায়ের লোকজন জড়িত। দলের মহিলারা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে আসত। রাতে পুরুষেরা গিয়ে চুরি করত।”
এই অবস্থায় এলাকায় ওই সম্প্রদায়ের লোকজনদের ঘোরাঘুরি করতে দেখলে পুলিশকে জানাতে বলা হয়েছে। |