ফেডারেশনের চিঠি পাওয়ার পরেও নিজেদের অবস্থান থেকে নড়ছে না ইস্টবেঙ্গল। বুধবার সন্ধ্যায় ক্লাবের কর্মসমিতির বৈঠকের পর সচিব কল্যাণ মজুমদারকে পাশে নিয়ে ক্লাবের অন্যতম শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকারের সোজাসাপ্টা জবাব, “মোহনবাগানের শাস্তি মকুবের ক্ষেত্রে টেবিলের তলায় সমঝোতা হয়েছেই। কিন্তু সে ক্ষেত্রে কী সমঝোতা হয়েছে তা বলছি না। ফেডারেশনের চিঠি পেয়েছি। যথাসময়ে এর উত্তর দেওয়া হবে।”
মঙ্গলবার মোহনবাগানের শাস্তি মকুব প্রসঙ্গে ইস্টবেঙ্গল সচিবের মন্তব্যে ইতিমধ্যেই সরগরম ময়দান। যদিও এ প্রসঙ্গে মোহনবাগান কর্তারা মন্তব্যে নারাজ। ক্লাব সচিব অঞ্জন মিত্র এ দিন সাংবাদিকদের বলেন, “কাদা ছোড়াছুড়ি করতে চাই না। এতে শুধু নাটকই হবে। ফুটবলের ভাল হবে না।” |
• ইস্টবেঙ্গল সচিব কল্যাণ মজুমদারের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ ফেডারেশন
• ক্লাব সচিবকে শো কজ করা হচ্ছে
• জবাবে সন্তুষ্ট না হলে সচিবের জরিমানা বা নির্বাসন হওয়ার আশঙ্কা
• বুধবার সকালে ইস্টবেঙ্গল কোচেরও ফেডারেশন বিরোধী মন্তব্যে নতুন বিতর্ক
• শাস্তির মুখে পড়তে পারেন ট্রেভর মর্গ্যানও
• সন্ধ্যায় ইস্টবেঙ্গলের পাল্টা তোপ ফেডারেশনকে
• জরুরি বৈঠকে সচিবের পাশে ক্লাব
• ফেডারেশনের কাছে ইস্টবেঙ্গলের প্রশ্ন, মোহনবাগান আই লিগের মূলপর্বে থাকলে ঐতিহ্যশালী মহমেডানকেও কেন রাখা হবে না?
• দাবির চিঠি পাঠানো হবে ফেডারেশন, আইএফএ, রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রীকে |
মোহনবাগানের শাস্তি মকুব করে ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, এটাই প্রথম এবং শেষ বার। তেমন আমরাও আজ বলছি, কল্যাণদার মন্তব্যটাও প্রথম এবং শেষ বার।
দেবব্রত সরকার (ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা) |
|
|
মোহনবাগান ইস্যুতে ফেডারেশনের সিদ্ধান্তের পর এ দিন কর্মসমিতির বৈঠক ডাকা হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে। বৈঠক শুরুর কিছু আগেই সচিবের মন্তব্যের জন্য ফেডারেশনের মেল চলে আসে। এক ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পরই সচিবকে নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দেবব্রতবাবু বলেন, “ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেল মোহনবাগানের শাস্তি মকুব করে বলেছেন এটাই প্রথম এবং শেষ। তেমনই আমাদের সচিবের মঙ্গলবারের মন্তব্যও প্রথম এবং শেষ।”
এরই সঙ্গে ফেডারেশনকে চাপে রাখতে ইস্টবেঙ্গলের পাল্টা, মোহনবাগানের মতো মহমেডানকেও আই লিগের মূলপর্বে রাখা হোক। লাল-হলুদ কর্মসমিতির পক্ষে কল্যাণবাবুর যুক্তি, মোহনবাগানের মতোই দেশ জুড়ে জনসমর্থন এবং অতীত গৌরব রয়েছে মহমেডানের। আই লিগ কোর কমিটির সভায় অপরাধী সাব্যস্ত হয়েও সমস্ত নিয়ম অগ্রাহ্য করে যদি কোনও দল ফের লিগে খেলে, তা হলে মহমেডান কেন নয়? মোহনবাগান যেখানে অপরাধ করে পার পেয়ে গেল সেখানে মূলপর্বে উঠতে অপারগ মহমেডানকে বিবেচনা করা হবে না কেন? ফ্র্যাঞ্চাইজির পরিবর্তে মহামেডানকে লিগের মূলপর্বের ছাড়পত্র দেওয়ার দাবিও এ দিন তুলেছে লাল-হলুদ শিবির। মহমেডান সভাপতি সুলতান আহমেদের সঙ্গে একপ্রস্থ কথাবার্তাও হয়েছে তাঁদের। এ ব্যাপারে ফেডারেশনের পাশাপাশি আইএফএ এবং ক্রীড়ামন্ত্রীকেও চিঠি দিচ্ছে ইস্টবেঙ্গল। রাতে সুলতান আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “ভারতীয় ফুটবলে আমাদের অবদান মুছে দেওয়ার প্রচেষ্টা বহুদিনের। ইস্টবেঙ্গলের এই উদ্যোগকে ধন্যবাদ।”
ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের মতোই ফেডারেশনের সিদ্ধান্তে মুখর ক্লাব কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যানও। বুধবার সকালে অনুশীলনের পর তাঁর প্রশ্ন, “লিগে প্রথম ম্যাচের পর এই ঘটনাটা ঘটলে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হত তা জানতে ইচ্ছা করছে। শাস্তি মকুবের কোনও ব্যাখ্যা নেই। আগামী দিনে এর ফল ভাল না খারাপ তা সময় বলবে।” এখানেই না থেমে সাহেব কোচের প্রশ্ন, “ভবিষ্যতে যদি অন্য দলগুলো নানা সমস্যা দেখিয়ে ম্যাচ না খেলে তখন ফেডারেশন কী সিদ্ধান্ত নেবে?” |