|
|
|
|
গন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর সভা |
যাত্রী নামিয়ে দিয়ে বাস দখল তৃণমূল কর্মীদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বেলদা |
মুখ্যমন্ত্রীর জনসভা বলে কথা। মাঠ তো ভরাতেই হবে। অতএব মাঝপথে বাস থেকে যাত্রী নামিয়ে সামনের কাচে সেঁটে দেওয়া হল নারায়ণগড় ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের নাম লেখা কাগজ। হুড়মুড়িয়ে বাস বোঝাই করে কর্মীরা চললেন বেলদায়।
বুধবার দুপুরে পশ্চিম মেদিনীপুরে বেলদা বাজারে অনেকেই দেখলেন এই দৃশ্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘প্রশাসনিক’ জনসভায় লোক নিয়ে যাওয়ার জন্য সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকার কর্মী-সমর্থকদের জড়ো করা শুরু হয়েছিল। দুপুর ৩টেয় সভা। কিন্তু গাড়ির ব্যবস্থা হয়নি। বেলা বাড়তেই তাই মরিয়া হয়ে ওঠেন কিছু স্থানীয় নেতা। তাঁদের নির্দেশে যাত্রী নামিয়ে বাস দখল শুরু হয়।
মাঝপথে নেমে পড়তে হওয়ায় বিপাকে পড়ে যান যাত্রীরা। কেউ হাঁটা লাগান। অন্য বাসের খোঁজ করতে থাকেন কেউ। কিন্তু এমন কিছু যে আদৌ ঘটেছে, নারায়ণগড় ব্লক তৃণমূল সভাপতি মিহির চন্দ তা মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, “আমাদের কেউ এমন কাজ করেনি।” নেতার যুক্তি, “এটা তো দলীয় সভা ছিল না। প্রশাসনিক সভা ছিল। সে ক্ষেত্রে কেউ এমন কাজ করে থাকলে দল তার দায়িত্ব নেবে কেন?” |
|
বাস দখলের পর সাঁটা হচ্ছে পোস্টার। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র |
রাজনৈতিক দলের কর্মসূচির জন্য বাস তুলে নেওয়ার রেওয়াজ এ রাজ্যে নতুন কিছু নয়। বাম জমানায় ব্রিগেড সমাবেশ থেকে জেলার যে কোনও প্রান্তে বড় মাপের সভা হলেই বাস বোঝাই করে লোক নিয়ে যাওয়া হত। নতুন শাসকদলও সেই সংস্কৃতিই ধরে রেখেছে। বাস তুলছে পুলিশও।
গত ৪ ও ৫ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি অনুষ্ঠানের জেরে জঙ্গলমহলে পরিবহণ ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়ে। বিবেক ছাত্র ও যুব উৎসবে জঙ্গলমহলের তিন জেলার প্রায় ২৭ হাজার খেলোয়াড়কে মেদিনীপুরে হাজির করতে ৪ তারিখ বিকেল থেকে বেশির ভাগ বাস তুলে নেয় পুলিশ। ১২ জানুয়ারি ওই ২৭ হাজার খেলোয়াড়কে কলকাতায় আন্তর্জাতিক ছাত্র ও যুব উৎসবে নিয়ে যাওয়ার জন্য আগের দিন বিকেল থেকে বাস তুলে জেলা প্রায় অচল করে দেওয়া হয়। ভোগান্তি হয় বহু মানুষের।
সে কারণেই বেলদার সভার জন্য তুলনায় কম বাস নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল প্রশাসন ও তৃণমূল নেতৃত্বের। তৃণমূল সূত্রের খবর, ১০০টির বেশি বাস নেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়। যাতে জেলার সব প্রান্তের মানুষকে সমস্যায় পড়তে না হয় তার জন্য কেশিয়াড়ি, নয়াগ্রাম, দাঁতন, নারায়ণগড় রুটের বাস নেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছিল। সেই মতো আগাম কিছু বাস নেওয়াও হয়। তবে তাতে যে সুরাহা হয়নি, তা পরে প্রমাণ হল।
এ দিনই আবার মুখ্যমন্ত্রীর সভা থেকে ফেরার পথে মকরামপুরে বাসে ইট ছোড়ার অভিযোগ ওঠে সিপিএমের বিরুদ্ধে। কেউ জখম হয়নি। মকরামপুর টোল প্লাজার কাছে কয়েকটি বাস দাঁড়িয়ে যায়। বাস থেকে নেমে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা পথ অবরোধ করেন। পরে দলীয় নেতৃত্ব এসে বুঝিয়ে অবরোধ তোলেন। তৃণমূল বিধায়ক মৃগেন মাইতির অভিযোগ, “সিপিএমই এই কাজ করেছে।” সিপিএমের বেলদা জোনাল কমিটির সম্পাদক ভাস্কর দত্তের পাল্টা দাবি, “উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ। সিপিএম এই সব নোংরামি করে না।” |
|
|
|
|
|