|
|
|
|
সরকারি মঞ্চ থেকে ভোটের প্রচার মুখ্যমন্ত্রীর |
সুমন ঘোষ • বেলদা |
সরকারি অনুষ্ঠান বদলে গেল রাজনৈতিক প্রচারের মঞ্চে। বদলালেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী।
বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদায় প্রশাসনিক জনসভায় যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উপলক্ষ, এক গুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন। শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রাজনৈতিক মিটিং করার জন্য কোথাও যাচ্ছি না। এই জেলায় এক বছর সাত মাসে ন’বার এসেছি। তখন কিন্তু নির্বাচন ছিল না। এখনও নির্বাচন নেই যে ভোট চাইতে এসেছি। এসেছি আপনাদের ভালবাসা ও আশীর্বাদ নিতে।” যদিও বক্তব্যের শেষ প্রান্তে জনতার প্রতি সেই মমতাই বলেন, “আপনাদের এখানে তো আমরা জিতিনি। তবে পঞ্চায়েতে পুষিয়ে দেবেন।” সব শেষে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “ধৈর্য ধরুন। আমাদের সঙ্গেই থাকুন। অন্য কারও কাছে যাবেন না।” প্রশাসনিক জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্যে বিতর্ক বেধেছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা সিপিএম নেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যেই স্পষ্ট, সরকারি খরচে রাজনৈতিক জনসভা হচ্ছে। পঞ্চায়েত ভোটের অনেক আগে থেকেই উনি প্রচার শুরু করলেন।” |
|
বেলদার সভায়। —নিজস্ব চিত্র |
সরকারি অনুষ্ঠান হলেও এ দিন আগাগোড়া মঞ্চ থেকে রাজনৈতিক প্রচার চলে। মুখ্যমন্ত্রীর আগে সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “সরকারের সঙ্গে থাকুন, জননেত্রীর সঙ্গে থাকুন। যারা স্বাস্থ্যে, পঞ্চায়েতে দুর্নীতি
করেছে আগামী দিনে জনগণ তাঁদের শাস্তি দেবেন।”
যেখানে এ দিন সভা হয় সেই বেলদা থানা এলাকা নারায়ণগড় ব্লকের অন্তর্গত। গোটা অঞ্চলটাই পড়ে প্রাক্তন স্বাস্থ্য ও পঞ্চায়েতমন্ত্রী তথা বর্তমান বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের বিধানসভার মধ্যে। প্রতিপক্ষকে বিঁধতে ছাড়েননি মুখ্যমন্ত্রীও। নাম না করে মমতার কটাক্ষ, “সেজেগুজে টিভির সামনে বসে আমার আদ্যশ্রাদ্ধ করা হচ্ছে। ক’টা হাসপাতাল হয়েছে গত ৩০ বছরে? কেন আপনারা আশা-কর্মীদের স্থায়ী করেননি?” ক’দিন আগে পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে গিয়ে জনস্রোতের চাপে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মোটরবাইকে চেপে সভাস্থলে পৌঁছনো নিয়েও কটাক্ষ করেন মমতা। বলেন, “আমিও মোটরবাইকে, স্কুটারে চড়তে পারি।” মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ কানে গেলেও এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চাননি সূর্যবাবু।
তবে এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি নিয়েও দেখা দিয়েছে প্রশ্ন। জেলায় আরও ছ’টি কলেজ তৈরির কথা আগেই ঘোষণা হয়েছিল। এ দিন ফের সে কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি, “বেলদাতেও আর একটা কলেজ দিয়ে গেলাম!” বেলদায় একটি কলেজ অনেক আগে থেকেই রয়েছে। ফলে, একই থানা এলাকায় আরও একটি কলেজের কী যৌক্তিকতা, সেই প্রশ্ন উঠেছে। জেলা সিপিএমের এক নেতার তির্যক মন্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী এত প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, কী যে বলছেন নিজেই জানেন না।”
টানা ৪৫ মিনিট বক্তব্যের পরে মুখ্যমন্ত্রীও বলেন, “একটু বেশি কথা বলে ফেললাম আজ।” |
|
|
|
|
|