মেঘালয়
গোষ্ঠী-কোন্দলে বিপর্যস্ত কংগ্রেস
ক দিকে সন্তান, অন্য দিকে দল। মেঘালয়ের স্পিকার চার্লস পাইরংপের অবস্থা শাঁখের করাতের মতো। কংগ্রেস তাঁর ছেলে ডেভিডকে প্রার্থী করেনি। সোহরিংখামের বিধায়ক চার্লস নিজে এবার নোংথিম্মাই কেন্দ্রে দলের টিকিট পেলেও, দলের নিয়ম মেনে তাঁকে মাওরিংনেং কেন্দ্রেও প্রচারে যেতে হবে। আর ওই কেন্দ্রেই ডেভিড টিকিট চেয়েছিলেন। কিন্তু টিকিট পান সাংসদ ভিনসেন্ট পালার ঘনিষ্ঠ পাইনেবরলাং মুখিম। নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়তে নেমেছে ডেভিড।
এখন দলের অনুশাসন মানতে হলে, খোদ ছেলের বিরুদ্ধে বাবাকে প্রচারে নামতে হয়। না হলে ছাড়তে হবে দল, পদ, নিশ্চিত মন্ত্রিত্বের হাতছানি।
টিকিট না পাওয়া নিয়ে মেঘালয় কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ সংঘাত বেড়েই চলেছে। বিফল মনোরথ টিকিট প্রত্যাশীদের ক্ষোভে মলম লাগাতে কংগ্রেস ভবনে ডাকা বিশেষ বৈঠকও কার্যত ব্যর্থ হয়ে গেল। বৈঠকে এলেনই না গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী সালেং সাংমা, দালুর বিধায়ক স্যামুয়েল সাংমা ও উমরয়ের বিধায়ক স্ট্যানলি উইস রিম্বাই। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডি ডি লাপাং বিক্ষুব্ধ মন্ত্রী-বিধায়কদের কংগ্রেস প্রার্থীদের বিরুদ্ধে না দাঁড়াতে অনুরোধ জানিয়েছেন। কিন্তু ওই পর্যন্তই।
আর এরই মধ্যে ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছেন ‘সুযোগসন্ধানী’ পূর্ণ সাংমা। পাশাপাশি, বর্তমান জোট শরিক তথা আগের ক্ষমতাশালী দল ইউডিপিকে পাশে পাচ্ছে না কংগ্রেস। সেই সঙ্গে রাজ্য ভোটে লড়তে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেসও। বেশির ভাগ কেন্দ্রে এই বহুমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতার ফলে যেই জিতুন, জয়ের ব্যবধান স্বল্প হতে বাধ্য। এই অবস্থায় ভোট ভাগাভাগি শাসক কংগ্রেসেরই মাথাব্যাথার বড় কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
এখন অবধি যা পরিস্থিতি, তাতে সালেং, স্যামুয়েল, স্ট্যানলি, ডেভিড ও প্রাক্তন মন্ত্রী আইরিন লিংডোরা নির্দল প্রার্থী হিসেবে দলের বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছেন। গত কাল বিকেলে রীতিমতো জনসভা করে নির্দল হিসেবে লড়ার কথা ঘোষণা করেছেন আইরিন। বেশ কিছুদিন ধরেই মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমার বিরোধিতা করছেন তিনি। তাঁর এলাকা মাওথাডরাইসানে কংগ্রেসের টিকিট পেয়েছেন রওয়েল লিংডো। ডেভিডও সমর্থকদের নিয়ে সভা করে ঘোষণা করেছেন ‘এআইসিসি’-র নোংরা রাজনীতির জবাব দিতে, তিনি নির্দল হিসেবেই লড়বেন।
কংগ্রেসের কোঁদল দেখে ইউডিপির কার্যনির্বাহী সভাপতি বিন্দো ম্যাথু লানোং-এর মত, “দলের মধ্যেই কংগ্রেস বহু উপদলে বিভক্ত। নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়তেই পারবেন না মুকুল সাংমা। নিজের লোকেরাই কংগ্রেস প্রার্থীদের ভোট কাটবে। সে ক্ষেত্রে আমাদেরই লাভ।” তবে এনপিপি নেতা পূর্ণ সাংমা ইউডিপির সঙ্গে রাজনৈতিক আঁতাতের কথা ঘোষণা করে দিলেও লানোং এমন কোনও জোট বা চুক্তির কথা অস্বীকার করেন। অবশ্য তাঁর কথায়, ইউডিপি সমমনস্ক দলগুলির সঙ্গে হাত মেলাতে তৈরি।
অরুণাচল প্রদেশ ও মণিপুরে বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতা-বিধায়কদের দলে টেনে আশাতীত সাফল্য পেয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। অরুণাচলে এসেছিলেন সৌগত রায়, সোমেন মিত্র, সুলতান আহমেদ-এর মতো নেতারা। মণিপুরে আসেন খোদ মমতা। তবে মেঘালয়ের ক্ষেত্রে তৃণমূলের এখনও তেমন কোনও উদ্যোগ নজরে পড়ছে না। মুকুল রায়ের ঠিক করে যাওয়া মেঘালয় তৃণমূলের মুখ্য আহ্বায়ক আসাবেন ডি শিরা একেবারেই পর্দার আড়ালে রয়েছেন।
মণিপুরের মতোই মেঘালয়েও নির্বাচনী দায়িত্ব পশ্চিমবঙ্গ যুব তৃণমূলের কার্যনির্বাহী সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর উপরে ন্যস্ত। তিনি বলেন, “যুব উৎসব নিয়ে ব্যস্ত থাকায় মেঘালয় যাওয়া হয়নি। ১২ জানুয়ারির পরে আমরা মেঘালয়ে যাব।”
তবে ‘দাখার পার্টি’ বা বহিরাগত তৃণমূলকে কতটা বিশ্বাস করবেন মেঘালয়বাসী, ক’জন ‘হেভিওয়েট’ বিক্ষুব্ধ এত বিলম্বে দিদির দলে যোগ দেবেন তা নিয়ে ধন্দ রয়েছেই।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.