আবার সাগরে বাঙালির ভেলা
দুঃসাহসের ঢেউয়ে ফের সওয়ার বাঙালি। ডিঙি নৌকায় বাঙালির সাগরপাড়ি এই নিয়ে তিন বার। বুধবার দুপুরে কলকাতা থেকে পোর্টব্লেয়ার অভিযানের প্রাক্কালে দলনেতা তাপস চৌধুরী বললেন, “এটা টিমওয়ার্ক। সমুদ্রে সবাইকে একসঙ্গে যুঝতে হয়।”
বাঙালি কাঁকড়ার জাত! কিংবা আত্মঘাতী! দু’টো অভিধাই বহুল প্রচলিত। বাংলার শিল্পায়ন থেকে রাজ্য-রাজনীতির পটভূমিতে বাঙালির স্বার্থপর খেয়োখেয়ি নিয়ে এমন আফশোস প্রায়ই শোনা যায়।
৪০ বছর বয়সী তাপস ও তাঁর সঙ্গীদের সমুদ্রশৃঙ্গ জয়ের অভিযান তবু অন্য কথা বলার একটা সুযোগ দিচ্ছে। আউটরাম ঘাটের জেটিতে এই সফরের আনুষ্ঠানিক সূচনা-পর্বে বাঙালি-যুবাদের অ্যাডভেঞ্চারের দুঃসাহসকে মুক্ত কণ্ঠে কুর্নিশ করলেন এক রাজনীতিবিদ। এই অভিযানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক সি এক্সপ্লোরার্স ইনস্টিটিউটের কর্তা তথা সাংসদ সৌগত রায় বললেন, “ছ’জন বাঙালি যুবক এবং নৌবাহিনীর এক সদস্যের এই সাহসে যুবসমাজ প্রেরণা পাবে।”

শুরু হল যাত্রাপর্ব। বুধবার।—নিজস্ব চিত্র
‘সাবাশ’ দিলেন নৌবাহিনীর কমোডোর রবি অহলুওয়ালিয়া। ভারতীয় উপমহাদেশের সমুদ্রে দুর্গমতম লক্ষ্য আন্দামান-অভিযান। তাপসদের দলটিকে ধরলে এ পর্যন্ত তিনটি দল এই সাহস দেখিয়েছে।
সেই ১৯৬৯ সালে এর থেকেও ছোট, মোচার খোলের মতো নৌকা কানোজি আংরে-তে ভেসেই পোর্টব্লেয়ার পৌঁছেছিলেন নৌ সেনানি জর্জ ডিউক ও পিনাকীরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। অকালপ্রয়াত পিনাকীর স্ত্রী শিউলিদেবীর চেষ্টাতেই গড়ে ওঠে কলকাতায় সমুদ্র-অভিযানের সংস্থাটি। ১৯৯২ সালের ১ জানুয়ারি ডিউক-পিনাকীর পথেই অরিন্দম বসুর নেতৃত্বে নৌকায় সমুদ্রে পাড়ি দেয় ‘সি এক্সপ্লোরার্স’-দের একটি দল। সাত জনের মধ্যে নৌবাহিনীর এক সদস্যও ছিলেন। পোর্টব্লেয়ার ছাড়িয়ে ভারতের শেষ বিন্দু ইন্দিরা-পয়েন্ট ছুঁয়ে এসেছিলেন তাঁরা। সুনামিতে ইন্দিরা-পয়েন্ট ভেসে গিয়েছে। নতুন অভিযানের লক্ষ্য তাই পোর্টব্লেয়ার। অরিন্দমরা যে নৌকোয় সওয়ার হয়েছিলেন তাতেই অভিযান তাপসদের। ২৯ ফুট চওড়া ফাইবারের ইন্দিরা। ডিউক-পিনাকীদের ডিঙির পাল ছিল না। ৩২ দিন ধরে টানা দাঁড় বাইতে হয়েছিল। টিনের শুকনো খাবার ছাড়া, একটু চাল-ডাল ফুটিয়ে খাওয়ারও জো ছিল না। ইন্দিরায় অবশ্য পাল রয়েছে। অরিন্দমদের সময়ের থেকে প্রযুক্তির সামান্য সহযোগিতাও মিলছে। অকূল পাথারে নিজের অবস্থান বুঝতে এখন জিপিএস পদ্ধতির সুবিধে। সেক্সট্যান্ট দিয়ে চাঁদ-সূর্য-তারা দেখে অঙ্ক কষতে হচ্ছে না।
অরিন্দম বললেন, “সমুদ্রের শিক্ষা জীবনে সর্বক্ষণ কাজ লাগে। সমুদ্রে পথ দেখানোর শেরপা মেলে না। কঠিন সমস্যা মাথা ঠান্ডা রেখে উতরে যাই! এটাই পুরস্কার!”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.