ফের কাজের দিনে পথে-পাতালে থমকে গেল শহরের গতি। সৌজন্যে ধর্মতলায় সংখ্যালঘুদের সভা ও মেট্রোর লাইনে ফাটল। আর এই জোড়া ফলাতেই বুধবার ভরদুপুরে কয়েক ঘণ্টা ধরে হয়রান হতে হল নিত্যযাত্রীদের।
পুলিশ জানায়, এ দিন ধর্মতলায় রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে সংখ্যালঘুদের একটি সমাবেশ ছিল। কলকাতা ও সংলগ্ন জেলাগুলি থেকে গাড়িতে চেপে ও হেঁটে কয়েক হাজার মানুষ সেই সমাবেশে যোগ দেন। ফলে থমকে যায় শহরের প্রাণকেন্দ্র। শুরু হয় যানজট। ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে খবর, সকাল থেকেই লেনিন সরণি, এস এন ব্যানার্জি রোড, গভর্নমেন্ট প্লেস (ইস্ট), চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে গাড়ির গতি ছিল কম। এক সময়ে ওই রাস্তাগুলিতে লাইন দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে যায়। রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ বন্ধ থাকায় এস এন ব্যানার্জি রোড ও জওহরলাল নেহরু রোডের গাড়িগুলিকে মেয়ো রোড দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। |
যানজটে স্তব্ধ পথ।—নিজস্ব চিত্র |
পুলিশ সূত্রে খবর, রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ বন্ধ থাকায় জওহরলাল নেহরু রোডে গাড়ির চাপ বেড়ে যায়। ফলে অল্প দূরত্ব যেতেও সময় লেগেছে অনেক বেশি। গাড়ির চাপ থাকায় সিগন্যাল সবুজ থেকে লাল হতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। ছোটখাটো মোড় পেরোতেও নাজেহাল হতে হয় পথচারীদের। বিকেল সওয়া তিনটে নাগাদ ধর্মতলার কে সি দাশের মোড়ে গিয়ে দেখা গেল, শুধুই গাড়ির লাইন। দু’পাশে ঠায় দাঁড়িয়ে পথচারীরা। গাড়ির ভিড়ে আটকে আছে একটি অ্যাম্বুল্যান্সও। কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা কোনও মতে সেটিকে বার করলেন। যানজটে ট্যাক্সি ধরতে পারছিলেন না এক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ। এক সার্জেন্টের নজরে আসতে তিনিই উদ্যোগী হয়ে সেই বৃদ্ধকে একটি ট্যাক্সিতে চাপিয়ে দিলেন। বিকেলে সমাবেশে যোগ দিতে আসা লোকজন ফেরার সময়েও আর এক দফা যানজট হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সন্ধ্যা পেরিয়ে যায় বলে ট্রাফিক পুলিশ সূত্রের খবর।
মিছিলের গোদের উপরে এ দিন বিষফোঁড়া হয়ে ওঠে মেট্রো-বিভ্রাট। যানজট এড়াতে যাঁরা মেট্রোয় উঠতে যান, নিরাশ হন তাঁরাও। মেট্রো সূত্রে খবর, পৌনে ১২টা নাগাদ মহাত্মা গাঁধী রোড স্টেশনের কাছে সুড়ঙ্গের মধ্যে কবি সুভাষগামী একটি ট্রেনের চালক বিকট আওয়াজ শুনতে পান। তবে গতি বেশি থাকায় তিনি ব্রেক কষতে পারেননি। সেন্ট্রালে পৌঁছে তিনি কন্ট্রোলে খবর দেন। ইঞ্জিনিয়ারেরা পৌঁছে দেখেন, লাইনে ফাটল। মেট্রোর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রত্যুষ ঘোষ বলেন, “মেরামতির সময়ে ট্রেন বন্ধ করতে হয়নি। তবে ওই জায়গায় ট্রেনের গতি কমিয়ে ঘণ্টায় এক কিলোমিটার করে দেওয়া হয়। দুপুর দেড়টা নাগাদ মেরামতি শেষ হলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।” মেট্রো সূত্রের খবর, এই ঘটনার জেরে প্রায় দু’ঘণ্টা মেট্রো চলাচল বিঘ্নিত হয়। ট্রেনগুলি ৭-১০ মিনিট দেরিতে চলেছে। |