|
|
|
|
অতিরিক্ত জমির খোঁজ |
কোথায় হবে আইটি হাব, ধন্দ শিলান্যাসের পরেও |
দেবমাল্য বাগচি • হলদিয়া |
‘বেঙ্গল লিডস’-এর মঞ্চ থেকে ঘটা করে শিলান্যাস হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কোন জমিতে তৈরি হবে হলদিয়ার তথ্য-প্রযুক্তি হাব, তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না।
হলদিয়ায় তথ্য-প্রযুক্তি হাবের বিষয়টি সেই অর্থে নতুন নয়। ২০০৫ সালে এই হাব গড়ায় উদ্যোগী হয়েছিল বাম সরকার। প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ তখন হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের (এইচডিএ) চেয়ারম্যান। মূলত তাঁর উদ্যোগেই সল্টলেক ও নিউটাউনের ধাঁচে শিল্পনগরী হলদিয়ায় তথ্য-প্রযুক্তি হাব গড়ে তোলার তোড়জোড় শুরু হয়েছিল। জমিও চিহ্নিত করা হয়। ওই বছরই কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ‘সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কস অফ ইন্ডিয়া’ (এসটিপিআই)-কে সেই জমি হস্তান্তর করে এইচডিএ। হলদিয়া সিটি সেন্টারের কাছে মোট তিন একর জায়গায় কাজ শুরু হয়। ভূমিপুজোর পরে তৈরি করা হয় একটি পাকা বাড়ি। তবে ওই পর্যন্তই। আর কাজ এগোয়নি। ২০০৭-০৮ সালে হলদিয়া থেকে বালুঘাটা যাওয়ার পথে বারঘাষিপুর মৌজায় আরও ৫০ একর অধিগৃহীত জমিতে নতুন করে আইটি হাব গড়ার পরিকল্পনা নেয় এইচডিএ। এ ক্ষেত্রেও কাজ এগোয়নি আর। |
|
আইটি হাবের নতুন শিলান্যাস। —নিজস্ব চিত্র |
রাজ্যে পালা বদলের পরে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় একাধিক বার ঘোষণা করেছেন, হলদিয়ায় আইটি পার্ক হবে। কিন্তু কোথায় হবে, তা তিনি স্পষ্ট করেননি। গত ৯ অক্টোবর পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সফরে এসে হলদিয়ায় তথ্য-প্রযুক্তি হাবের কথা ঘোষণা করেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষার্থেই মঙ্গলবার ‘বেঙ্গল লিডস ২’-এর উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে হাব-এর শিলাফলকের আবরণ উন্মোচন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তিনিও জানাননি শিল্পনগরীর কোন জায়গায় তৈরি হচ্ছে এই হাব।
বুধবার, ‘বেঙ্গল লিডস ২’-এর দ্বিতীয় দিনে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়, বাম আমলেই তো আইটি হাবের কাজ শুরু হয়েছিল। তা হলে
নতুন করে শিলান্যাস কেন?
শিল্পমন্ত্রীর জবাব, “ওরা সফ্টওয়্যারে জোর দিয়েছিল। আমরা হার্ডওয়্যারেও গুরুত্ব দিচ্ছি।” জমি নিয়ে ধোঁয়াশা অবশ্য এ দিনও পরিষ্কার করতে পারেননি পার্থবাবু। তিনি বলেন, “আগের সফ্টওয়্যার পার্কের তিন একর জমি ছাড়াও অতিরিক্ত পাঁচ একর জায়গা নিয়ে আইটি পার্ক হবে। সেটা কোন এলাকায় হবে, তা এইচডিএ-র সিইও ভাল বলতে পারবেন।”
যদিও সেই অতিরিক্ত জমি কোথায় তা স্পষ্ট করেননি এইচডিএ-র চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার পি উলগানথন। তিনি জানান, এসটিপিআই-এর তিন একর জমি রয়েছে। বাকি পাঁচ একর জমি হয় বাড়ঘাষিপুরে, না হলে এইচপিএল লিঙ্ক রোডের ধারে ফুড-পার্কের পিছনের জমি (বাম আমলেই অধিগৃহীত) থেকে নেওয়া হবে। উলগানাথনের কথায়, “রাজ্যের তথ্য-প্রযুক্তি দফতরের কর্তাদের আমরা দু’টি জমিই দেখিয়েছি।”
জমি চিহ্নিত না করেই তড়িঘড়ি তথ্য-প্রযুক্তি হাবের শিলান্যাস করে দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করে প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠের কটাক্ষ, “বামফ্রন্টের তৈরি করে যাওয়া আইটি হাবের প্রকল্প নতুন করে শিলান্যাস করা হচ্ছে। জমি নীতি ঠিক না করে এ ভাবে এগোলে বেঙ্গল লিডস নয়, বেঙ্গল ব্লিডস হবে।” |
|
|
|
|
|