আর্থিক সুবিধাও চান লগ্নিকারীরা
ছাড়পত্রের সঙ্গে লাল ফিতেরও ফাঁসমুক্তি চায় শিল্প
শিল্পের জন্য জমির ছাড়পত্র পেতে এখন আর বছর গড়ায় না, মঙ্গলবারই ‘বেঙ্গল লিডস’-এর মঞ্চে দাঁড়িয়ে দাবি করে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার শিল্পমহল বলল, জমির ছাড়পত্র মিললে কী হবে, সরকারি লাল ফিতের ফাঁসে এ রাজ্যে প্রকল্প শুরু করতেই ২-৩ বছর গড়িয়ে যায়।
তাঁর দাবি যে নিছক কথার কথা নয়, তা বোঝাতে মঙ্গলবার আইটিসি-র কুরুশ গ্রান্ট, এসপিএস-এর বিপিন ভোরাদের সাক্ষী মেনেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ঊর্ধ্বসীমা আইনের অতিরিক্ত জমি রাখার অনুমতি যে তাঁরা সহজেই পেয়ে গিয়েছেন, তা জানিয়েছিলেন শিল্পকর্তারা। যা শুনে তৃপ্ত মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “তা হলে গুজবে বিশ্বাস করবেন না। কিছু রাজনৈতিক দল আছে যারা খুবই জেলাস। আর আপনারা জানেন, এ দেশে জেলাসির কোনও মেডিসিন নেই।”
কিন্তু এ দিন রাজ্যে উৎপাদন শিল্পের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনাচক্রে জমির বিষয়ে প্রশাসনিক শ্লথতার প্রসঙ্গ তুললেন আলট্রাটেক সিমেন্টের এগ্জিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট রাজীব মেটা। বললেন, এই দীর্ঘসূত্রতায় প্রকল্পের কাজ শুরু করতে প্রায় ২-৩ বছর লেগে যায়। যা ৬০ থেকে ৯০ দিনে নামিয়ে আনা আশু প্রয়োজন। রাজীবের কথায়, “প্রসেস, প্রসেস, প্রসেস...। এটা কমাতেই হবে।”
শুধু লাল ফিতের ফাঁস থেকে মুক্তি নয়, শিল্প গড়তে সরকারের কাছ থেকে আর্থিক উৎসাহও আশা করেন লগ্নিকারীরা। অম্বুজা সিমেন্টের পূর্বাঞ্চলের অন্যতম কর্তা বিবেক অগ্নিহোত্রীর বক্তব্য, “অন্য রাজ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমে লগ্নি টানতে গেলে ‘ইনসেন্টিভ’ জরুরি।” কিন্তু রাজ্যের বেহাল আর্থিক অবস্থার কথা তো মঙ্গলবারই শুনিয়ে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিবেকবাবুর জবাব, আর্থিক সঙ্কট যতই থাক, কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে লগ্নি টানতে হলে এটা জরুরি।
লগ্নিকারীদের পরামর্শ শুনে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আশ্বাস, রাজ্যের পক্ষে যতটা করা সম্ভব তাঁরা করবেন। কারণ রাজ্য লগ্নি চায়। নিজেদের আগ্রহ বোঝাতে এ দিন দিনভর স্টল থেকে স্টলে, সেমিনার থেকে সেমিনারে চরকিপাক খেলেন পার্থবাবু। কিন্তু ঘটনা হল, দু’একটি বাদে প্রায় সব ক’টি সভাতেই আলোচনা ছিল গতানুগতিক। যেমন, দক্ষতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত আলোচনাসভায় কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বললেন, “বাম আমলে পাহাড়ে বা জঙ্গলমহলে শান্তির পদযাত্রা করতো শাসক দল। কিন্তু এখন আর সেই সব নেই।” ধান ভানতে শিবের গীত শুনে সভা ছেড়ে চলেই গেলেন অনেকে।
ফলে প্রায় ২৫ কোটি টাকা খরচ করে রাজ্যের কতটুকু প্রাপ্তি হবে, সেই প্রশ্ন থাকছেই। লগ্নির অঙ্কে এই প্রশ্নের জবাব দিতে রাজি নন শিল্পমন্ত্রী। তিনি বলেন, “অঙ্কশাস্ত্রের মতো এখনই হিসেব চাইলে দিতে পারব না। এখনও অনেক আলোচনাচক্র বাকি রয়েছে। সেখানেও নতুন প্রস্তাব আসতে পারে।” বাংলার লক্ষ্মীলাভ হবেই, আশাবাদী শিল্পমন্ত্রী। কিন্তু স্রেফ ‘বেঙ্গল লিড্স’ সেই আশা মেটাতে পারবে কিনা, তা নিয়ে প্রথম দিনেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন বেঙ্গল চেম্বারের প্রাক্তন কর্তা সন্দীপন চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, “রাজ্যে শিল্পায়নের জন্য একটা জোরদার ধাক্কা নিশ্চয়ই জরুরি ছিল। তবে সেই গতি ধরে না-রাখতে পারলে ভাল সূচনা হলেও লাভ হয় না। সে জন্যই বিনিয়োগ টানতে হলে আরও ভাল নীতি এবং লগ্নি সহায়ক পরিবেশ গড়ে তোলা জরুরি।”
এ রাজ্যে এ দুয়েরই ঘাটতি বলেই তো আক্ষেপ শিল্পমহলের।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.