ব্যানার-ফেস্টুনে ছয়লাপ কোলাঘাট সেতু থেকে হলদিয়ার রানিচক মোড়। মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে তাঁর ছবি-সহযোগে তাতে লেখা ‘জননেত্রী’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘সৌজন্যে চেয়ারম্যান, এইচডিএ’ (হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ)। মুখ্যমন্ত্রীর দলের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী যদিও এইচডিএ চেয়ারম্যান, তা বলে সরকারি পোস্টারে ‘জননেত্রী’! এইচডিএ-র এক কর্তা ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, ওই ব্যানার-ফেস্টুনের সঙ্গে তাঁদের নাকি কোনও যোগ নেই। তাঁরা কিছুই জানেন না। অতএব ঘোর রহস্য।
|
উদ্বোধনে এসে মুখ্যমন্ত্রী বলে গিয়েছেন, রাজ্যে ল্যান্ড ব্যাঙ্ক, ল্যান্ড ম্যাপ, পাওয়ার ব্যাঙ্ক তৈরি হয়ে গিয়েছে। পাওয়ার ব্যাঙ্ক বস্তুটি কী? যা বোঝা গেল, এতে বিদ্যুৎ মজুত থাকছে! বেঙ্গল লিডস-এ রাজ্যের কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস আবার স্কিল ব্যাঙ্ক তৈরির কথাও ঘোষণা করে গেলেন। সেটিই বা কী? এই ‘ব্যাঙ্কে’ দক্ষ শ্রমিকদের হাল-হকিকত দেওয়া থাকবে। দফতরের সচিব অনিল বর্মা অবশ্য বলেছেন, শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের জন্য স্কিল ডেভেলপমেন্ট মিশন তৈরি হচ্ছে।
|
শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘুরছেন বিভিন্ন স্টলে। ভিজিটর্স বুকে লিখছেন মতামত। এক সাংবাদিকের প্রশ্ন, “দাদা, টাটাদের স্টলে যাবেন না?” পার্থবাবুর জবাব, “ওখানে তো যেতেই হবে। না হলে আবার তোমরা লিখবে, টাটাদের এড়িয়ে গেলাম। ওরা তো ব্রাত্য নয়। আমার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই ওদের যোগাযোগ।” গেলেন, খোঁজও নিলেন সকলের। খাওয়া হয়েছে কি না, থাকার ব্যবস্থা হয়েছে কি না। “কী আর করা যাবে, দায় তো স্যারেরই”, মন্তব্য শিল্প দফতরের এক কর্তার।
|
৭২টি স্টল। ভিড় টানছে তালা, বড়ি আর তাঁত। হাওড়ার তালা শিল্পের স্টলে মস্ত এক তালা রাখা। এত বড় তালাও হয়! ‘চল চল দেখে আসি’। ছিল তমলুকের গয়না বড়িও। নানা কল্কায় বড়ি, তলায় পোস্ত মাখা। দেদার বিকোচ্ছে। তন্তুজের স্টলে ‘লাইভ ডেমো’ চলছে তাঁতের। ‘কাস্টমাইজ শাড়ি’র স্টল। যেমন চাইবেন, তাঁতি বুনে দেবেন। বড় শিল্পের ভবিতব্য ঘিরে ধোঁয়াশা থাকলেও তালা-বড়ি-তাঁত কিন্তু সুপারহিট।
|
গতি নেই রেলে
রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে ১৩টি প্রকল্প গড়ার কথা বলেছিলেন। বেঙ্গল লিডস-এর উদ্বোধন
করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা নিজের সাফল্য হিসেবে ওই প্রকল্পগুলির কথা উল্লেখ করেন। কার্যত দেখা যাচ্ছে
দু’টি
প্রকল্প শেষ হয়েছে। বাকিগুলিতে কাজের অগ্রগতি খুব খারাপ। কোনওটির কাজই শুরু হয়নি। |
প্রকল্প |
কোথায় |
কত টাকার |
কী অবস্থায় |
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র |
আদ্রা |
৮০০০ কোটি |
জমি চিহ্নিত, পরিবেশ মন্ত্রক সায় দেয়নি |
কোচ পুনর্বাসন কারখানা |
আনাড়া |
১৮৪ কোটি |
গাছ কাটা, মাটি ভরাট হয়েছে |
রেলের যন্ত্রাংশ কারখানা |
নন্দীগ্রাম |
১০২ কোটি |
এলাকা পরিদর্শন, সমীক্ষা হয়েছে |
ওয়াগন কারখানা |
কুলটি |
১৫০ কোটি |
শেড তৈরি শুরু হয়েছে |
কোচ, ওয়াগন কারখানা |
কাঁচরাপাড়া |
১৬৫০ কোটি |
আগাছা সাফ, বালি ফেলা হয়েছে |
ওয়াগনের যন্ত্রাংশ কারখানা |
বজবজ |
১৫০ কোটি |
কাজ তেমন এগোয়নি |
ডানকুনি-ফুরফুরা রেললাইন |
হুগলি |
১৪৭ কোটি |
কাজই হয়নি |
ওয়াগন প্রোটোটাইপ কারখানা |
খড়্গপুর |
১০২ কোটি |
এখনও টেন্ডার হয়নি |
রেল অ্যাক্সেল কারখানা |
নিউ জলপাইগুড়ি |
৩০০ কোটি |
কাজ শুরু হয়নি |
ওয়াগন কারখানা |
বুনিয়াদপুর |
১৩৫ কোটি |
কাজ শুরু হয়নি |
ইলেকট্রিক ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ কারখানা |
ডানকুনি |
৯০ কোটি |
কাজ শুরু হয়েছে |
ডিএমইউ ইঞ্জিন, কোচ কারখানা |
হলদিয়া |
১০০ কোটি |
কাজ শেষ পর্যায়ে |
ডিজেল ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ কারখানা |
ডানকুনি |
৬০ কোটি |
প্রকল্প সম্পূর্ণ |
|