নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
পরিচারিকার দীর্ঘদিনের সঞ্চিত অর্থ হাতানোর অভিযোগ উঠেছে এক গৃহকর্ত্রীর বিরুদ্ধে। বুধবার ওই পরিচারিকা ও তাঁর প্রতিবেশীরা এই অভিযোগ তুলে আসানসোল-দুর্গাপুরের এডিসিপি (পূর্ব)-এর দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
নাগার্জুন বস্তির বাসিন্দা সবিতা বাউরি জানান, সেপকো এলাকার আটটি বাড়িতে এবং ভারতী রোডে পূরবী মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন তিনি। ২০০৮-এর এপ্রিলে তিনি পূরবীদেবীর বাড়িতে কাজ শুরু করেন। তাঁর বাড়িতে থাকা-খাওয়ারও ব্যবস্থা হয়। সবিতাদেবী অভিযোগ করেন, পূরবীদেবী নানা আর্থিক সংস্থার এজেন্টের কাজ করতেন। তিনি তাঁকে সঞ্চয়ের পরামর্শ দেন। বিয়ের সময়ে সঞ্চিত অর্থ কাজে আসবে, এ কথা ভেবে তিনি রাজি হয়ে যান।
সবিতাদেবীর অভিযোগ, “তখন থেকে দু’হাজার দু’শো টাকা মাসিক আয় পূরবীদেবীর হাতে তুলে দিয়ে এসেছি। সব মিলে তার পরিমাণ হবে এক লক্ষ ১৪ হাজার ছ’শো টাকা।” তাঁর দাবি, গত অগস্টে বিয়ের কথাবার্তা শুরু হলে তিনি টাকা ফেরত চাইলে পূরবীদেবী তা দিতে অস্বীকার করেন। |
দুর্গাপুর থানায়। নিজস্ব চিত্র। |
উল্টে জানিয়ে দেন, তাঁর কাছে কোনও টাকা পাওনা নেই। এ নিয়ে তাঁর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে পূরবীদেবী ও তাঁর স্বামী বিশ্বজিৎবাবুর বচসা হয়। এর পরে তাঁকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ সবিতাদেবীর।
সবিতাদেবীর আরও অভিযোগ, “পূরবীদেবী ও তাঁর ছেলে বিশ্বদীপ বস্তিতে এসে আমাকে ও আমার বোনকে এক দিন মারধর করেন। আশপাশের বাসিন্দারা ছুটে এলে তাঁরা তাড়াতাড়ি গাড়ি নিয়ে পালাতে গেলে একটি ছাগলকে চাপা দেন। এলাকার লোকজন গাড়িটি আটকান।” তিনি জানান, পূরবীদেবী এ জন্য তাঁর জামাইবাবু অশোক বাউড়ি-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এ দিন বিক্ষোভ দেখাতে আসা ‘নাগার্জুন বস্তি নাগরিক উন্নয়ন কমিটি’র তরফে ঝন্টু অঙ্কুরের দাবি, “ঘটনার সময়ে ওই পাঁচ জন বস্তিতেই ছিলেন না। টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ঘুরিয়ে দিতে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন পূরবীদেবী।”
সবিতাদেবীর পাশে দাঁড়িয়ে ‘দুর্গাপুর গণঅধিকার মঞ্চ’-এর যুগ্ম আহ্বায়ক ইন্দ্রজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করে ওঁর অভিযোগের কিনারা করুক। অভিযোগ সত্য হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।” পূরবীদেবীর সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। পুলিশ জানায়, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। |