কাজের টোপ দিয়ে ভিন রাজ্য থেকে শিলিগুড়িতে এনে নিষিদ্ধপল্লিতে বিক্রি করে দেওয়া পাঁচ কিশোরীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে খালপাড়ার নিষিদ্ধপল্লি থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। সন্তোষীনগরের এক কিশোরীকেও উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁকে তাঁর সৎ মা নিষিদ্ধপল্লিতে বিক্রি করে দিয়েছে বলে পুলিশের কাছে সে অভিযোগ করেছে। পুলিশ জানায়, ওই পাঁচ কিশোরীর মধ্যে একজন অসমের মালিগাঁওয়ের। বাকিরা সিকিমের গ্যাংটকের। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, শিলিগুড়িকে কেন্দ্র করে উত্তর-পূর্ব ভারতে একটি নারী পাচার চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ওই কিশোরীদের একজনকে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে নিষিদ্ধপল্লিতে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার বলেন, “ওই কিশোরীদের নিষিদ্ধপল্লিতে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। সেই ভিত্তিতে মামলা করা হয়েছে। কয়েকজন অভিযুক্তের নাম পাওয়া গিয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।” পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও নারী পাচারের আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, যে কিশোরীরের উদ্ধার করা হয়েছে তার মধ্যে একজন বাদে বাকিদের বয়স ১৭-র নীচে। মালিগাঁওয়ের কিশোরীর বয়স ২০ বছর। ছ’মাসের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। তাঁকে শিলিগুড়িতে নিষিদ্ধপল্লিতে দেখা গিয়েছে বলে পুলিশ খবর পায়। ওই দিন রাতে পুলিশের একটি দল খালপাড়ার নিষিদ্ধপল্লিতে হানা দেয়। সেখানের একটি বাড়ি থেকে তাঁকে উদ্ধারের পরই আরও পাঁচ জন পুলিশের কাছে গিয়ে অভিযোগ জানান। তাঁদের উদ্ধার করে পুলিশ। গ্যাংটকের চার কিশোরী পুলিশকে জানিয়েছেন, সিকিমের এক মহিলা তাঁদের বেসরকারি সংস্থায় কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে শিলিগুড়িতে আনেন। এর পরেই তাঁদের সেখানে বিক্রি করে দেওয়া হয়। মালিগাঁওয়ের ওই কিশোরীও এক মহিলার বিরুদ্ধে পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েছে।
শিলিগুড়ির এক ব্যক্তি নারী পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে পুলিশ জেনেছে। তার কাছেই ওই ছয় কিশোরীকে বিক্রি করা হয়। পুলিশ ওই ব্যক্তির খোঁজে তল্লাশি শুরু করলেও এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি। শিলিগুড়ির এক পুলিশ কর্তা বলেন, “ওই ছয় তরুণী গরিব পরিবারের। স্বাভাবিক ভাবেই তাদের পরিবারের তরফেও সেভাবে খোঁজ নেওয়া সম্ভব হয়নি। আপাতত একটি হোমে তাঁদের রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হবে। তাঁদের পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে।” |