প্রাপকদের তালিকা নিয়ে টালবাহানা
দাসপুরে বিলিই হয়নি আয়লায় ক্ষতিপূরণের টাকা
সাড়ে তিন বছর পার হয়ে গিয়েছে। এখনও ক্ষতিপূরণের টাকা পেলেন না আয়লায় ক্ষতিগ্রস্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর পঞ্চায়েত সমিতির বাসিন্দারা।
বিধ্বংসী ওই ঝড়ের মাস দশেক পরে (২০১০ সালের মার্চ) ক্ষতিপূরণের টাকা বরাদ্দ করেছিল রাজ্য সরকার। তিন বছর পার হলেও এখনও সেই টাকা বিলি করে উঠতে পারেনি তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতি। বিভিন্ন মহলে দরবার করেও টাকা না পাওয়ায় ইতিমধ্যে ধার-দেনা করে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি মেরামত করে ফেলেছেন স্থানীয় বেনাই গ্রামের আশেদ আলি, মীর পাড়ার রফিক আলি, শিবরার পঞ্চানন পাত্র ও যমুনা ঘোড়ুয়ের মতো অনেকেই। আশেদ আলির কথায়, “ঝড়ে আমাদের বাড়ি ভেঙে গিয়েছিল। তালিকাতেও নাম উঠেছিল শুনেছিলাম। কিন্তু ক্ষতিপূরণ আর পেলাম না। মাথার ছাদ তো দরকার। তাই নিজেদের মতো করে বাড়ি সারিয়েছি।”
তিন বছরেও কেন বিলি হয়নি টাকা?
তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত সমিতি তালিকায় ক্ষতিগ্রস্তদের সংখ্যা অনেক বাড়িয়ে দেখিয়েছিল। পরে জেলা ত্রাণ দফতর তদন্ত করে তালিকা থেকে বেশ কয়েকজনের নাম কেটে দিলেও গ্রামবাসীদের তা জানানো হয়নি। এখন সংশোধিত তালিকা অনুযায়ী যে টাকা এসেছে, তা বিলি করতে গেলে বাদ পড়ে যাবেন অনেকেই। ফলে এই নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা পঞ্চায়েত সমিতির। তাই টাকা বিলির কাজে তাঁরা গড়িমসি করছেন বলে অভিযোগ। পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা সিপিএমের নিশীথ পোড়ে বলেন, “আগে তালিকায় গরমিল করেছিল পঞ্চায়েত সমিতি। ফলে এখন টাকা বিলি করতে সমস্যা হচ্ছে তাদের।” পঞ্চয়েত সমিতির সভাপতি আশিস হুতাইত অবশ্য তালিকায় গরমিলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “আমরা সম্পূর্ণ টাকা পাইনি। তাই বিলি করা যায়নি।”
২০০৯ সালের মাঝামাঝি গোটা রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকাতেও বিধ্বংসী আয়লায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর ২ ব্লকে ক্ষতির মাত্রা ছিল সবথেকে বেশি। বেনাই, দুধকোমরা, শিবরা, জোতঘনশ্যাম প্রভৃতি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঁচা বাড়ির টিনের ছাদ, খড়ের চাল গিয়েছিল উড়ে। ঝড়-বৃষ্টিতে মাটির বাড়ির দেওয়ালও ভেঙে পড়েছিল কোথাও কোথাও। চাষের ক্ষতি তো হয়েছিলই। রাজ্য সরকার জানিয়েছিল, আয়লায় বাড়ির আংশিক ক্ষতি হয়েছে যাঁদের, তাঁদের পাঁচ হাজার ও সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্তদের ১০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। সেই সময় তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতি সরকারি নির্দেশে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে। তাতে শুধু ওই ব্লকের মোট ১৪টি পঞ্চায়েত থেকেই প্রায় ৫০০০ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা পাঠানো হয়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় পাঁচ হাজার নামের যে তালিকা (আংশিক ও সম্পূর্ণ) পাঠানো হয়েছিল প্রথমে, সেই মোতাবেক ক্ষতিপূরণ দিতে হলে ১ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা দিতে হত রাজ্য সরকারকে। কিন্তু প্রশাসন তালিকা থেকে নাম কেটে দিয়ে বরাদ্দ করে মাত্র ২৫ লক্ষ ৫৭ হাজার ৫০০ টাকা।
এ দিকে, টাকা আসার খবর চাউর হতেই তালিকায় নাম উঠেছিল যাঁদের, তাঁরা ব্লক অফিসে ধর্না দেওয়া শুরু করেন। এর মধ্যে অনেকের নামই কাটা গিয়েছে সংশোধিত তালিকায়। পরিস্থিতি অনুকূল নয় বুঝে টাকা বিলি স্থগিত করে দেয় পঞ্চায়েত সমিতি। টাকা এসে পড়ে থাকলেও বিলি হচ্ছে না দেখে এক সময় আন্দোলন শুরু করে সিপিএম। এমনকী তৃণমূলেরও একটি গোষ্ঠী টাকা বিলি করার জন্য তৎপর হয়। লাভ হয়নি তাতেও।
জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য তথা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তপন দত্তের কথায়, “আমরা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সিপিএম পরিচালিত জেলা পরিষদ সেই টাকা না দেওয়ায় সমস্যা হচ্ছে।” উত্তরে সিপিএম পরিচালিত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা তো বলেছিই প্রয়োজনে আরও টাকা দেওয়া হবে। আগে প্রথম দফার টাকা বিলি করুক ওরা। তিন বছরে তো তাই করে উঠতে পারল না।” জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, যে কারণেই গড়িমসি হোক না কেন এ বার দ্রুত ওই টাকা বিলি করা হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত বলেন, “যাতে দ্রুত টাকা বিলি হয় তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
মেদিনীপুরে সভা। শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়ে সভা করল আরএসপি-র শ্রমিক সংগঠন ‘ইউনাইটেড ট্রেডস ইউনিয়ন কংগ্রেস’ (ইউটিইউসি)। রবিবার মেদিনীপুর শহরে অনুষ্ঠিত এই সভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অশোক ঘোষ, জেলা সভাপতি শক্তি ভট্টাচার্য, অমৃত মাইতি প্রমুখ। সভা থেকে শ্রমিকদের দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলনে নামার ডাক দেন নেতৃত্ব।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.