দলছুট একটি মাকনা হাতির হানায় আতঙ্ক মালবাজার থানার কুমলাই এলাকায়। রবিবার ভোরে দুই ঘন্টা তাণ্ডব চালিয়ে হাতিটি চারটি বাড়ি ভাঙা ছাড়াও এক ব্যক্তিকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে ছুঁড়ে ফেলে। এতে রাজেশ ওঁরাও নামের ওই ব্যক্তিকে পায়ে জখম অবস্থায় মালবাজার মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ঘটনার পর খবর পেয়ে এলাকায় যান বনকর্মীরা। ক্ষতিপূরণ এবং এলাকায় বন দফতরের ক্যাম্পের দাবিতে গরুমারা নর্থ রেঞ্জ এবং খুনিয়া বন্যপ্রাণী স্কোয়াডের দুই রেঞ্জার এবং ১০ জন বনকর্মীদের ৪ ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখেন বাসিন্দারা।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য অখিল রায়ের অভিযোগ, “প্রয়োজনের সময় বনকর্মীদের দেখা মেলে না। নানা অজুহাত দেখিয়ে তাঁরা দেরি করে ঘটনাস্থলে আসেন। সেকারণেই ওঁদের ঘেরাও করে রাখা হয়।” এলাকায় যান কুমলাই গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বাদসা আহমেদ। ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এলাকায় ক্যাম্প অফিস তৈরির সম্মতি দিয়ে ঘেরাও মুক্ত হোন বন দফতর, অফিসারেরা। জলপাইগুড়ির ডিএফও বিদ্যুৎ সরকার বলেন, “ক্যাম্পের পাশাপাশি ক্ষতিপূরণও দেওয়া হবে।” এলাকার বাসিন্দারা জানান, এ দিন ভোর পাঁচটা নাগাদ নেওড়া নদী পার হয়ে খাগড়িজান গ্রামে ঢুকে পড়ে হাতিটি। প্রথমে বিরসা ওঁরাও এর বাড়ি ভাঙচুর করে মাকনাটি। বাড়ি বাঁচাতে রাজেশ ওঁরাও এগিয়ে এলে তাঁকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে জখম করে হাতিটি। জঙ্গলের দিকে না ফিরে কুমলাই-এর স্টেশন পাড়ার দিকে চলে আসলে বিপত্তি বাড়ে। বাড়ির উঠোনে সবে ঘুম থেকে উঠে খড় জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে বসেছিলেন অশীতিপর বৃ্দ্ধা দেবেশ্বরী রায়।
শাশুড়ির আর্তনাদ শুনে তাঁকে কোনও ক্রমে উদ্ধার করেন পুত্রবধূ সুমিত্রা রায়। মাকনাটি দেবেশ্বরীর ঘর ভেঙে গুড়িয়ে দেয়। এর পরে সুবেশ্বর এবং সহদেব রায়ের বাড়িও ভাঙে হাতিটি। মজুত ধানের বস্তা টেনে বের করে ধান খেয়ে ফেলে মাকনাটি। স্থানীয় বাসিন্দা নীরেন রায় বলেন, “বন কর্মীরা না আসায় এলাকার বাসিন্দারা মিলে হাতিটিকে তাড়ানোর চেষ্টা শুরু হয়। ৭টা নাগাদ হাতিটি নেওড়া নদী পার হয়ে ফের জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। তবে কখন সেটি বা দল আবার বার হবে সেই আতঙ্কে ভুগছে সবাই।” |