টানা এক সপ্তাহ ধরে দলমার পালের ৫০-৬০টি হাতি লালগড় রেঞ্জের জঙ্গলে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সন্ধে হলেই লোকালয়ে ঢুকে কার্যত তাণ্ডব চালাচ্ছে হাতিরা। সব মিলিয়ে ৪০টিরও বেশি বাড়ি ভেঙেছে তারা। প্রায় পাঁচশো বিঘে জমির সব্জি খেয়ে ও মাড়িয়ে নষ্ট করেছে হাতিরা। ক্ষোভ বাড়ছে বাসিন্দাদের। এলাকাবাসীর তাড়া খেয়ে হাতির দলটি এখন লালগড়ের কাঁটাপাহাড়ি এলাকায় রয়েছে। গত কয়েকদিনে স্থানীয় কুঁয়াপাড়া, গুড়িয়াপাড়া, দলিলপুর, বাঘনাদা, বহড়ডাঙা, লালডাঙা, ধানঘোরি, বরাগাদা, কাঁটাপাহাড়ি-সহ প্রায় ১৫টি গ্রামে হামলা চালিয়ে হাতিরা ফসল ও বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে। ইতিমধ্যে গত বুধবার কাঁটাপাহাড়ির জঙ্গলে পালের একটি হস্তিনী প্রসব করায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন বনকর্মীরা।
পুরনো অভিজ্ঞতা বলছে, সঙ্গে সদ্যোজাত শাবক থাকলে হাতিরা সেই এলাকা সহজে ছাড়তে চায় না। এখনও হাতিদের দলমায় ফেরার সময় হয়নি। ফলে হাতিরা কোনদিকে যাবে তা বোঝা যাচ্ছে না। বন দফতরের চেষ্টা ছিল কংসাবতী পার করে হাতিদের বিনপুরের মালাবতির জঙ্গলের দিকে পাঠানো। এখন পালে সদ্যোজাত শাবক থাকায় হাতিরা সেদিকে যাবে কি-না তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন বনকর্মীরা। সেক্ষেত্রে শাবকটি ধাতস্থ হলে কয়েকদিন পরে হাতিরা গোয়ালতোড়ের দিকে যেতে পারে বলে মনে করছে বন দফতর। কিন্তু ততদিনে বিপুল ক্ষয়ক্ষতির জেরে বাসিন্দাদের ক্ষোভ কী ভাবে সামাল দেওয়া যাবে তা ভেবে পাচ্ছেন না লালগড়ের রেঞ্জ অফিসার অমিয়ময় দে। তাঁর কথায়, “হাতির হামলা ঠেকাতে হুলা (মশাল) জ্বালানোর জন্য গত কয়েকদিনে এলাকার ২০-২৫টি গ্রামের প্রায় চারশো বাসিন্দাকে দেড় হাজার লিটার পোড়া-মোবিল দেওয়া হয়েছে। কিন্তু হাতিদের হামলা ঠেকানো যাচ্ছে না। সঙ্গে শাবক থাকায় হাতিরা এলাকা ছেড়ে নড়তেই চাইছে না। তবুও যতটা সম্ভব ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়ে হাতিদের অন্যত্র পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।” |