|
|
|
|
লাটাই ধরতে মেলে ছুটিও |
ঘুড়ির পিঠে চড়েই বিশ্ব-দরবারে গুজরাত |
সংবাদসংস্থা • আমদাবাদ |
গুজরাতের ঘুড়ি। উড়ান বিশ্ব-আকাশে। লাটাই অবশ্যই নরেন্দ্র মোদীর হাতে।
শিল্প, উন্নয়নের পাশাপাশি পর্যটনেও রাজ্যকে আন্তর্জাতিক উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান মোদী। এ বারের আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উৎসবকে হাতিয়ার করে সেই লক্ষ্যে আরও এক ধাপ এগোলেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী।
আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই, গত কাল সন্ধ্যায় ২৫তম ঘুড়ি উৎসবের আলো ছড়িয়েছিলেন দেশি-বিদেশি ঘুড়িপ্রেমীরা। জ্বালিয়েছিলেন ২৫টি মোমবাতি। আজ সবরমতীর তীরে মোতেরা শহরে উৎসবের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “গুজরাতের ঘুড়ি উৎসবকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টাই হয়নি আগে। আমরাই প্রথম দেখিয়ে দিলাম, ঘুড়ির মাধ্যমেও সারা বিশ্বের নজর কাড়তে পারে গুজরাত।” শুধু তাই নয়, মোতেরার মতো ছোট একটি শহরে এই আন্তর্জাতিক উৎসব করার পেছনেও রয়েছে বিশেষ কারণ। “আমরা চেষ্টা করছি মোতেরার মতো ছোট ছোট শহরগুলিতে এই উৎসবকে পৌঁছে দিয়ে বিশ্ববাসীর কাছে ব্র্যান্ড মোতেরাকে জনপ্রিয় করে তুলতে।” জানান মোদী। |
|
আমদাবাদে আন্তর্জাতিক ঘুড়ি উৎসবে। ছবি: পিটিআই |
এখানেই শেষ নয়। এই উৎসবকে উপলক্ষ করেই গুজরাতের পর্যটন শিল্প আরও সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে বলে বিশ্বাস মোদীর। তাঁর মতে, পৃথিবীকে দেখানোর মতো এবং দেওয়ার মতো অনেক সম্পদ রয়েছে গুজরাতে। কিন্তু পর্যটন শিল্পে উন্নয়নের কোনও চেষ্টাই করা হয়নি এর আগে। গত কয়েক বছরে তাঁর সরকার কিছুটা চেষ্টা করেছে। তাতেই কতটা অগ্রগতি হয়েছে তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মোদী বলেন, “উন্নয়নের কাজ দেরিতে শুরু হলেও, গুজরাত যে ভাবে অল্প সময়ের মধ্যেই পর্যটকদের আকৃষ্ট করেছে, খুব কম জায়গার পক্ষেই তা সম্ভব। সারা ভারতের পর্যটন শিল্পে বৃদ্ধির হার যেখানে ৭ শতাংশ, সেখানে গুজরাত এগোচ্ছে ১৬ শতাংশ হারে। আমাদের প্রচেষ্টা সফল।” এর রহস্যটা কী? মোদীর মতে, ৬ কোটি গুজরাতবাসীর শক্তিই বিশ্ববাসীর কাছে গুজরাতকে আকর্ষণীয় করে তুলছে। ৫০টি দেশ থেকে এবং ভারতের ১০টি রাজ্য থেকে অতিথিরা এসেছেন এই উৎসবে। আর এসেছেন সারা বিশ্বের অসংখ্য ঘুড়িপাগল। কেউ বহু বছর ধরেই আসছেন এখানে, কারও প্রথম বারের অভিজ্ঞতা।
বিদেশি ঘুড়িপ্রেমী ডেরেক কুন এই উৎসব নিয়ে রীতিমতো আপ্লুত। ১৯৯৩ সাল থেকে উৎসবের সাক্ষী তিনি। তাঁর কথায় “১৯৮৯ সালে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠান আজ এক মহোৎসবে পরিণত হয়েছে। প্রতি বছরই বাড়ছে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা। সারা রাজ্য আনন্দে মেতে ওঠে এই উৎসবকে কেন্দ্র করে। এখানে এলেই দেখা হয়ে যায় পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে, তৈরি হয় আরও অনেক নতুন বন্ধু। নিজের বানানো ঘুড়িটিকে সারা বিশ্বের ঘুড়িপ্রেমীর সামনে উড়িয়ে দেখানোর অভিজ্ঞতাও দারুণ।”
একই মত সিঙ্গাপুরের মহিলা ঘুড়িপ্রেমী গাদিস ওয়াইদিয়াতির। গত ১০ বছর ধরে তিনি অংশগ্রহণ করছেন এই উৎসবে। তিনি জানালেন, “ঘুড়ি ওড়ানোই শুধু নয়, এখানে এলে অনেক নতুন বন্ধু তৈরি হয়। এখন আমি শুধু ঘুড়ি ওড়াতেই এই উৎসবে আসি না, নিজেকে এই পরিবারেরই অংশ মনে করি।” তিনি আরও জানান, “ঘুড়ি উৎসবকে জনপ্রিয় করে তোলার জন্য গুজরাত সরকারের প্রচেষ্টা প্রশংসাযোগ্য। শুধু এই রাজ্যেই ঘুড়ি ওড়ানোর জন্য ছুটি পাওয়া যায়।”
উচ্ছ্বসিত নতুন অতিথিরাও। প্রথম বার গুজরাতে এসে এক ব্রিটিশ অতিথি বললেন, “গুজরাতিদের আতিথেয়তা অতুলনীয়। ঘুড়ি উৎসবের অভিজ্ঞতাও খুবই উপভোগ করার মতো।” |
|
|
|
|
|