তিলজলা, তপসিয়া এলাকায় পরপর কয়েকটি গণপিটুনির ঘটনায় দশ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে মহম্মদ আব্দুল ওরফে জারু নামে ওই এলাকার এক দাগি দুষ্কৃতী রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
রবিবার গোয়েন্দাপ্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ জানান, শনিবার রাতভর পুলিশের একটি বিশেষ দল তিলজলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আব্দুল-সহ ১০ জনকে গ্রেফতার করে। আব্দুলের থেকে পাঁচ কিলোগ্রাম বোমা তৈরির মশলা, গুলি তৈরির সরঞ্জাম ও তিনটি দেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।
গত ডিসেম্বর থেকেই তিলজলা, কড়েয়া ও তপসিয়ায় শিশুচোর সন্দেহে একাধিক গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। মারা গিয়েছেন দুই মহিলা। গত বৃহস্পতিবার নারকেলডাঙাতেও এক যুবককে পিটিয়ে মারা হয়েছে। কড়েয়ায় স্থানীয়দের মার থেকে রেহাই পায়নি মায়ের সঙ্গে থাকা শিশুও। গণপিটুনি থেকে উদ্ধার করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছে পুলিশ। ভাঙচুর, বিক্ষোভও হয়েছে। পুলিশ বলছে, ওই এলাকার কয়েকটি মাদকাসক্ত শিশুর মুখ থেকেই এই ধরনের গুজব ছড়ায়। তা-ই পরে এই ধরনের ঘটনার মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
পুলিশ সূত্রের খবর, একের পর এক গণপিটুনির ঘটনা ঘটলেও এই এলাকার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারেরা তা আটকাতে পারেননি। এর মধ্যেই বদলি হয়েছেন দক্ষিণ-পূর্ব ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার চম্পক ভট্টাচার্য। লালবাজারের একাংশের মতে, তাঁর বদলির পিছনে পরপর গণপিটুনির ঘটনা অন্যতম কারণ। চম্পকবাবু বদলি হওয়ার পরেও গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় থানা বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করেও তা আটকাতে পারেনি।
লালবাজার সূত্রে জানা যায়, এই ঘটনার পিছনে স্থানীয় কিছু যুবক জড়িত। দুষ্কৃতীদের পাকড়াও করতে গুন্ডাদমন শাখার অফিসারদের লাগানো হয়। শনিবার রাতে গুন্ডাদমন শাখার ওই বিশেষ দলটি দশ জনকে ধরে তিলজলা থানায় নিয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, ধৃতদের আপাতত তিলজলায় এক মহিলাকে পিটিয়ে মারার মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে দেখানো হয়েছে। ওই এলাকার অন্যান্য থানার ঘটনাগুলিতেও তারা জড়িত কি না, তা-ও খতিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা। |