মিছিল-বাস-মেট্রোর ত্রিফলা, ছুটির দুপুরে দুর্ভোগ শহরের
র্মতলা যাবেন বলে টালিগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে মিনিবাসে উঠেছিলেন অনল দত্ত। হাজরা পেরিয়ে ভবানীপুর থানার কাছাকাছি পৌঁছে দেখলেন, কিছু আর নড়ছে না। একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মিছিল বেরিয়েছে। তখন দুপুর ২টো। অগত্যা বেলতলা রোড হয়ে যাবেন বলে একটি ট্যাক্সিতে উঠলেন। ওই ঘুরপথেও তখন বহু যানবাহনের ভিড়। লি রোডে পৌঁছে তিনি বুঝলেন, সড়কপথে এগোনোই মুশকিল। শেষমেশ ট্যাক্সি ছেড়ে তিনি রবীন্দ্র সদন মেট্রো স্টেশনে নামলেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে অনলবাবু দেখলেন, ২টো ২৫ মিনিটে দমদমগামী যে-ট্রেনের সেখানে ঢোকার কথা, সেটি এল পাঁচ মিনিটেরও পর। কোনও কামরাতেই যেন তিল ধারণের জায়গাটুকু নেই।
রবিবার কলকাতায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তির এটা খণ্ডচিত্র মাত্র।
সড়কপথে মিছিলের ফলে যানজট। গঙ্গাসাগর মেলা ও ভাড়া বৃদ্ধি না-হওয়া-সহ বিভিন্ন কারণে বাসের অপ্রতুলতা ও মেট্রোর বিভ্রাট। এই ত্র্যহস্পর্শে রবিবার দুপুর থেকে বিকেল, সাধারণ মানুষের ভোগান্তির সাক্ষী রইল কলকাতা। দুপুরে দক্ষিণের রাসবিহারী থেকে যে হয়রানির যাত্রা শুরু, তার রেশ সন্ধ্যায় গিয়ে পৌঁছয় উত্তর কলকাতার মহাত্মা গাঁধী রোড এলাকায়।
শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড, আশুতোষ মুখার্জি রোড, চৌরঙ্গি, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ মেট্রো রেল যে-সব রাস্তার নীচ দিয়ে গিয়েছে, সেগুলির উপর দিয়েই এ দিন দুপুর ১২টার কিছু আগে শুরু হয়েছিল একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মিছিল। পুলিশের হিসেবে, ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ তাতে যোগ দেন হাজার খানেক ট্রাক ও গাড়ি নিয়ে। প্রতি বছর নির্দিষ্ট দিনে এই নির্দিষ্ট পথ ধরেই ওই মিছিল যায়।
ভোগান্তির ত্র্যহস্পর্শে থমকে পথ। পার্ক স্ট্রিট উড়ালপুলে। —নিজস্ব চিত্র
ডি সি ট্রাফিক (৩) কমল থাপা বলেন, “বিভিন্ন জায়গায় যানবাহন ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। সময় মতো মেট্রো না-পেয়ে অনেকে যাত্রী উপরে উঠে আসেন।” এমনিতেই রবিবার মেট্রো চালু হয় দুপুর ২টোয়, ট্রেন চলে ১৫ মিনিট অন্তর। কিন্তু সম্ভাব্য যানজটের বিষয়টি জানা সত্ত্বেও মেট্রো বেশি ট্রেন চালাল না কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী। তাঁর বক্তব্য, “মিছিলের কথা মাথায় রেখে মেট্রো রেলের উচিত ছিল এ দিন বেশি সংখ্যক ট্রেন চালানো। তা হয়নি কেন আর যান্ত্রিক ত্রুটি-ই বা হল কেন, সেই ব্যাপারে রিপোর্ট চেয়েছি।”
কী বলছেন মেট্রো রেল কতৃর্পক্ষ?
সংস্থার মুখপাত্র প্রত্যুষ ঘোষের বক্তব্য, “রবিবার যাত্রীদের জন্য মেট্রো রেল চালু হওয়ার ১০ মিনিট আগে নিয়ম অনুযায়ী যাত্রী ছাড়া একটি পাইলট রেক কবি সুভাষ থেকে দমদম চালানো হয়। কিন্তু ট্রেনটি এ দিন দমদম পৌঁছয় নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে ৫ মিনিট দেরিতে। তাই, তার পিছনে থাকা পর পর তিনটি দমদমগামী যাত্রীবাহী ট্রেন পাঁচ মিনিট করে দেরি করে। দেরির ফলে যাত্রীদের ভিড় বাড়ছিল, ট্রেনের দরজাও বন্ধ হচ্ছিল না। সে জন্যই ট্রেনগুলির প্রতিটি পাঁচ মিনিট বিলম্বে চলেছিল।”
প্রত্যুষবাবু বলেন, “তাপমাত্রার তারতম্যে লাইনে কিছু সমস্যা হয়েছে বলে ইঞ্জিনিয়াররা আশঙ্কা করছিলেন। তাই, পাইলট রেকটি লাইনের অবস্থা দেখতে দেখতে যাচ্ছিল।” অথচ এই অবস্থাতেও মেট্রো কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের জন্য প্ল্যাটফর্মে কোনও ঘোষণার ব্যবস্থা করেননি। এসপ্ল্যানেডে একটি ট্রেন থেকে নামা-ওঠার সময়ে প্ল্যাটফর্মে ছিটকে পড়েন কয়েক জন যাত্রী, চোটও পান। রবিবার মেট্রোয় এই ধরনের অভিজ্ঞতা বিরল।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.