বাজারে জিনিসপত্রের দাম আগুন। কিন্তু কলকাতার মতোই প্রবাসেও পার্বণের মেজাজ হারিয়ে দিয়েছে তার আঁচকে। সোমবার সংক্রান্তি। রাঁচি থেকে জামশেদপুর, সাহেবগঞ্জ থেকে দুমকা-প্রবাসী বাঙালির সংক্রান্তি পালনে চড়া দাম প্রভাব ফেলতে পারেনি। রবিবার ঝাড়খণ্ডের বাঙালি পরিবারের হেঁসেল থেকে ভেসে এসেছে পাটিসাপটা, সরুচাকলি কিংবা গোকুলপিঠের গন্ধ।
ঝাড়খণ্ডে এই মরসুমে নতুন গুড়ের দাম ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা। সে নলেন গুড়ের পাটালিই হোক কিংবা ফিনফিনে ঝোলাগুড়। মোটামুটি ভাল ধরনের আতপচালের দাম ৫০ টাকা থেকে ৭০ টাকা প্রতি কিলো। কিন্তু তাতে নবান্ন উৎসবে ভাটা পড়েনি। রাঁচির ইউনিয়ন ক্লাবে পালন করা হয়েছে পিঠেপুলির উৎসব। জামশেদপুরে কয়েক দিন আগেই একদিনের পৌষ উৎসব হয়েছে। সংক্রান্তির আগের দিনই সেখানে অনেক বাড়িতে শুরু হয়ে গিয়েছে শুধুমাত্র পুলিপিঠে দিয়ে ‘হোমপার্টি’।
রাঁচির ফিরায়েলাল চকের বাসিন্দা বৈশালী চৌধুরীর কথায়, “জিনিসপত্রের দাম তো বেশ বেশি। গুড়ও কলকাতার মতো অতটা সুগন্ধী নয়। এখানে আমরা যা পাই তাই দিয়েই পিঠে বানাই।”
দুমকার বাঙালিদের বহু পুরানো পপুলার ক্লাবে সাড়ম্বরে পৌষ উৎসব হয়েছে। ক্লাবের সদস্য সমীরণ পালের কথায়, “এটা তো পরম্পরা। বাবা-দাদার আমল থেকে চলে আসছে।”
অবাঙালি অধ্যুষিত জায়গায় নলেন গুড় বা পাটালি সহজলভ্য নয়। জামশেদপুরে অবশ্য পশ্চিমবঙ্গ থেকে গুড় বিক্রেতারা শুধুমাত্র এই সময়টা আসেন পিঠেপুলির রসদের জোগান দিতে। সব জায়গায় অবশ্য সেই সুবিধা নেই। রাঁচির অবাঙালি গুড় বিক্রেতা মথুরা মাহাতো জানালেন, সংক্রান্তিতে তিলকুট বেশি চলে। বাঙালিরা পিঠে বানান। তাই বাঙালি ক্রেতাদের জন্য গুড় পশ্চিমবঙ্গ থেকে আনাতে হয়। ফলে গুড়ের দাম বেশি।
তাতে অবশ্য কিছু নয়। কাঁটাটোলি, ফিরায়েলাল চক, লালপুর বাজারের মতো রাঁচির প্রসিদ্ধ জায়গাতে এসে গুড় ও পিঠে তৈরির উপকরণ কিনলেন অনেক বাঙালি। |