|
|
|
|
বাবা জ্ঞান দিয়ো না |
দেড় বছর পর আবার আমি স্টেজে
‘রক অন’-এর প্রথম শো করতে গিয়ে কী ভয়! আজ সেই ফারহান আখতার
সহজেই দিতে পারেন শো মাতানোর টিপস। শুনলেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত |
বলা হয় আপনি না কি বলিউডের ব্যস্ততম এন্টারটেনার। এটা কি সত্যি?
আমার কোনও ধারণা নেই এ বিষয়ে। অন্যদের কাজের ডায়েরিটা তো দেখিনি। তবে নিজের জন্য যেটুকু সময় পাই সেটা ভীষণ এনজয় করি।
আপনার টাইম ম্যানেজমেন্ট না কি ভীষণ ভাল?
দেখুন একটা শৃঙ্খলা মানতেই হবে। তা হলেই ঠিক ভাবে সব কিছুতে মনঃসংযোগ করা যায়। তবে কোনও সচেতন পদ্ধতি অনুসরণ করি না। আমার অফিসে এক জন দক্ষ মহিলা আছেন যিনি আমার শিডিউলটা দেখে দেন।
কত দিন বাদে স্টেজে লাইভ পারফর্ম করছেন?
সম্ভবত দেড় বছর বাদে। ১৯ জানুয়ারি গোয়াতে চ্যানেল ভি’র ইন্ডিয়া ফেস্ট-এর ফিনালেতে গাইব। গোয়ার ‘বাগা’ বিচে শো। ভারতের অন্যতম বৃহত্তর কলেজ পড়ুয়াদের ফেস্ট এটা।
এখনও কি মঞ্চভীতিতে ভোগেন?
ভীষণ নার্ভাস ছিলাম প্রথমবার, যখন মঞ্চে অনুষ্ঠান করতে উঠি। সেটা ছিল ‘রক অন’ ছবির কিছু গান নিয়ে একটা লাইভ শো।
শো-এর আগের রাতে ঘুম হয়েছিল?
সারা রাত ধরে ভেবেছি কী কুক্ষণে করতে গেলাম এই সব।
আর শো-এর ঠিক আগে?
উইংসয়ের আড়ালে দাঁড়িয়ে ভেবেছি যদি এখন লোডশেডিং হয়ে যায়! আর যদি শো-টা হঠাৎ করে বাতিল হয়ে যায়। আমি এটাও ভেবেছিলাম হয়তো স্টেজে উঠলেই তারে পা আটকে হঠাৎ করে পড়ে যাব।
কিন্তু সে রকম কিছুই তো হয়নি?
ভাগ্য ভাল সে সব হয়নি। তবে স্টেজে উঠে গেলে একেবারে অন্য এনার্জি। শঙ্কর (মহাদেবন) আর আমি চুটিয়ে প্রোগ্রাম করি। |
|
একটা ভাল পারফর্মার হওয়ার রেসিপিটা ঠিক কী?
আমি ভাগ্যবান যে অনেকগুলো শো করার সুযোগ পেয়েছি। যত শো করব, তত বেশি স্টেজে স্বচ্ছন্দ হয়ে উঠব। একজন পারফর্মারের সব চেয়ে বেশি প্রয়োজন অডিয়েন্সের সঙ্গে কানেক্ট করা। এমন ভাবে পারফর্ম করতে হবে যাতে মনে হয় তারাও এই শোয়ের একটা অঙ্গ। ১৯ তারিখের শোতে আমি সেটাই চেষ্টা করব।
অডিয়েন্সকে শো-এর অঙ্গ করার জন্য কী কী করেন?
ফর্মুলা জানা নেই। তবে ক্রাউডের সঙ্গে কথা বলতে হয়। আমি নিজে যে ক’টা ভাল কনসার্ট শুনেছি, তা থেকেই এটা শেখা। দু’ধরনের কনসার্ট হয়। একটা ভীষণ ইনফর্মাল। মনে হয় যেন ক্রাউডের সঙ্গে গায়কের ভীষণ যোগ। আর একটা হয় যেখানে মনে হয় অডিটোরিয়ামে বসে একটা সিডি শুনছি। প্রথমটাই আমার পছন্দ। এই শোতে আমি ‘রক অন’ আর ‘জিন্দেগি না মিলেগি দোবারা’ থেকে গান গাইব। আর কিছু নিজের অন্যান্য ছবি থেকে।
আপনি নিজেকে বার বার পুনরাবিষ্কার করেন। এটা কি একঘেয়েমি এড়ানোর জন্য? না কি নিজের বহুমুখী প্রতিভা বিকাশের জন্য?
আমার ভাবতে ভাল লাগবে যদি দ্বিতীয় কারণটা সত্যি হয়। তবে মনে হয় প্রথম কারণটাই হয়তো বা সত্যি।
এটা তো টিপিক্যাল ফারহান আখতার পাঞ্চলাইন...
(হাসি) কিন্তু সেটাই সত্যি। নইলে তো জীবনটা ভীষণই একঘেয়ে হয়ে যাবে। মাঝে মধ্যে তো ব্যাটারিটা রিচার্জ করে নেওয়া দরকার। পরিচালক/লেখক হিসেবে আমাকে মাঝে মাঝে রুটিনের বাইরে যেতে হয়। সেটা করলেই গল্প বলাতে একটা নতুনত্ব আনা যায়। এই অনেক কিছু করার মধ্যেই আমি নিজের লক্ষ্যে স্থির থাকার ইন্ধনটা পাই।
তবে ভয় হয় না যে এত কিছু করলে ফোকাস হারিয়ে ফেলবেন?
আমার বিষয়ে কোনও কিছু ভাবার অধিকারটা শুধুমাত্র আমার। অন্যদের একটা মত থাকতেই পারে। তবে আমি নিজে ঠিক করি কী ভাবে বাঁচব। অন্যের কথার ভিত্তিতে আমি বাঁচি না। জীবনে এত কিছু করার সুযোগ পেয়ে নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হয়।
সব চেয়ে কঠিন কাজ কোনটা? গান গাওয়া, গান লেখা? না কি পরিচালক এবং অভিনেতা হওয়া?
প্রত্যেকটা কাজেরই একটা নিজস্ব চ্যালেঞ্জ আছে।
তবে আপনি তো ঘুমিয়ে ঘুমিয়েও পরিচালনা করতে পারেন?
না। পারি না। কারণ দর্শকরা বলবে ও তো ঘুমন্ত অবস্থায় সিনেমাটা বানিয়েছিল। অনেক কিছু দেখতে মনে হয় খুব সোজা। কাজে ঠিক ততটাই কঠিন। রেজাল্ট-টা হয়তো দারুণ হবে। কিন্তু পুরোটার পেছনেই আসলে লুকিয়ে আছে কঠোর পরিশ্রম।
একজন গায়ক হতে গিয়ে সব চেয়ে কঠিন ব্যাপার কোনটা?
সঙ্গীতের দুনিয়ায় কাজ করতে গিয়ে বুঝেছি, সব চেয়ে চ্যালেঞ্জিং হয় যখন আমি সময় বের করতে পারি না। দিল্লি ‘ধর্ষণ’ কাণ্ড হওয়ার পর কবিতা লিখেছিলাম। খুব চটজলদি প্রতিক্রিয়া হিসেবে মাথায় এসে গিয়েছিল ওটা। গান যদি লিখি কখনও, তা হলে সেটাও ভীষণ ব্যক্তিগত একটা জায়গা থেকে উঠে আসবে হয়তো। মন খুলে লেখার মতো সময় পাচ্ছি না একদম।
পরিচালক হিসেবে কোন জিনিসটা আপনার কাছে সব থেকে চ্যালেঞ্জিং মনে হয়?
কোন গল্পটাকে বেছে নিয়ে ছবি বানাব, জীবনের দেড়টা বছর সেটার পেছনে খরচ করব, সেটা ঠিক করা কঠিন। |
‘ভাগ মিলখা ভাগ’ ছবিতে ফারহান আখতার |
দর্শকের প্রত্যাশা কি চাপে ফেলে দেয় আপনাকে?
দর্শকের ব্যাপারে তো ভাবতেই হবে। কিন্তু শুধু ওদের নিয়ে বিচার করলেই তো চলবে না। যখন একটা ছবি শুরু করে দিই তখন কাজ করাটা অনেক সহজ মনে হয়। সবাই মিলেই একটা ছবি বানানো হয়।
অভিনেতা হিসেবে কোন ছবিটা করবেন, সেটা ঠিক করাটাই কি প্রধান চ্যালেঞ্জ?
অনেকটাই তাই। তবে একবার কাজ শুরু হয়ে গেলে, সবাই নিজের সেরাটুকুই দেওয়ার চেষ্টা করে। আরও দেখে যাতে জিনিসটাকে তার সঠিক ফর্মে রাখা যায়।
ছবি করতে করতে অভিনেতা ফারহান আখতার পরিচালকের সত্তাটা কী ভাবে আড়ালে রাখেন?
এটা কোনও ক্লিনিক্যাল ব্যাপার নয়। পরিচালক হিসেবে একটা সিনেমা আপনার সবটুকুই দাবি করে। একজন অভিনেতার কিন্তু অতটাও দায়বদ্ধতা থাকে না। একজন অভিনেতা হিসেবে আপনার জানা উচিত পরিচালকের সঙ্গে কতটা তর্ক-বিতর্ক করা যাবে। পরিচালকের ভিশনটাকেই অভিনেতারা পর্দায় উপস্থাপন করেন।
আপনার ‘ভাগ মিলখা ভাগ’-এর ট্রেলারটা তো দেশে সাড়া ফেলে দিয়েছে। অভিনেতা হিসেবে ‘ক্রিয়েটিভ ইনপুট’ কতটা?
কয়েকটা কথায় এর উত্তরটা দেওয়া সম্ভব না। একটা চিত্রনাট্য পড়লে মনের মধ্যে একটা ছবি ভেসে ওঠে। একজন পরিচালকেরও তাই হয়। পরিচালকের সঙ্গে আপনার ভিশন নাও মিলতে পারে। কখনও কখনও আবার দু’জনের মতামত মিলেও যেতে পারে। তবে এটুকু বোঝা উচিত যে, লোককে রাজি করানোর জন্য চাবুক মারার দরকার নেই। ‘ভাগ মিলখা ভাগ’-এর ট্রেলারটার কথা বলতে গেলে আমার ট্রেনার সমীর জউরার কথা তো বলতেই হবে। ওঁকে দুটো ছবি দেখিয়েছিলাম আর বলেছিলাম, এই লুকটাই আমার দরকার।
তার পর? কতটা কঠিন ছিল ফারহান থেকে মিলখা হয়ে ওঠা?
একটা শৃঙ্খলায় নিজেকে বাঁধা। নিজেকে সব সময় এটা বলতাম যে, এমন একজন আছেন এখানে যিনি আমাকে আমার লক্ষ্যে পৌঁছতে সাহায্য করবেন। এটা আমিই চেয়েছি করতে। উনি আমাকে জোর করেননি।
‘তালাশ’-এর পর রিমা কাগতির পরবর্তী ছবির লিড রোলে অভিনয় করছেন বলে শোনা যাচ্ছে। গল্পটা না কি এমন একজন মুম্বইকারের, যাঁর নিজের স্ত্রীর পাশাপাশি আরও পাঁচ জন বৌ আছে। এটা কী সত্যি?
জানি না খবরটা কেন এত ছড়াচ্ছে। রিমার ছবিটা আমি প্রযোজনা করছি কিন্তু ওই রোলটায় অভিনয় করছি না। রিমা এখনও গল্পটা লিখছে।
তা হলে পরবর্তী শ্যুটিং কি ‘শাদি কে সাইড এফেক্টস’ ছবির জন্য?
হ্যাঁ।
বিয়ের পর তো এটাই বিদ্যার প্রথম সিনেমা?
হবে হয়তো। তবে আমি জানি না বিয়ের পর ও কী শ্যুট করছে।
বিয়ে নিয়ে কথা হচ্ছে। এত রকম ‘লিঙ্ক-আপ’-এর গুজব ছড়ালেও, আপনার বিবাহিত জীবনে এর কোনও প্রভাব পড়ে না?
প্রেস এই ব্যাপারে খুব সদয় আমার ওপর। বিয়ে ব্যাপারটাই তো সম্পূর্ণ ভাবে বিশ্বাসের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। আমারও তাই। |
|
|
|
|
|