রেল কর্তৃপক্ষের বেশ কিছু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করলেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার এ কে বর্মন। শনিবার খড়্গপুর ডিভিশন পরিদর্শনে এসেছিলেন তিনি।
সেখানেই জিএম জানান, উড়ালপুল নির্মাণ থেকে রেললাইনের কাজ, অনেক ক্ষেত্রেই রাজ্য সরকারের সহযোগিতা মিলছে না। এমনকী জঙ্গলমহলে রাতে ট্রেন চালানোর ক্ষেত্রেও এ রাজ্যের সরকার প্রয়োজনীয় অনুমতি দেয়নি। শনিবার খড়্গপুর স্টেশনে এক সাংবাদিক বৈঠক করেন এ কে বর্মন। সেখানে তিনি বলেন, “আগে উড়ালপুল তৈরির ক্ষেত্রে নিয়ম ছিল, রেলের অংশের কাজ করবে রেল। বাকি সংযোগকারী কাজ করবে রাজ্য। এ নিয়ে সমস্যা হওয়ায় ঠিক হয়েছে, একটি উড়ালপুল রেল করলে অন্যটি করবে রাজ্য। আমরা ঝাড়গ্রামে উড়ালপুল করছি। সেটির কাজ চলছে দ্রুত। কিন্তু উলুবেড়িয়ার উড়ালপুলটি রাজ্য সরকারের কথা। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে তার কোনও অগ্রগতি ঘটেনি। ”
২০১০ সালের মে মাসে জ্ঞানেশ্বরী-দুর্ঘটনার পর দীর্ঘদিন জঙ্গলমহলে রাতে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। বর্তমানে তা চালু হলেও স্বাভাবিক গতিতে ট্রেন চালাতে পারেনি রেল। রাতে ঘন্টায় ৭০-৯০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো নিয়ে সম্প্রতি ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে বৈঠক করেন রেল কর্তৃপক্ষ।
জেনারেল ম্যানেজার বলেন, “ওড়িশা সরকার এ বিষয়ে অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ অনুমতি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।” রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী সব প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে কি না, জিএমের বক্তব্যে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জিএম বলেন, “লালগড়ে রেলপথের জন্য অর্ধেক খরচ দেওয়ার কথা ছিল রাজ্য সরকারের। সেই ব্যাপারেও রাজ্য কিছু জানায়নি। আর ঝাড়গ্রাম-পুরুলিয়া রেলপথের ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই।”
|
রাজ্যে সাবস্টেশন কম জমিতে |
বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য এখন থেকে রাজ্যে যত সাবস্টেশন তৈরি হবে, তার অধিকাংশই আধুনিক প্রযুক্তির ‘গ্যাস ইনসুলেটেড সাবস্টেশন’ (জিআইএস) হবে। খোলা আকাশের নীচে, অনেকটা জমি জুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা চিরাচরিত পদ্ধতির সাবস্টেশন আর না গড়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য বিদ্যুৎ সংবহন সংস্থা। বিদ্যুৎ কর্তারা জানাচ্ছেন, জিআইএস সাবস্টেশন গড়তে জমি লাগে কম। রক্ষণাবেক্ষণের খরচও অনেক কম। কী এই জিআইএস সাবস্টেশন? এই ধরনের সাবস্টেশনের অধিকাংশ যন্ত্রাংশই একটি ধাতব ঘর বা কুঠুরির ভিতরে পর-পর জুড়ে তৈরি করা হয়। আর ওই বদ্ধ ঘরের মধ্যে সালফার হেক্সাফ্লোরাইড (এসএফ-৬) নামে এক ধরনের গ্যাস ভরে দেওয়া হয় যা তড়িৎ অপরিবাহী হিসেবে কাজ করে। ধাতব ঘেরাটোপের মধ্যে থাকে বলে বাইরের কোনও বস্তু সাবস্টেশনের উপরে পড়ে ক্ষতি করতে পারে না। ঝড়-বৃষ্টিতেও নিরাপদ থাকে। ফলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট প্রায় হয় না বললেই চলে। রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতরের দাবি, ৪০০ কেভি (কিলো ভোল্ট)-র একটি প্রথাগত সাবস্টেশন তৈরি করতে গেলে যেখানে কমপক্ষে ৫০ একর জমি লাগে, জিআইএস প্রযুক্তিতে সেখানে ১৫-২০ একর জমি পেলেই কাজ চলে যায়। জমি জটে যেখানে বহু জায়গায় সাবস্টেশন তৈরি করা যাচ্ছে না, সেখানে কম জমিতে প্রকল্প গড়াই এক মাত্র সমাধান। সে কারণেই জিআইএস প্রযুক্তিকে বেছে নেওয়া হচ্ছে বলে বিদ্যুৎ কর্তাদের যুক্তি। |