দুষ্কৃতী হামলায় রায়গঞ্জে এ বার খুন দুই তৃণমূল কর্মী, ঘেরাও এসপি
মাত্র চার দিন আগেই উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপারের বদলির দাবিতে বন্ধ ডাকা হয়েছিল। অভিযোগ ছিল, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তিনি ব্যর্থ। শুক্রবার ফের রায়গঞ্জের মাড়াইকুড়ার পদ্মপুকুর মরা নদী এলাকায় এক প্রৌঢ় ও তার প্রতিবেশী যুবককে বেলা এগারোটা নাগাদ রাস্তার উপরে কুপিয়ে গুলি করে খুন করা হল। ঘটনাচক্রে, দু’জনেই তৃণমূলের স্থানীয় নেতা। এই নিয়ে নভেম্বর থেকে রায়গঞ্জে ১১ জন খুন হলেন। এর মধ্যে জানুয়ারিতেই খুন করা হয়েছে পাঁচ জনকে।
ঘটনাস্থলে গ্রামবাসীদের জমায়েত। ছবি: তরুণ দেবনাথ
পুলিশ জানিয়েছে, নিহতদের নাম মুকুন্দ দাস (৩৫) ও ক্ষীরোদ দাস (৫২)। দু’জনেরই বাড়ি গৌরী গ্রাম পঞ্চায়েতের নরম এলাকায়। মুকুন্দবাবু এক সপ্তাহ আগেই কিসান খেত মজদুর তৃণমূল কংগ্রেসের রায়গঞ্জ ব্লক সভাপতি হয়েছেন। ক্ষীরোদবাবু রায়গঞ্জ ব্লক তৃণমূলের সহ সভাপতি ছিলেন। পুলিশ দাবি করেছে, জমি নিয়ে পুরানো গোলমালের জেরেই খুন করা হয়েছে তাঁদের দু’জনকে। নিহতদের বাড়ির লোকজনদের অভিযোগ, পুলিশের ব্যর্থতার জন্যই রায়গঞ্জে দুষ্কৃতীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এই ঘটনার পরে পুলিশের কাজের সমালোচনা শুরু হয়েছে শাসক দল তৃণমূলের অন্দরেও। দলের উত্তরবঙ্গের কোর কমিটির চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকে সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গৌতমবাবু বলেন, “ভয়ঙ্কর ঘটনা। মুখ্যমন্ত্রী খুবই উদ্বিগ্ন। তাঁর নির্দেশে আমি রায়গঞ্জে যাচ্ছি। ইতিমধ্যেই অনেক অভিযোগ শুনেছি। রায়গঞ্জে গিয়ে সব পর্যায়ে কথা বলে মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট দেব।” রায়গঞ্জে সম্প্রতি এক স্থানীয় সাংবাদিককে খুনের পরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। পুলিশ সুপারের বদলির দাবিতেও সরব হন তৃণমূল ছাড়া সব দলের নেতারা। ৭ জানুয়ারি পৃথক ভাবে রায়গঞ্জে ১২ ঘন্টা বন্ধ ডাকে বিরোধী দলগুলি। ওই সময়ে উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক পাসাং নরবু ভুটিয়া শহরে বিএসএফ-এর মতো আধা সামরিক বাহিনী সাময়িক ভাবে মোতায়েনের প্রস্তাব পর্যন্ত রাজ্য সরকারের কাছে পাঠান। এ দিনের খুনের কথা জানার পরে ইসলামপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরী বলেন, “রায়গঞ্জে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে রাজ্য সরকার অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করলেও লাভ হয়নি। পুলিশ সুপার দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের নিষ্ক্রিয়তার জেরেই ফের জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছি। পুলিশ সুপারের অবিলম্বে সরে যাওয়া উচিত।” এ দিন ক্ষীরোদবাবু তাঁর প্রতিবেশী মুকুন্দবাবুর সঙ্গে মোটরবাইকে রায়গঞ্জ যাচ্ছিলেন। রাস্তায় উল্টো দিক থেকে একটি বাইকে চেপে এসে হামলা করে দুষ্কৃতীরা। দেহ দু’টি ফেলে রেখে তারা পালিয়েও যায়। এলাকার বাসিন্দারাই তারপরে দেখতে পান রাস্তার উপরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন ক্ষীরোদবাবু ও মুকুন্দবাবু। পুলিশ সুপার অন্য অফিসারদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। তাঁদের মোটরবাইক, একটি মোবাইল ও একটি নাইন এমএম পিস্তল ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ইতিমধ্যে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশ সুপারকে ঘিরে ধরে। আমজনতার ক্ষোভের মুখে পুলিশ সুপার বারেবারেই আশ্বাস দেন, “চিন্তা করবেন না। আমরা আগের সব ঘটনায় কিছু অপরাধীকে ধরেছি। এ বারও ধরব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.