|
|
|
|
ধান কেনা নিয়ে চাপানউতোর |
প্রতিটি পঞ্চায়েতে শিবির চেয়ে খাদ্যমন্ত্রীকে চিঠি সভাধিপতির |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
ধান কেনায় গতি আনতে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় শিবির করার দাবি জানাল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ। জেলা পরিষদের দাবি, ধান কেনার কাজে গতি নেই। ফলে অভাবী বিক্রি চলছে। এই পরিস্থিতিতে প্রতিটি পঞ্চায়েতে শিবির করার দাবি জানিয়ে জেলাশাসক এবং জেলা খাদ্য নিয়ামককে লিখিত আবেদন জানাল সিপিএম পরিচালিত জেলা পরিষদ। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “ক্ষুদ্র চাষিদের অভাবী বিক্রি রুখতে প্রশাসনিক উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় শিবির করে ধান কেনা হলে স্থানীয় চাষিরা উপকৃত হবেন। জেলাশাসক এবং জেলা খাদ্য নিয়ামকের কাছে লিখিত ভাবে এই আবেদন জানিয়েছিলাম। শুক্রবার আবেদন রেখেছি। আশা করব, রাজ্য সরকার এই আবেদন খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে।”
অভাবী ধান বিক্রি বন্ধ করতে প্রতি বছর এই সময় চাষিদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কেনে রাজ্য সরকার। এর ফলে, কৃষকেরা ন্যায্য মূল্য পান। পাশাপাশি, বাজারে ধানের দামটাও নিয়ন্ত্রণে থাকে। এ বারও মূল্য বেঁধে ধান কেনা শুরু করে দিয়েছে সরকার। কিন্তু, অভাবী বিক্রি ঠেকানো যাচ্ছে না-বলেই অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি ভাবে ১২৫০ টাকা কুইন্টাল পিছু দাম বেঁধে দেওয়া হলেও বাজারে ৮৫০ থেকে ১০৫০ টাকা দরে ধান বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি তাঁর আবেদনপত্রে লিখেছেন, ‘‘আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। জেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে খবর আসছে যে রাইস মিল মালিকরাও ক্ষুদ্র কৃষকদের সেই রকম সহযোগিতা করছেন না। স্বাভাবিক ভাবেই কৃষক অভাবী বিক্রিতে বাধ্য হচ্ছেন। উৎসাহিত হচ্ছে ফোড়েরা।”
এই ধান কেনার মরসুমেই দু’-দু’বার জেলায় এসেছেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তবে মন্ত্রীর সফরের পরও ধান কেনায় সেই ভাবে গতি আসেনি বলে অভিযোগ। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এ বার কত ধান কেনা হবে, কোন এজেন্সি কত কিনবে, তার একটি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যেখানে এফসিআইয়ের ৫২ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনার কথা। ইসিএসসি’র ৭৫ হাজার, বেনফেডের ৩০ হাজার এবং রাজ্য সরকারের ৪০ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনার কথা। এখনও এই লক্ষ্যমাত্রার ধারেকাছে পৌঁছনো যায়নি। এই জেলায় নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে ধান কেনার কাজ শুরু হয়েছিল। জানা গিয়েছে, জেলায় যেখানে সব মিলিয়ে ২ লক্ষ ৫৩ হাজার মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের কথা, সেখানে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ২৯ হাজার মেট্রিক টনের মতো। জেলা পরিষদের অভিযোগ, শিবিরগুলিতেও ধান কেনার কাজে অস্বচ্ছতা রয়েছে। অভিযোগ উড়িয়ে জেলা প্রশাসনের অবশ্য বক্তব্য, প্রতিটি ব্লকে শিবির করে ধান কেনার কাজ চলছে। জেলা খাদ্য নিয়ামক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “সর্বত্রই ধান কেনার কাজ চলছে।” জেলা তৃণমূলের নেতারা আবার সভাধিপতির এই আর্জির পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যই দেখছেন বেশি। এক তৃণমূল নেতার কথায়, “ধান কেনা নিয়ে বরং বাম-আমলেই অস্বচ্ছতা হত। এখন সেই পরিস্থিতি নেই। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সিপিএম পরিচালিত জেলা পরিষদ এমন অভিযোগ করছে।” |
|
|
|
|
|