নির্জলা ম্যাজিস্ট্রেটের ঘর, অফিসারের জানলা ভাঙা
জেলার মানুষকে যথাযথ পরিষেবা দেওয়ার দায়িত্ব যাঁদের উপরে ন্যস্ত, সেই সরকারি আবাসনেই শিকেয় উঠেছে পরিষেবা।
একমাত্র পাম্পটি বিকল হয়ে পড়ায় কালনার সরকারি আবাসনে তীব্র জলকষ্ট দেখা দিয়েছে। আবাসনের কর্মীদের মধ্যেও পরিকাঠামো নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
কালনা শহর ঘেঁষা জিউধারা এলাকায় অবস্থিত এই সরকারি আবাসন। ৯৬টি পরিবারের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। আবাসনটি দেখাশোনার জন্য সহ-বাস্তুকার (হাউজিং)-এর কার্যালয়ও রয়েছে। ঘর পাওয়ার ক্ষেত্রে চারটি শ্রেণি বিভাজন রয়েছে। ‘এ’ ক্যাটাগরির ঘরে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, চিকিৎসক, মহকুমাশাসকের ট্রেজারি অফিসার-সহ কয়েক জন থাকতে পারেন। ‘বি’ ক্যাটাগরির আওতায় অবর সহ-বাস্তুকার, সরকারি আইনজীবীরা পড়ছেন। ‘সি’ বিভাগের ঘর মহকুমার বিভিন্ন কার্যালয়ের কর্মীরা পেয়ে থাকেন। গ্রুপ ডি বিভাগের কর্মীরা ‘ডি’ বিভাগটি পান। মূলত সরকারি আধিকারিক কর্মীদের বেতনের বেসিক অনুযায়ী এই বিভাজন ঠিক করা হয়।

কালনার সরকারি আবাসন। নিজস্ব চিত্র।
বহু সরকারি দফতরের আধিকারিক কর্মীরা থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘ দিন ধরেই সরকারি আবাসনটির খারাপ হাল নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে এখানে ৬০টি পরিবারের প্রায় ২৫০ মানুষ বসবাস করেন। কিন্তু এতগুলো পরিবারের জল সরবরাহের জন্য একটিই মোটরচালিত পাম্প রয়েছে। আবাসিকরা জানান, গত শুক্রবার আচমকাই পাম্পটি বিকল হয়ে যায়। ফলে সমস্ত পরিবারগুলির স্নান, রান্না, খাবার জল পেতে অসুবিধা হচ্ছে। আবাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের বারবার জানানোর পর তারা ঠিকাদার সংস্থাকে খবর পাঠায়। শনি ও রবিবার পাম্পের পাইপ তুলে মেরামত করা হয়। সোমবার রাতে জল চালু হলেও বুধবার রাতে তা ফের বন্ধ হয়ে যায়। সমস্যায় পড়েন আবাসিকরা। আবাসনের সহ-বাস্তুকার ছুটিতে থাকায় সরকারি আধিকারিকরা যোগাযোগ করেন জেলা বাস্তুকার (হাউজিং) এর সঙ্গে। কিন্তু তিনিও ছুটিতে। আবাসিকদের দাবি, আবাসনের মধ্যে কোনও টিউবওয়েল নেই। ফলে প্রত্যেক পরিবারকে পুরসভার ট্যাপ থেকে জল আনতে হচ্ছে। আবাসনের পাম্প কর্মী জয়গোপাল সাহা বলেন, “পাম্প থেকে যে জল বেরোচ্ছে তার চাপ অত্যন্ত কম। ফলে উঁচু আবাসনের ঘরগুলিতে জল পৌঁছচ্ছে না। হয় জলস্তর নেমে গিয়েছে অথবা পাইপের নীচে বালি জমে যাওয়ায় জল কম উঠছে। সারানোর প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।” তিনি জানান, পরিস্থিতি সামাল দিতে শুক্রবার থেকে পুরসভার পাইপের জল প্রথমে রির্জাভারে রেখে পরে মোটরের মাধ্যমে ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে এই রির্জাভারের জল নোংরা বলে দাবি করেছেন আবাসিকরা। কালনা মহকুমাশাসকের দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পুরসভার পাইপ থেকে রির্জাভারে যে জল পড়ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম। এছাড়া রির্জাভারটি ১৬ বছর পরিষ্কার করা হয়নি।” তাঁর অভিযোগ, “এই জলে স্নান, খাওয়া কিছুই সম্ভব নয়।” আবাসনের অন্যান্য পরিকাঠামো নিয়েও ক্ষুব্ধ আবাসিকেরা। তাঁরা জানান, আবাসনে লাগানো বেশির ভাগ আলো গত দেড় মাস ধরে অকেজো। ফলে সন্ধ্যা নামলেই আবাসনমুখি রাস্তাগুলিতে ঠিক মত হাঁটা-চলা করা যায়না। বহু জানালা-দরজাও ভেঙে গিয়েছে। কোনও কেয়ারটেকারও নেই।

ভাঙা জানালা।
আবাসনের দুরবস্থার কথা মেনে নিয়েছেন সেখানকার কমিটির সম্পাদক কৃষ্ণ সরকার। তিনি বলেন, ‘‘বেতনের হাউস রেন্টের সবটাই কেটে নেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও ভাল পরিষেবা মেলে না। জানিনা কবে পানীয় জল পাব।” সরকারি আবাসন কমিটির চেয়ারম্যান তথা কালনার মহকুমাশাসক শশাঙ্ক শেঠির বক্তব্য, “বিষয়টি নিয়ে জেলা বাস্তুকারের (হাউজিং) সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুত সমস্যা মিটবে। তবে আবাসনের অন্যান্য সমস্যার কথা জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.