ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান তৈরি। ৪৪ শয্যার ইমার্জেন্সি অবজার্ভেশন ওয়ার্ডও সেজেগুজে প্রস্তুত। তৈরি নতুন নেফ্রোলজি ইউনিটও। কিন্তু কবে এ সবের উদ্বোধন হবে, কেউ জানে না। এসএসকেএম হাসপাতালের কর্তাদের কাছেও এই প্রশ্নের আপাতত কোনও উত্তর নেই। অথচ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই তিন প্রকল্পের সূচনা করবেন, সপ্তাহ দুয়েক আগে এমন ঘোষণা করা হয়েছিল হাসপাতালের তরফেই। কার্ড ছাপা, এমনকী ফলকও তৈরি হয়ে যায়। শেষে নির্ধারিত দিনের ২৪ ঘণ্টা আগে কর্তৃপক্ষ জানান, আপাতত বিষয়টি স্থগিত। তা হলে কবে হবে? নির্দিষ্ট উত্তর কারও কাছে নেই।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী নিজে ওই প্রকল্প সম্পর্কে গোড়ায় খুবই উৎসাহী ছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন, রাজ্যের মধ্যে প্রথম ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানটি চালু হোক এসএসকেএমেই।
কিন্তু এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ সময়মতো তা তৈরি করে উঠতে না পারায় প্রথম দোকানটি গত ১১ ডিসেম্বর চালু হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। সেখানকার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কার্ডে মুখ্যমন্ত্রীর নাম ছাপা হলেও বিরক্ত মমতা সেখানে যাননি। নিজের ক্ষোভের কথা তিনি ঘনিষ্ঠ মহল মারফত এসএসকেএম কর্তৃপক্ষকে জানিয়েওছিলেন। কেন রাজ্যের সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালটি এ ভাবে পিছিয়ে পড়ছে, সেই প্রশ্নও তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা।
এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ অবশ্য একে ‘পিছিয়ে পড়া’ বলে মানতে চাননি। তাঁদের বক্তব্য, ওই হাসপাতালে প্রতি দিন যে বিপুল পরিমাণ রোগী আসেন, তাতে বড় দোকান না হলে চলত না। একসঙ্গে ১৪টা কাউন্টার খোলা হবে এখানে। সেই জন্যই জায়গা খুঁজতে কিছুটা সময় গিয়েছে। তার পরে পূর্ত দফতর দোকানটি তৈরি করেছে। সব মিলিয়ে খানিকটা বাড়তি সময় বেরিয়ে গিয়েছে। সেই কারণেই ডিসেম্বরে কোনও ভাবেই তাঁরা দোকান চালু করে উঠতে পারেননি। দৌড়ে এগিয়ে থেকেছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এম আর বাঙুর।
কিন্তু তিন প্রকল্প উদ্বোধনের এই বিলম্বের জন্য রোগীরা কেন পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবেন? কর্তৃপক্ষ জানান, সেটাও ভাবা হয়েছে। তেমন হলে অবজার্ভেশন ওয়ার্ড বা নেফ্রোলজি ইউনিটের পরিষেবা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ছাড়াই শুরু হবে। অনুষ্ঠান মুলতুবি থাকবে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য।
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বা স্বাস্থ্যকর্তাদের দিয়ে উদ্বোধন করা যায় না? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, তাতে তাঁরা রাজি নন। এসএসকেএমের অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র বলেন, “আমরা মনেপ্রাণে ওঁর উপস্থিতি চাইছি। এই প্রকল্প নিয়ে উনি নিজে খুবই উৎসাহী। আমাদের আশা, জানুয়ারির মধ্যে কোনও একটা দিন উনি পিজি-র জন্য বরাদ্দ করবেন।” |